Thursday, April 30, 2020

মমতা ব্যানার্জী শুনছেন?

করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে, যে কোম্পানিগুলো চীন থেকে তাদের ব্যবসায়িক পরিকাঠামো গুটিয়ে নিতে চাইছে, তাদের ভারতে বিনিয়োগ করার আদর্শ পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্যে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্য সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, নরেন্দ্র মোদী। মুখ্যমন্ত্রীদের সাথে হওয়া ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এই বিষয়ে, ভারতে নতুন নতুন শিল্প গড়ে ওঠার উজ্জ্বল দিকটি নিয়েও আলোচনা করেন বলে জানা গেছে।

প্রধানমন্ত্রীর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে, যোগী আদিত্যনাথ সরকার ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে চীন ছেড়ে ভারতে বিনিয়োগ করতে আসা প্রতিটা কোম্পানিকে উত্তর প্রদেশ সরকার তাদের প্রয়োজনীয় বিশেষ সুবিধা প্রদান করতে ইচ্ছুক। এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই ফেডেক্স, সিসকো, অ্যাডোব, হনিওয়েল, লকহেড মার্টিন, বোস্টন সায়েন্টিফিক, ইউপিএস সহ একশটির বেশী কোম্পানির সাথে প্রাথমিক কথাবার্তাও শুরু করেছেন।

এমতাবস্থায়, পশ্চিমবঙ্গ সরকারও এই পরিস্থিতির পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে পারেনা? আমাদের রাজ্যে বন্দর আছে, লোকবল আছে, অবস্থানগত বিশেষত্ব  আছে এমনকি বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা  করতে পারে এমন শিল্পের অভাবও রয়েছে। রাজ্যের যুবশক্তিকে কর্মসংস্থানের জন্যে চলে যেতে হচ্ছে ভিন রাজ্যে। অথচ তারপরেও রাজ্য সরকার কেন এই বিষয়ে উদ্যোগী হচ্ছেননা, সেটা আমার বোধের অগম্য।

মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী, হ্যাঁ মমতা ব্যানার্জীকেই বলছি যে এই রাজ্যের মানুষ, বামফ্রন্টকে সরিয়ে, আপনাকে ক্ষমতায় এনেছিল অনেক স্বপ্ন নিয়ে। ৩৪ বছরের নৈরাজ্য ও লকআউট থেকে মুক্তি পাওয়ার আশা নিয়ে, সিন্ডিকেট, সংখ্যালঘু তোষণ আর স্বজনপোষণের রাজনীতি করার জন্যে নয়। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মেই আপনি চিরকাল ক্ষমতায় থাকবেন না এবং ধরাধামেও থাকবেন না। কিন্তু আপনি ক্ষমতাচ্যুত হলে বা আপনার অবর্তমানেও যাতে রাজ্যবাসী আপনার কথা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতে পারে, সেটা সুনিশ্চিত করার জন্যে দয়া করে উদ্যোগী হন এবং রাজ্যে শিল্পায়নের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরী করে, পঙ্গু অর্থনীতিকে সঠিক দিশা দিন।

https://www.financialexpress.com/economy/yogi-adityanaths-promise-to-fedex-cisco-adobe-tailor-made-facilities-if-you-move-from-china-to-up/1942862/

https://m.economictimes.com/news/international/business/us-supports-firms-weighing-india-as-alternative-to-china/articleshow/75437352.cms

Wednesday, April 29, 2020

পরিযায়ী শ্রমিক


বারবার যে কথা বলেছি, যে কথা বলার জন্যে মমতা ব্যানার্জীর অফিশিয়াল পেজে কমেন্ট ডিলিট হয়ে গেছে, সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি, মাননীয় সলিসিটর জেনারেল, যে প্রস্তাবকে উড়িয়ে দিয়েছিলেন অবশেষে সেটাই বাস্তবায়িত হতে চলেছে। হ্যাঁ, ভিনরাজ্যে বসবাসকারী, পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজেদের ঘরে ফেরার অনুমতি এবং সেই সূত্রে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সেই প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত করার অনুমতি দিলেন কেন্দ্রীয় সরকার।

লকডাউনের প্রথম পর্যায় থেকেই, গুজরাট, পাঞ্জাব, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র সহ বিভিন্ন রাজ্যে আটক শ্রমিকদের সাথে কথা হচ্ছে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে, #আত্মদীপ-এর পক্ষ থেকে তাদের ত্রাণের ব্যবস্থাও করেছি কিন্তু সাথে এটাও বুঝেছি যে সেটা যথেষ্ট নয়। ইংরেজিতে একটা কথা আছে, Men can't live on bread alone আর এইসব পরিযায়ী শ্রমিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে, সেই উপলব্ধিটা বারবার হয়েছে। বিনা কাজে, ভিন রাজ্যের এক যায়গায়, দীর্ঘদিন ধরে আটক থাকলে সেটার যন্ত্রণা কতটা, সেটা অনুভব করেছি তাদের সাথে কথা বলে। এরসাথে আছে খাবারের স্বল্পতা। প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি যে লকডাউনের প্রাথমিক পর্যায়ে বিভিন্ন সমাজসেবী সংগঠনগুলির মধ্যে যে উদ্যম ছিল, লকডাউনের সীমা যত বেড়েছে ততই কমেছে সেই উদ্যমের মাত্রা।

এমতাবস্থায়, পরিযায়ী শ্রমিকদের, নির্দিষ্ট পরীক্ষা সাপেক্ষে, ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা হওয়া উচিত ছিল প্রতিটা সরকারের প্রাথমিক লক্ষ্য। কিন্তু অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ করা এই শ্রমিকদের না আছে উঁচু মহলে যোগাযোগ আর না আছে ভোটব্যাঙ্ক হওয়ার মত পরিকাঠামো। এমতাবস্থায়, কখনও দিল্লীর আনন্দ বিহারে, কখনও মহারাষ্ট্রের বান্দ্রায় আবার কখনও গুজরাটের সুরাটে জমায়েত হয়েছে ঘরে ফিরতে আকুল শ্রমিকদের। ঘরে ফিরতে পারবে এই আশায়, গুজবের ফাঁদে পা দিয়ে পুলিশের মার খেয়েছে তারা। তাদের উপর ছেটানো হয়েছে কীটনাশক। তবে, অবশেষে যে সরকার তাদের কষ্ট উপলব্ধি করে, তাদের ঘরে ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছেন, এটা যথেষ্টই আনন্দের খবর। আশা করি, প্রতিটা শ্রমিক, সুস্থভাবে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরতে পারবেন। হাজার হোক, বাড়ি তো বাড়িই। লকডাউনে বাড়িতে আটক থেকে যারা বাড়ির মর্ম উপলব্ধি করতে পারছেন না, তারা কখনও, সম্ভব হলে, এদের থেকে জেনে নেবেন বাড়ির মূল্য কতটা।

Tuesday, April 28, 2020

প্রেরণা

গতকাল ট্যুইটারে ডঃ সুব্র‍্যামনিয়ম স্বামী একটা সুন্দর গল্প বলেছেন। গল্পটা এরকম যে, অনেকদিন আগে, দেবরাজ ইন্দ্র একবার চাষীদের উপর ক্রুদ্ধ হয়ে অভিশাপ দিলেন যে আগামী ১২ বছর তাদের এলাকাতে কোন বৃষ্টি হবেনা। এই কথা শুনে চাষীদের তো মাথায় হাত, তারা ইন্দ্রকে অনেক অনুরোধ করলেন অভিশাপ ফেরত নেয়ার জন্যে। অনেক অনুরোধের পরে, ইন্দ্র বললেন, যে ঠিক আছে, বৃষ্টি কেবল তখনই হবে যদি মহাদেব ডমরু বাজান। চাষীদের এই কথা বলে, তিনি নিজেই চুপিচুপি মহাদেবের কাছে গিয়ে, ১২ বছরের মধ্যে ডমরু না বাজানোর প্রার্থনা জানিয়ে আসলেন। এরপর চাষীরা মহাদেবের কাছে ডমরু বাজানোর অনুরোধ জানালেও মহাদেব সেটাতে কর্ণপাত করলেন না।

মহাদেবের কাছে আবেদন জানিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর, চাষীদের কাছে পরিত্রাণের আর কোন উপায় ছিলনা। তাই তারা হতাশ হয়ে বাড়িতে বসে থাকলেন। শুধুমাত্র একজন চাষী, নিজের প্রতিদিনের অভ্যাস অনুসারে, নিজের জমি সংস্কার করতে লাগলেন। বাকি চাষীরা সবাই তাকে নিয়ে ঠাট্টা করলো যে ১২ বছর যখন বৃষ্টি হবেনা, এখন জমি সংস্কার অর্থহীন। কিন্তু সেই চাষী কারুর কথাতেই কান না দিয়ে, একমনে নিজের কাজ করে যেতে লাগলেন। তার নিজের কাজের প্রতি এই নিষ্ঠা দেখে, দেবী পার্বতী অত্যন্ত খুশী হলেন এবং মহাদেবকে গিয়ে বললেন যে তিনি যদি ১২ বছর ডমরু না বাজান, তাহলে হয়তো তিনি তারপর বাজাতেই ভুলে যাবেন। পার্বতীর কথা শুনে মহাদেব আনমনাভাবেই নিজের ডমরু তুলে, একবার বাজিয়ে দিলেন আর সাথে সাথেই আকাশ জুড়ে কালো মেঘ এসে, শুরু হল বৃষ্টি।

বাকি চাষীরা নিজেদের জমি প্রস্তুত করে না রাখায়, বৃষ্টির সুবিধা নিতে না পারলেও, সেই চাষী, যিনি নিজের জমি ইতিমধ্যেই চাষের জন্যে তৈরী করে রেখেছিলেন, তিনি বৃষ্টির জলের সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে সক্ষম হলেন।

গল্পটার মোরাল হল যে পরিস্থিতি অনেক সময় প্রতিকূল হলেও, আমাদের প্রস্তুতি সবসময়ই চুড়ান্ত থাকা উচিত যাতে পরিস্থিতি অনুকূল হওয়া মাত্রই আমরা সেটার সুবিধা নিতে পারি। করোনা আবহে, গৃহবন্দী থাকার মত প্রতিকূল পরিস্থিতি চিরকাল থাকবেনা। তাই আমাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি রাখা উচিত যে পরিস্থিতি অনুকূল হওয়া মাত্রই আমাদের লক্ষ্য কি হবে। জীবনে অনেক পরিস্থিতিই আসবে যেগুলো আমাদের হতাশ করে দিতে পারে কিন্তু সেগুলোর মধ্যে থেকেও যদি আমরা শুধু খুশী ও অনুপ্রেরণার মুহূর্তগুলিকে বেছে নিতে পারি, তাহলে আর জীবনকে বহন করতে হবেনা, সে নিজের গতিতেই এগিয়ে চলবে।

নীচের ছবি দুটি দেখুন আপনাকে খুশী করতে পারে কিনা। একটা বাংলার একজন পটশিল্পীর, করোনা নিয়ে আঁকা পটশিল্প কিভাবে সারা দেশে সাড়া ফেলে দিয়েছে, সেটা নিয়ে রিপোর্ট (লিঙ্ক নীচে)। অন্যটা, সুদূর গুজরাটে, লকডাউনের মধ্যে, প্রশাসনের কাছে নাগরিকদের প্রাইভেট গাড়ি চালানোর অনুমতি প্রার্থনা 'বন্দেমাতরম' দিয়ে শুরু হওয়ার আবেদনপত্র।

https://indianexpress.com/article/trending/trending-in-india/from-bengal-a-patachitra-that-narrates-the-story-of-the-fight-against-coronavirus-goes-viral-6379099/



Saturday, April 25, 2020

মনের জোর

শাস্ত্রে বলে, 'যাদৃশী ভাবনা যস্য, সিদ্ধির্ভবতী তাদৃশী", মানে যার যেরকম চিন্তাভাবনা, সে সেরকমই ফল লাভ করে। মানুষেরই মনই, আদতে, মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে। অন্তর্জলিযাত্রায় চলে যাওয়া ব্যক্তিও পুনরায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে আরে শুধু মনের জোরে। তাই 'নিয়তি কেন বধ্যতে?' মানে নিয়তিকে কে ঠেকাতে পারে এই প্রশ্নের উত্তর হল 'মনসাঃ', মানে মনের জোর।

এই প্রসঙ্গে রমন মহর্ষির জীবনের একটা ঘটনা বলার লোভ সামলাতে পারছিনা। রমন মহর্ষি সম্পর্কে বিশদে জানতে আগ্রহীরা গুগল করতে পারেন। যাই হোক, একবার মহর্ষির হাতে একটা অস্ত্রোপচার করতে হবে। তাঁকে অপারেশন টেবিলে শুইয়ে অ্যানাসথেশিয়া দিতে গেলে, তিনি সেটা নিতে অস্বীকার করেন। ডাক্তারকে বলেন যে বিনা অ্যানাসথেশিয়াতেই অপারেশন করতে। ডাক্তার তাঁকে বলেন যে সেক্ষেত্রে প্রচন্ড যন্ত্রণা হবে, যেটা সহ্য করা অসম্ভব। কিন্তু মহর্ষি জিদ ধরে থাকেন যে অ্যানাসথেশিয়া নেবেন না। অবশেষে ডাক্তার তাঁর জিদের কাছে হার মানেন এবং অপারেশন করতে রাজী হন। 

মহর্ষি অপারেশন টেবিলে শোওয়ার পর, ডাক্তার তাঁর চামড়ার একটু যায়গা কাটতেই মহর্ষি যন্ত্রণায় চিৎকার করে ওঠেন। আর তাঁর চিৎকার শুনে ডাক্তারও ডবল জোরে তাঁকে ধমকে ওঠেন। বলেন, "আপনাকে এতবার বললাম অ্যানাসথেশিয়া নিতে, তবুও আপনি নিলেন না, আর এখন ব্যথায় চিৎকার করছেন?" ডাক্তারের কথা শুনে মহর্ষি অল্প হেসে তাঁকে বলেন, "আরে ডাক্তার, তুমি যে অপারেশন শুরু করছো, সেটা তো বলবে। নাও, এবার করো", বলে তিনি শুয়ে পড়লেন আর ডাক্তার অ্যানাসথেশিয়া ছাড়াই গোটা অপারেশন করলেন।

অপারেশন শেষ হলে, ড্রেসিং করার পর, ডাক্তার মহর্ষিকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, "এত প্রচন্ড যন্ত্রণা আপনি সহ্য করলেন কিভাবে, যোগব্যায়ামের মাধ্যমে?" শুনে মহর্ষি বললেন, "আমার তো এতটুকুও যন্ত্রণা বোধ হয়নি, তাহলে সহ্য করার প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে?" শুনে ডাক্তার তো অবাক। বললেন, "তাহলে প্রথমবার আপনি ঐ সামান্য কাটায় চিৎকার করলেন যে"!! "তখন তো ব্যথা লেগেছিল, কারণ আমার মন প্রস্তুত ছিলনা", মহর্ষি বললেন, "পরেরবার যখন অপারেশন করো, তখন আমি প্রস্তুত ছিলাম আর আমার মনকে ঐ স্থান থেকে অন্য যায়গায় নিয়োজিত করেছিলাম"।

এরকম ঘটনা আমাদের সাথেও হামেশাই ঘটে। একটা মশার কামড়ে আমরা হামেশাই বিরক্ত হয়ে যাই কিন্তু খুব আগ্রহ নিয়ে যখন আমরা কোন বই পড়ি বা সিনেমা দেখি, তখন মশা কামড়ে বসে থাকলেও আমরা খেয়াল করিনা। পাশে বসে থাকা অন্য কেউ যখন সেটার দিকে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে, তখন আমরা সেটার অনুভূতি লাভ করি। এটাই মনের ক্ষমতা।

তাই লকডাউনের মধ্যে, ঘরের মধ্যে আটক অবস্থায় বিরক্ত না হয়ে, মনের ডানা মেলে দিন। দেহটা চার দেয়ালের মাঝে থাকলেও, মনের তো এমন কোন বাধা নেই। এই ফাঁকে মনের ডানায় ভর করে ঘুরে আসুন কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী। একবার ঢুঁ মেরে নিন দুর্গাপূজার প্যান্ডেলগুলিতে। গোটা বাড়ি সাজিয়ে ফেলুন দীপাবলির আলোতে। দেখুন, ভাল লাগবে।

Friday, April 24, 2020

ফিডব্যাক

কথায় বলে, “রাজা কর্ণেন পশ্যতি”, অর্থাৎ, রাজা কান দিয়ে দেখেন। খুবই ন্যায্য কথা। কারন একা রাজার পক্ষে প্রতিদিন তাঁর গোটা রাজ্য ঘুরে প্রতিটি এলাকার খবর যোগার করা শুধু অবাস্তবই নয়, অসম্ভবও বটে। আর তিনি নিজে যদি প্রতিদিন যদি রাজ্যে ঘুরে বেড়ান তো শাসনকাজ কে চালাবে? এইজন্যেই রাজার পারিষদবর্গ থাকে, গুপ্তচর থাকে যারা রাজ্যের প্রয়োজনীয় খবর রাজার কাছে পৌছে দেয়। আর রাজা সেই খবর শুনে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেন। 

এই ‘প্রয়োজনীয়’ কথাটা, ওই ইংরেজিতে যাকে বলে বেশ catchy। কোনটা প্রয়োজন আর কোনটা নয়, সেটা বিচার করবে কে? এই বিচার করার জন্যে রাজা যদি একটি নির্দিষ্ট নিয়ম বানিয়ে দিয়ে থাকেন তাহলে ঝামেলা কম। কিন্তু সেটা না করে, রাজা যদি সেই দায়িত্ব পারিষদবর্গের হাতে ছেড়ে দিয়ে, নিজে শুধু শাসনকার্যে মনোনিবেশ করেন, তখনই হয় মুশকিল। প্রত্যেক পারিষদেরই নিজস্ব কিছু চাহিদা আর উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকে আর সেটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। রাজার দ্বারা স্থির করা কোন নিয়মের অবর্তমানে পারিষদরা অধিকাংশ সময় কেবল সেই খবরগুলিই রাজাকে দেয় যেগুলিতে তাদের ব্যাক্তিগত স্বার্থ জড়িত থাকে। ফলে অনেকসময়ই রাজা প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে একেবারেই অবহিত থাকেন না। এর পরিণতিতে রাজা আর প্রজার মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। 

গণতন্ত্রে দেশের রাজা আর তাঁর পারিষদবর্গের জায়গায় এসেছে, দেশের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী এবং রাজ্যের ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী, আর তাঁদের মন্ত্রীসভা। প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রী যত সক্ষমই হ’ন না কেন, তাঁর একার পক্ষে সারা এলাকা ঘুরে শাসনব্যবস্থা পর্যবেক্ষন করা ও জনসাধারনের মনের কথা বোঝা সম্ভব নয়। তাই তাঁকে স্বাভাবিক কারনেই তাঁর মন্ত্রীপরিষদের সহকর্মী তথা দলের উপর নির্ভর করতে হয়। এমতাবস্থায়, তিনি যদি সবসময় স্তাবকদের দ্বারা পরিবৃত হয়ে থাকেন যারা ব্যাক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি করার জন্যে তাঁকে ভুল খবর পরিবেশন করে বা তাঁর ভুলকেও সঠিক বলে বর্ণনা করে, তাহলে সেই রকম অযোগ্য পারিষদকে নির্বাচন করার দায় তাঁর। কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে যে কে যোগ্য আর কে অযোগ্য সেটা প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রী বুঝবেন কি ভাবে? আজকের দিনে, সোসাল মিডিয়ার কল্যানে, সেটা খুব একটা কঠিন কাজও নয়। নিজের বাছাই করা বিশ্বস্ত লোকেদের বিভিন্ন সোসাল মিডিয়া সেন্টারে বসিয়ে সরাসরি জনগনের পালস বোঝাটা আজকের দিনে খুব একটা কঠিন নয়। কিন্তু মুশকিল হ’ল, আজকের দিনে সেই সোসাল মিডিয়াতেও তো স্তাবকদের ভিড়। কোন বিরুদ্ধ মতের পোস্ট দেখলেই ‘কর্তাভজা’রা রে রে করে ছুটে আসে। 

তাহলে উপায়? উপায় একটাই। রাজহাঁস যেমন দুধ আর জল মিশিয়ে দিলে তার থেকে শুধু দুধটা খেয়ে নেয় আর জলটা পরে থাকে, তেমনি প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীকেও বুঝে নিতে হবে কে স্তাবক আর কে হিতৈষী। কারন, সরকারটা তাঁর আর সেটার দায়িত্বও তাঁর।

Monday, April 20, 2020

পার্থক্য

লক্ষাধিক পরিযায়ী শ্রমিক যখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে রয়েছেন, অত্যাবশকীয় সামগ্রীর অভাবে কোনওমতে দিন কাটাচ্ছেন, তখনই রাজস্থানের কোটা তে পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আসার জন্যে উদ্যোগী হয়েছেন উত্তর প্রদেশ, আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিসগড় ও গুজরাটের রাজ্য সরকার। 

রাস্তায় বা বাসস্ট্যান্ডে পড়ে থাকা শ্রমিকদের ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিয়ে, ছাত্রাবাসের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা ছাত্রছাত্রীদের, এই লকডাউনের মধ্যেও, ফিরিয়ে নিয়ে আসার একমাত্র কারণ সেই ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকদের সাথে সরকারি কেষ্টুবিষ্টুদের ঘনিষ্ঠতা। পরিযায়ী শ্রমিকদের সেই অর্থ বা ক্ষমতার জোর নেই, তাই প্রশাসন তাদের ফেরত আনা নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়। তাদের মূল্য শুধু ভোটের সময়, যখন তাদেরকে পাখিপড়ার মত বুঝানো হয় যে এই সরকার আসলে গরীব মানুষদের স্বার্থরক্ষা করার জন্যেই নিবেদিত। বাস্তবে তাদের মূল্য যে কতটা, সেটা এরকম প্রতিকূল পরিস্থিতিতেই স্পষ্ট। 

অর্থ আর ক্ষমতার জোরে, ভিন রাজ্যে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা ছাত্রছাত্রীরা ফেরত আসতে পারবে, ভিনদেশের করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি, চিকিৎসকদের পরামর্শ অগ্রাহ্য করে জনসাধারণের সঙ্গে মেলামেশা করতে পারবে, সামাজিক দূরত্বের আদেশ উড়িয়ে দিয়ে জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ে করতে পারবে, আর গরীবরা নিজেদের বাঁচার ন্যুনতম অধিকার নিয়ে সোচ্চার হলেই তাদের কপালে জুটবে পুলিশের লাঠি, করানো হবে উঠবোস বা গায়ে ছেটানো হবে কীটনাশক। ধন্য আমার দেশ।

While millions of migrant workers are stranded in different parts of the country running short of essential items, some states are seem to be bothered only about the plight of a few students who are already in the safety of their hostels. It may be due to good rapport of their parents with admin people. Poor workers have neither money nor power to earn such facilities for them.

https://www.ndtv.com/india-news/5-states-to-take-back-students-stranded-in-rajasthans-coaching-hub-kota-amid-lockdown-says-chief-min-2215101

Wednesday, April 15, 2020

Together we can

You many have grievances against govt but you have to accept its an unprecedented situation. Nobody had any iota of idea to act against such global pandemic. Yes, there are still shortages of essential items in some parts of the country but be assured, everybody is trying their best.‬ ‪I agree that empty stomach can’t follow rules for long but be assured, everybody, as per their capacity, is trying to take extra responsibility. Blaming govts and system is easy but please note that with such huge population, we still have only 11k infected people whereas 26k have died in super-developed countries like USA. Be rest assured there will be instigations, from anti-national forces both in & out of the country, to incite chaos but as good children of Bharat Mata, its our duty to keep our trust on our leaders and follow their directives.

ভারতের সাফল্য

বহু ভারতীয়দের স্বপ্নপুরী তথা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র আমেরিকায় গত ২৪ ঘন্টায়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে, মারা গেলেন প্রায় ২৩০০ জন। করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা ২৫,৯৯২ জন।

দ্বিতীয় স্থানে আছে ইতালি, যেখানে মোট মৃতের সংখ্যা ২১,০৬৭। স্পেনের মত দেশেও মৃতের সংখ্যা পৌছেছে ১৮,২৫৫ তে। ঘরের পাশে ইরানেও মৃতের সংখ্যা ৪৫০০ ছাড়িয়ে গেছে।

ভারতে বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা ১১,০০০ এর মত আর মৃতের সংখ্যা ৩৭৭ জন। এবার এই দেশগুলির সাথে ভারতের জনসংখ্যা, জনঘনত্ব তুলনা করুন আর ভাবুন এই অনুপাতে চললে ভারতে বিপর্যয়ের পরিমাণ কতটা হতে পারতো। সোশাল মিডিয়াতে, সরকারের অক্ষমতা নিয়ে সমালোচনা করার, তির্যক মন্তব্য করার পূর্ণ স্বাধীনতা আপনার আছে, কারণ এটা গণতন্ত্র। কিন্তু কখনও খোলা মনে ভাবুন, করোনার মত বৈশ্বিক মহামারীকে রুখতে কেন্দ্র তথা বিভিন্ন রাজ্যের সরকারগুলি কি সত্যিই ব্যর্থ?

হ্যাঁ, এখনও অনেক যায়গায় বিভিন্ন অত্যাবশকীয় সামগ্রীর অপ্রতুলতা রয়েছে কিন্তু তার সাথে এটাও ঠিক যে এরকম পরিস্থিতির আমরা কোনদিনই মুখোমুখি হইনি, তাই প্রতিটা পদক্ষেপই নতুন। ফলে শিশুর নতুন হাঁটতে শেখার মত, প্রশাসনের কিছু পদক্ষেপে যদি ভারসাম্যে কিছুটা বিচ্যুতি ঘটে, সেটা কি পর্বতপ্রমাণ অপরাধ? এই অসাধারণ পরিস্থিতিতে, সরকারের পাশাপাশি, দেশের মানুষ যেখানে, নিজেদের সাধ্যানুযায়ী, অন্যের দায়িত্ব নিচ্ছেন, সেখানে শুধু দোষারোপ করেই কি আমরা নিজেদের দায়িত্ব শেষ করে ফেলতে চাইছি? ভাবুন, আরেকবার ভাবুন।

https://www.dnaindia.com/world/report-us-records-over-2300-coronavirus-deaths-in-24-hours-as-cases-cross-6-lakh-2821054

Monday, April 13, 2020

করোনা পরীক্ষা

গত ৮ই এপ্রিল, সুপ্রিম কোর্ট তাদের আদেশে, বিভিন্ন বেসরকারি পরীক্ষাগারে বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষার আদেশ দেখে স্তম্ভিত হয়েছিলাম এবং এরকম একটা প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত, বিচার বিভাগ কিভাবে নিতে পারে, সেটা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলাম।
বিচারালয়ের শীততাপনিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে আদেশ দেয়া খুব সহজ কিন্তু সেটা পালনের বাস্তবিকতা কতখানি, সেটা অভিজ্ঞতা ছাড়া বোঝা কঠিন। তাদের এই আদেশের ফলে পরীক্ষাগারগুলির যে খরচ হবে সেটার দায়িত্ব কে নেবে, খরচের কারণে তারা যদি টেকনিক্যাল কারণ দেখিয়ে নিজেদের অক্ষমতা প্রকাশ করে তাহলে কি হবে, ইত্যাদি অনেক প্রশ্নেরই উত্তর ছিল অজানা। অবশেষে আজ কোর্ট তাদের আগের আদেশ পরিবর্তন করে, আয়ুষ্মান ভারত প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার অধীনে,
বিনামূল্যে এই পরীক্ষা হবে বলে নতুন আদেশ দিলেন।

আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে যে প্রাথমিক অবস্থায় মমতা ব্যানার্জীর প্রশাসন, এই রাজ্যেকে, শুধুমাত্র রাজনৈতিক বিরোধিতার কারণে, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের অধীনে আনেননি। তাঁর দাবী ছিল যে রাজ্যের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পই রাজ্যবাসীর যাবতীয় চাহিদা পূরণের জন্যে সক্ষম। তবে সুখের বিষয় হল যে ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে, রাজ্য সরকারের শুভবুদ্ধির বিকাশ ঘটে এবং রাজ্যের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পকে কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের সাথে যুক্ত করা হয়। আর তার ফলে সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সংখ্যা ৪৭ লক্ষ থেকে এক ধাক্কায় ৬ কোটিতে পৌছে যায়।

আজ পশ্চিমবঙ্গ আয়ুষ্মান ভারতে যুক্ত হয়েছে বলেই নথিভূক্ত ব্যক্তিরা প্রয়োজনে বেসরকারি পরীক্ষাগারেও করোনার পরীক্ষা করাতে পারবেন। তাই রাজ্য সরকারের কাছে অনুরোধ যে যতই রাজনৈতিক বিরোধ থাক, জনহিতকর প্রকল্পগুলো রূপায়ণের ক্ষেত্রে প্রশাসন যেন নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রেখেই চলে।

ধার্মিক

বর্তমানে "ধার্মিক" বলতে এমন একজনকে যে বুঝায় যে পৃথিবী রসাতলে গেলেও সারাদিন পূজাআর্চাতেই ব্যস্ত থাকেন। নিজের শ্রদ্ধার ঠাকুরের সেবাতেই তার নিবেদিত প্রাণ। বিগ্রহের মধ্যে ঈশ্বরকে খুঁজে পেয়ে, তার সেবায় যে সর্বদা নিয়োজিত থাকে, সেই আজকে ধার্মিক। 

কিন্তু ধর্ম মানে কি শুধুই পূজাআর্চা আর ঈশ্বরভক্তি? ঈশ্বরে অবিশ্বাসী অথবা ঈশ্বরে বিশ্বাসী হলেও পূজার মত রিচুয়ালে অবিশ্বাসী কেউ কি ধার্মিক হতে পারেনা? সেটাই যদি হবে, তাদের নির্জীব পদার্থের ধর্ম থাকে কেমন করে? ছোটবেলায় পদার্থবিজ্ঞানের সেই অধ্যায় মনে করুন যেখানে লেখা ছিল যে "জলের সমোচ্চশীলতা ধর্মকে কাজে লাগিয়েই শহরের উঁচু উঁচু বাড়িতে জল সরবরাহ করা হয়"। জল তো পূজা করেনা, তাহলে তার ধর্ম হল কিভাবে? আগুনের ধর্ম হলো তাপ দেয়া, বায়ুর ধর্ম হল শুষ্ক করা, এগুলো কোনটাই তো ঈশ্বরভক্তির সাথে যুক্ত নয়, তাহলে ধর্ম হল কিভাবে?

সনাতন ধর্মে, প্রকৃতপক্ষে, ধার্মিক হওয়ার সাথে পূজার্চনা করার কোন বাধ্যবাধকতাই নেই। 'অহিংসা পরম ধর্ম, ধর্ম হিংসা তথৈব চ'- এর মধ্যে পূজার্চনার কথা কোথায়? ২০০২ সালে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী, অটল বিহারি বাজপেয়ী যখন গুজরাটের তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী, নরেন্দ্র মোদীকে 'রাজধর্ম' পালনের কথা বলেছিলেন, তখন কি তিনি মোদীকে পূজা করার কথা বলেছিলেন?

ধর্মর প্রকৃত অর্থ হল কর্তব্য। সনাতন ধর্মের অনুসারী মানে চিরন্তন কর্তব্যপালনে যারা অবিচল। এই কর্তব্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে হতে পারে এবং সম্পর্কভেদে এই কর্তব্যের মাত্রার বদল ঘটে। তাই বলা হয়েছে পিতৃধর্ম ও পুত্রধর্মের কর্তব্যের মাত্রা আলাদা। একই ব্যক্তি একই সাথে, সম্পর্কের মাত্রা অনুসারে যদি তার কর্তব্য পালন করে, তাহলেই সে প্রকৃত ধার্মিক। কোন ব্যক্তি যদি সারাদিনে একবার পূজার্চনা না করেও, তাঁর পরিবারের প্রতি, জাতির প্রতি সমাজের প্রতি, দেশের প্রতি নিজের কর্তব্য পালন করে, তাহলেও সে ধার্মিক। আর এটাই ধর্মের সাথে রিলিজিয়নের পার্থক্য। এই কারণেই হিন্দুরা সনাতন ধর্মের অনুসারী, বাকি আব্রাহামিক রিলিজিয়নগুলির মত ধর্মভীরু নয়।

Sunday, April 12, 2020

তিক্ত অভিজ্ঞতা


ভিন রাজ্যে আটক বাঙালীদের জন্যে ত্রাণের ব্যবস্থা করার কাজ করতে গিয়ে দু'টো তিক্ত অভিজ্ঞতা হলো, যা একেবারেই অনভিপ্রেত ছিল।

১) গতকাল একটা অচেনা নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পেলাম যে পাঞ্জাবের ফতেগড় সাহেব অঞ্চলে ৫ জনের একটা একটা পরিবার আটকে আছে।
মেসেজে লেখা ছিল যে "ওরা চরম বিপদে পড়েছে। খাবারদাবার কিচ্ছু নেই। ওদের বাঁচান"। এরকম মেসেজ পেয়ে, স্বাভাবিকভাবেই বিচলিত হয়ে, পাঞ্জাবের টিমের সাথে যোগাযোগ করলাম। টিমের লোকজন সেই পরিবারের সাথে যোগাযোগ করলে তাঁরা জানান যে ঐ মেসেজ তাঁরা ৫-৬ দিন আগে করেছিলেন। এখন তাঁদের কাছে খাবার আছে। তাঁরা এখন শুধু বাড়ি ফিরতে চান। লকডাউনের মধ্যে সেটা অসম্ভব বলে আমি টিম লিডারকে বিভ্রান্তিকর খবর দেয়ার জন্যে ক্ষমা চেয়ে নিলাম। এরপর যে ব্যক্তি সেই মেসেজ পাঠিয়েছিলেন, তাঁকে ফোন করলে তিনি জানান যে তিনি ঐ মেসেজ নাকি ৫-৬ দিন আগে কোন গ্রুপে পেয়েছিলেন। তিনি আমাকে ফেসবুকে ফলো করেন। এখন ফেসবুকে আত্মদীপ-এর কাজ দেখে, আমার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। আমি ফোন করার পরে তিনি নিজের পাঠানো মেসেজটি ডিলিট করে দেন।

২) গতকালই আমার পরিচিত কলকাতার এক ব্যবসায়ী জানান যে সুরাটে তাঁর পরিচিত প্রায় ২০-২২ জন শ্রমিক ফেঁসে আছে।
তাঁরা খাবার পাচ্ছেনা। আমি সহযোগিতার আশ্বাস দিলে ওখান থেকে একজন ফোন করেন এবং জানান যে তাদের কাছে খাবার, টাকাপয়সা কিচ্ছু নেই। কন্ট্রাক্টরের সাথেও যোগাযোগ হচ্ছেনা। তাঁরা যেখানে আছেন, স্থানীয় লোকদের আপত্তির ফলে, সেখান থেকে বের হতেও পারছেন না। ঘটনার বিবরণ শুনে গুজরাটে পরিচিত লোকেদের সাথে যোগাযোগ করি। তাঁরা জানান যে রাজ্য সরকারের নির্দেশানুসারে, কন্ট্রাক্টররা তাদের কর্মচারীদের দায়িত্ব নিতে বাধ্য। তিনি কন্ট্রাক্টরের নম্বর চান। আমি সেই ফেঁসে যাওয়া ব্যক্তিদের থেকে কন্ট্রাক্টরের নম্বর নিয়ে তাদেরকে দিলে, তাঁরা সরাসরি কন্ট্রাক্টরের সাথে যোগাযোগ করেন এবং তাকে সরকারি আদেশানুসারে কাজ করতে বলেন। সেই কথোপকথনের স্ক্রিনশটও তাঁরা পাঠান। এর কিছুক্ষণ পরেই আবার একটা মেসেজ আসে যেখানে কন্ট্রাক্টরের সঙ্গে সেই শ্রমিকদের কথা রেকর্ড করা রয়েছে। সেই মেসেজে শ্রমিকরা বলেছেন যে তাদের কাছে খাবার রয়েছে, গত পরশুদিন কন্ট্রাক্টরের দেয়া ৩০০০ টাকাও আছে। তাদের নাকি গ্রামের বাড়ি থেকে বলা হয়েছিল এরকম বলতে, তাই তাঁরা আমার কাছে ওরকম বলেছেন। এরপর আমার আর কিছু বলার মুখ থাকেনা। আমি এবারও তাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী হলাম। কিন্তু এরপরেও তাঁরা জানালেন "এরকম তো হতেই পারে। এরপরেও যদি কোন যায়গায় প্রয়োজন হয়, নিঃসঙ্কোচে তাঁদের জানাতে"। আমি তাঁদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে, অডিও ক্লিপটা সেই ব্যবসায়ী ভদ্রলোককে পাঠিয়ে দিলাম।

এমতাবস্থায় সবার কাছে অনুরোধ করছি আমাদের ক্ষমতা সীমিত, তাই দয়া করে, ভুল খবর দিয়ে, সেই ক্ষমতাটুকুর অপব্যবহার করবেন না। ভুল খবরের পিছনে দৌড়ে সময় ও এনার্জি খরচ করার মত বিলাসিতা আমরা এবং আমাদের পরিচিত ব্যক্তিরা দেখাতে পারবনা। তাই যেখানেই যা শুনলেন বা দেখলেন, সেটা নিয়ে ১০১% নিশ্চিত নাহলে, খামোখা ট্যাগ বা মেসেজ করবেন না। আপনারা নিশ্চয়ই চাননা যে ভুল খবরের পিছনে ছুটতে গিয়ে, আমরা প্রকৃত প্রয়োজন আছে যার, এমন কাউকে সেবা দিতে বঞ্চিত হই।


Friday, April 10, 2020

ধর্ম

যে সমাজের মঙ্গলসাধনের জন্যে কাজ করছি, সেই সমাজ থেকে কাজের ন্যুনতম স্বীকৃতির আশা না রেখেও কাজ করে যাওয়াটাই ধর্ম।

যে সমাজের উন্নতিসাধনের চেষ্টা করছি, খোদ সেই সমাজ আমাকে নির্বাসনে পাঠালে, সেই অবস্থাতেও তাদের শুভচিন্তা করাটাই ধর্ম।

দেয়া-নেয়ার সম্পর্কের বাইরে বেড়িয়ে, একতরফাভাবে জাতির মঙ্গলকামনা করার মানসিকতাই একজন রাজনীতিবিদ আর একজন সমাজসেবকের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দেয়।

অর্থের থেকেও যশের লোভ অনেক বেশী আর যে যশের মোহকে তুচ্ছ করে, নিজের কর্তব্যে অবিচল থাকতে পারে তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করাটাই ধর্ম।

Tuesday, April 7, 2020

ওষুধের কুটনীতি

গতকাল রাতেই BBC-র একটা রিপোর্টকে উদ্ধৃত করে ট্যুইট করেছিলাম যে করোনা মোকাবিলায় ভারত 'গেম-চেঞ্জার' হওয়ার ক্ষমতা রাখে।
তবে সত্যি কথা বলতে গেলে, গতকাল রাতের কথা যে এত তাড়াতাড়ি ফলবে সেটা স্বপ্নেও ভাবিনি।

আজ যারা আমেরিকাকে হাইড্রোক্লোরোকুইন দেয়া নিয়ে মোদীর মুন্ডুপাত করছেন, আমেরিকার কাছে ভারতকে বেচে দেয়ার স্লোগান তুলছেন তাদেরকে সবিনয়ে একটা জিনিস বলতে চাই যে 'বেওসা' জিনিসটা নরেন্দ্র মোদী আমার-আপনার থেকে অনেক ভাল বোঝেন৷ আর তাই এরকম একটা পরিস্থিতি হতে পারে ভেবেই গত শনিবার এই ওষুধের রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

এখন প্রশ্ন হল যে এই হাইড্রোক্লোরোকুইন জিনিসটা কি? সহজ ভাষায় বলতে গেলে, এটা ম্যালেরিয়া রোধক প্রাচীন ও জনপ্রিয় ওষুধ, ক্লোরোকুইনের মাসতুতো ভাই। আর ভারতে এই ওষুধের এতটাই প্রাচুর্য আছে যে আমরা নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়েও বাইরে পাঠাতে পারি। আজ্ঞে, এটা আমি নয়, ইন্ডিয়ান ড্রাগ ম্যানুফ্যাকচারস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে অশোক কুমার মাদান বলেছেন।

তাহলে প্রশ্ন ওঠে যে মোদী তাহলে, গত শনিবার, খামোখা এটাকে নিষিদ্ধ করতে গেলেন কেন? আমার ধারণা, কারণ ট্রাম্পের হয়ে কিছুটা খেলে দেয়া আর তার বদলে ভারতের ফয়দা কামিয়ে নেয়া। একটু ভেঙে বলি, আমেরিকাতে এখন এই ওষুধকে, কমপ্যাশনেট গ্রাউন্ডে, করোনা আক্রান্তদের উপর পরীক্ষা করা হচ্ছে। আমেরিকার চিকিৎসকদের একাংশ এর বিরোধিতা করলেও, এই পরীক্ষা চলছে। এমতাবস্থায়, রপ্তানি বন্ধ করার পর, ট্রাম্প যদি সেটা তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গীতে হুমকি দিয়ে চালু করাতে পারেন, তাহলে আগামী নির্বাচনে ট্রাম্পের লাভ। আর ভারতের লাভ হল যে নিজের দেশে সহজলভ্য ওষুধ আর নতুন করে করোনার জন্যে পরীক্ষা করতে হলনা, উল্টে কিছু বৈদেশিক মূদ্রাও আসলো। আর হ্যাঁ, বর্তমান এই চুক্তির মধ্যে যদি ভবিষ্যতে, ট্রাম্প পুনরায় নির্বাচিত হলে, ভারতীয়দের ভিসার বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত থাকে, তাহলেও আমি অবাক হবনা।

https://www.bbc.com/news/world-asia-india-52180660

https://www.nytimes.com/2020/04/06/us/politics/coronavirus-trump-malaria-drug.html

Miss you?

আমরা যখন কাউকে বলি, I miss you, আমরা কি প্রকৃতই সেই ব্যক্তিকে miss করি? In fact, আমরা কি সত্যিই কাউকে miss করি? আমার তো মনে হয়, আমরা যখন কাউকে miss you বলি, যেটা আমরা প্রকৃত miss করি সেটা হলো সেই ব্যক্তির সাথে কাটানো নিজেদের সুন্দর মুহূর্তগুলো। হ্যাঁ, শুধু সেই মুহূর্তগুলো যার সাথে আমরা নিজেরা জড়িয়ে আছি। সেরকম সুন্দর মুহূর্ত যদি অন্য কারুর সাথে পেয়ে যাই, তখন আমরা আর আগেরজনকে miss করিনা। তাই প্রেমিক বা প্রেমিকা বিচ্ছেদ হলে বা পরিচিত কেউ মারা গেলে আমরা ততদিনই সেটা নিয়ে শোকাহত থাকি যতদিন না পর্যন্ত তাদের বিকল্প আনন্দের উৎস না খুঁজে পাই।

Matter of concern

As per Central IB report, 12 Tablig men from Andhra Pradesh stayed at Nakhoda Masjid, Kolkata on 18-19 March. 3 of them tested positive for Corona. The study of about 157 Tablig workers from UP, who participated in Nizamuddin Markaz, revealed that they were in contact with several business party in WB. 20 containing passengers at Nagpur airport during Jan-Feb 2020 have their address in WB.

Sunday, April 5, 2020

ধর্ম যার যার, রোগ সবার

মক্কা যখন সীল করে দেয়া হয়েছে, তখন খোদ দিল্লীতে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নাকের তলায়, এই মরকজ কেন চলছিল সেটা নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে পরিস্কার হয়ে গেছে। নোটে থুতু লাগানো, স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রমণ করা, হাসপাতালে নগ্ন নাচ, ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণের মহৎ উদ্দেশ্য পরিচালিত মরকজ তার লক্ষ্যে যে চুড়ান্ত সফল সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। এবার আপনার কাজ খালি কাউন্টডাউন করা যে সেই নোটটা বা তবলিগে যোগদান করা সেই প্রশিক্ষিত লোকটা কবে আপনার সংস্পর্শে আসবে। চিন্তা করবেন না, তারপরের কাজটুকু এমনিতেই হয়ে যাবে। হাজার হোক, আপনাদের দু'জনের রক্তের রঙই তো লাল।

https://eisamay.indiatimes.com/nation/1023-cases-across-17-states-linked-to-jamaat-centre/articleshow/74988445.cms

Saturday, April 4, 2020

PM Cares Fund

২০০৪ সালে সুনামি বিপর্যয়ের সময় থেকে সরকারি সিদ্ধান্ত ছিল যে দেশের আভ্যন্তরীণ দুর্যোগের ক্ষেত্রে কোনওরকম বৈদেশিক সাহায্য নেবেনা কেন্দ্রীয় সরকার। এই কারণে ২০১৯ সালে কেরালাতে বন্যার সময়, আরব আমীরশাহি বা মালদ্বীপের মত রাষ্ট্রগুলি সহায়তা করতে চাইলেও সেটা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন কেন্দ্র সরকার।

১৫ বছরেরও বেশী সময় ধরে চলা সরকারি সিদ্ধান্ত হঠাৎ বদলে যায় গত ২৮শে মার্চ, যখন প্রধানমন্ত্রী, দেশে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলায় ফান্ড থাকা সত্ত্বেও, অর্ডিনান্সের মাধ্যমে PM Cares Fund নামে একটা নতুন ফান্ড তৈরী করেন এবং সেই ফান্ডে বিদেশী অনুদান নিতে সম্মত হন।
শুধু তাই নয়, সাথে এই সিদ্ধান্তও নেয়া হয় যে এই ফান্ডে ৩০শে জুন অবধি যারা অনুদান দেবে তারা শুধু ২০১৯-২০ আর্থিক বর্ষে ১০০% আয়কর ছাড় পাবে তাই নয়, একইসাথে পরবর্তী আর্থিক বর্ষেও ছাড়ের জন্যে বিবেচিত হবেন। শিল্পপতি ও বলিউড শিল্পীরা, জাতীয় ত্রাণ তহবিলে অনুদান দিয়ে একবার করছাড়ের বদলে কেন PM Cares Fund-এ দান করছেন সেটা নিশ্চয়ই এবার আপনার কাছে স্পষ্ট হয়েছে!

প্রাথমিকভাবে বিদেশী অনুদান গ্রহণ করার কথা বললেও এবং সেই উদ্দেশ্যে SWIFT কোড প্রকাশ করা হলেও পরে বিভিন্ন মহলের চাপে নরেন্দ্র মোদী সরকার এখন সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করেছেন এবং ঘোষণা করেছেন যে শুধুমাত্র NRI ও PIO(Person of Indian Origin)-দের থেকেই অনুদান গ্রহণ করবেন ঠিক যেভাবে জাতীয় ত্রাণ তহবিলে অনুদান নেয়া হয়। যদিও ইতিমধ্যে যদি কোন বিদেশী সংগঠন বা ব্যক্তি অনুদান দিয়ে থাকেন, তাদের তথ্য দু-একদিনের ভিতর প্রকাশ করার কথা বলা হলেও, সেই তথ্য এখনও প্রকাশ করতে পারেনি কেন্দ্রীয় সরকার।

https://stratnewsglobal.com/india-will-now-accept-foreign-donations-to-help-battle-chinese-virus/

https://www.thehindu.com/news/national/pm-cares-centre-sends-conflicting-signals-on-foreign-donations/article31245203.ece

Friday, April 3, 2020

প্রতীকী

শ্রী নরেন্দ্র মোদী, একাত্মতা প্রকাশের দায় কি শুধু দেশবাসীর, সরকারের কোন দায় নেই? দেশবাসী ঘন্টা বাজিয়ে, প্রদীপ জ্বালিয়ে একাত্মতা, থুড়ি, মহাশক্তির প্রকাশ ঘটিয়েই যাবে আর সরকারের EMI স্থগিতের নামে ধাপ্পা দিয়ে যাবে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নাকের তলায় তবলিগের জমায়েত চলতে দেবে? যেখানে শুধুমাত্র ১৪৪ ধারা ভাঙার জন্যে হরিয়ানাতে ৩৩ জন ডেরা সাচ্চা সমর্থককে গুলি করে মারা হয়েছিল, সেখানে তবলিগের মরকজে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে পাঠানো কিসের ঈঙ্গিত? করোনা মহামারী আকার ধারণ করার পরেও, কেষ্টুবিষ্টুদের আত্মীয়দের আক্রান্ত দেশগুলি থেকে নিয়ে এসে, বিনা বাধায় সমাজে ছেড়ে দিয়ে, হতদরিদ্র শ্রমিকদের ভাগ্যের ভরসায় ছেড়ে দেয়া, তাদের উপর রাসায়নিক ছড়ানো কি সরকারের একাত্মতা প্রকাশ করে? মাফ করবেন, এক হাতে চড় মারা যায়, তালি বাজানো যায়না। আর সরকারের কাজকর্ম প্রমাণ করে দিচ্ছে যে তারা দেশবাসীকে চড় মারতেই বেশী আগ্রহী।

Thursday, April 2, 2020

EMI ধাপ্পা

ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ঢাকঢোল পিটিয়ে যে তিন মাসের EMI ছাড়ের কথা ঘোষণা করেছিল, কেন্দ্রীয় সরকার যেটাতে উচ্ছ্বসিত হয়েছিল আর সাধারণ মানুষ যেটা শুনে দুই হাত তুলে মোদী সরকারের জয়ধ্বনি দিয়েছিল সেটা যে আসলে ধাপ্পা ছিল, এটা এখন প্রমাণিত। এরকম লুকোচুরি যে হতে পারে সেটা আন্দাজ করেই গত ৩০শে মার্চ, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী, নির্মলা সীতারামনকে ট্যাগ করে, এই বিষয়ে স্পষ্টীকরণ দাবী করেছিলাম আর ঘটনাচক্রে দু'দিন পরে সেটাই ঘটলো। 

স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার মত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বা ICICI এর মত বেসরকারি ব্যাঙ্ক, উভয়েই জানিয়ে দিয়েছে যে EMI যথানিয়মেই কাটা হবে। আর কেউ যদি এই লকডাউনের কারণে এই তিন মাসের ছাড় নিতে চান তাহলে তাকে শুধু আলাদাভাবে ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করতে হবে তাই নয়, এই তিনটে EMI না দেয়ার জন্যে, সুদ হিসাবে, বাড়তি টাকাও দিতে হবে। উদাহরণ স্বরূপ, কারুর যদি স্টেট ব্যাঙ্কে ৩০ লক্ষ টাকার গৃৃৃহঋণ থাকে আর সেটা শোধ করার জন্যে ১৫ বছর সময় থেকে থাকে তাহলে এই তিনটে EMI না দেয়ার জন্যে তাকে বাড়তি ২.৩৪ লক্ষ টাকা, যেটা ৮ টা EMI-র সমতুল্য, দিতে হবে। লকডাউনের মধ্যে কতজন ব্যাঙ্কে আবেদন দিতে পৌছাতে পারবে সেই প্রশ্ন নাহয় আপাতত উহ্যই থাক।

দেশের লোককে এভাবে ঠকানোর পরেও কি নরেন্দ্র মোদী সরকার দেশের লোকের বিশ্বাস লাভের আশা করতে পারেন? এরপরেও কেন্দ্রীয় সরকার আশা রাখতে পারেন যে দেশের লোক তাদের সাথে সহযোগিতা করেই যাবে? 

https://timesofindia.indiatimes.com/business/india-business/opting-for-emi-moratorium-be-ready-to-pay-more/articleshow/74940137.cms