Sunday, January 31, 2021

দলবদল ও ভোলবদল

বছরখানেক আগেও বৈশালী ডালমিয়াকে যেক'জন জানতেন, তারাও তাকে চিনতেন পিতৃপরিচয়ের কারণে। একইভাবে, ক্রিকেটার হিসাবে লক্ষ্মীরতন শুক্লার যা পরিচিতি ছিল, তার থেকে বেশী পরিচিতি হয় মমতা ব্যানার্জীর কৃপাদৃষ্টি পড়ার পরে। সস্তা চমকের জন্যে মমতা এমন অনেককে প্রার্থী করেছেন যাদের রাজনীতিতে বুথ লেভেলে ঢোকারও যোগ্যতা নেই। সন্ধ্যা রায় থেকে মুনমুন সেন, কল্যাণ ব্যানার্জী থেকে মিমি, নুসরাত বা দেব - একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি।

কিন্তু মজা হলো যে, কেউ যতই অযোগ্য হোক না কেন, রাজনীতিতে সে যদি একবার রক্তের স্বাদ পেয়ে যায় তাহলে সেটা থেকে বিরত থাকা খুবই কঠিন। একই ঘটনা বিজেপিতেও ঘটছে। সঙ্ঘের এক তদানীন্তন ক্ষমতাশালী প্রচারক, বিজেপির নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে রাখার জন্যে, পরিবারের অন্য সংগঠন থেকে এক ব্যক্তিকে নিয়ে এসে মুহূর্তের মধ্যে রাস্তার ধুলো থেকে ক্ষমতার গজদন্ত মিনারে বসিয়ে দিয়েছিলেন। ফলাফল, সেই প্রচারক আজ আর নিজের পদে না থাকলেও, সেই rag to rich ব্যাক্তি আজও সেই ক্ষমতায় আসীন।

রাজনীতিতে যে জিনিসটার সবচেয়ে অভাব সেটা হলো নীতি। এটা দোষের নয়, এটাই রাজনীতির চরিত্র। আজ মমতা যদি আবার হুমায়ুন কবীরের মত নতুন কোন মুখ নিয়ে এসে, নিজের হৃত সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধারে চেষ্টা করেন তাহলেও তাঁর মাথায় রাখা উচিত যে তিনি সেই নতুন মুখকে কি ভেবে আনছেন সেটার সাথে নতুন মুখ কি ভেবে আসছেন, সেটাও মাথায় রাখা দরকার। যেকোন দলে আসা ব্যক্তিদের, ব্যক্তিগত স্বার্থ উপলব্ধি না করে, যদি নির্বিচারে দল ভরানো হয়, তাহলে দলের ভাল সময়ে all is well চললেও, খারাপ সময়ে অনেককেই পাশে পাওয়া যাবেনা।

Friday, January 29, 2021

মেরুকরণ

গত ২৪শে ডিসেম্বর, চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের প্রাক্তন কমিশনার, হুমায়ুন কবীরের একটা ভাষণের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রশ্ন করেছিলাম যে নিজের কৌমের পাশে এভাবে প্রকাশ্যে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করার মত বুকের পাটা রাজ্যের কতজন হিন্দু IPS এর আছে। তেলেনিপাড়া দাঙ্গার সময় সম্পূর্ণ একপেশে ভূমিকা নেয়ার পরেও কেন হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে কোন প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হলনা, যেমন হয়েছিল ধুলাগড়ি দাঙ্গার পরে সব্যসাচী রমণ মিশ্রর ক্ষেত্রে, সেই প্রশ্নও তুলেছিলাম (লিঙ্ক নীচে)। দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর, সম্ভবত, আজকে পেয়ে গেছি যখন হুমায়ুন কবীর নিজের প্রশাসনিক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন এবং খুব শিগগিরই তিনি হয়তো, তাঁর স্ত্রীর পথের শরিক হবেন এবং মুর্শিদাবাদ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করবেন।

না, মমতা ব্যানার্জী বা তৃণমূলের প্রতি হুমায়ুন কবীরের কোন দুর্বলতা নেই, তাঁর একমাত্র লক্ষ্য নিজের কৌমের স্বার্থ রক্ষা করা। ২৪ তারিখে পোস্ট করা ভাষণটা শুনলে বুঝবেন যে তিনি বাংলার আকাশে কালো মেঘ দেখতে পারছেন। এখানে মেঘ বলতে যে বিজেপির উত্থান বোঝানো হচ্ছে সেটা বুঝতে পারার জন্যে মহাকাশ বিজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন হয়না। অতএব আগামী বিধানসভা নির্বাচন যে সম্পূর্ণভাবে মেরুকরণের পথে, একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়। আর হুমায়ুন কবীরদের জন্যে, এই মুহূর্তে, বিজেপি তথা মোদী-শাহকে রোখার একমাত্র অস্ত্র হলেন মমতা ব্যানার্জী। মিম বা ওয়েশীরা মুসলিম ভোট ভাগ করলে, সেটাতে আখেরে যে লাভ বিজেপিরই হবে সেটা The Last Gazi এর লেখকের অবোধ্য নয়। আর সেই কারণেই তিনি আজ ইস্তফা দিয়ে, সরাসরি রাজনীতির আসরে।

মেরুকরণের পথে হেঁটে নাহয় নির্বাচন হবে, মুসলিমদের অধিকার ও কৌমের স্বার্থ রক্ষা করার জন্যে নাহয় হুমায়ুন কবীরের মত লোকেরা নিজেদের কেরিয়ার বিসর্জন দেবেন কিন্তু হিন্দুদের দিকেও কি ছবিটা একইরকম? নরেন্দ্র মোদীর ৩৭০ ধারা বাতিল করা বা রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা দেখে যারা এই বিজেপিকে হিন্দুদের অবলম্বন বলে ভাবছেন, সেই দলের রাজ্য নেতারা কি প্রকৃতই হিন্দুদের স্বার্থ ও সংস্কৃতি রক্ষা করতে আগ্রহী বা যোগ্য? তাই যদি হবে তাহলে এবিপি আনন্দর যে অনুষ্ঠানে, দেবলীনা দত্ত প্রস্তাব দিয়েছিলেন যে তিনি দুর্গাপূজার নবমীর দিন গোমাংস রান্না করে দেবেন, সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা, বিজেপির রাজ্য সভাপতি, দিলীপ ঘোষ, যিনি একদা হিন্দু জাগরণ মঞ্চের দায়িত্বেও ছিলেন, তিনি কেন তখনই সোচ্চার হলেন না? আমি দেবলীনা ও অনিন্দ্যর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগে অভিযোগ জানানোর পরে, বিজেপিরও বেশ কিছু আইনজীবীও এটা নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন কিন্তু খোদ সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকেও দিলীপ বাবু নীরব থাকলেন কেমন করে? সোচ্চার হতে বাধাটা কি ছিল, জ্ঞান নাকি সুশীল সাজার ইচ্ছা?

একটা কথা বিজেপির পরিস্কার মনে রাখা উচিত যে হিন্দুদের ভোট তাদের হাতের পাঁচ নয়। মেরুকরণের অঙ্ক তখনই সফল হবে যখন দুই দিকে তুল্যমূল্যের নেতা থাকবে। বিজেপি যদি ভাবে যে মমতা ব্যানার্জী প্রশাসনের দুর্নীতি আর সংখ্যালঘু তোষণ দেখেই মানুষ তাদের ভোট দিয়ে দেবে, তাহলে তাদের আরেকবার ভাবা প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে যে মানুষ কিন্তু একটা বা দু'টো ইস্যুতে ভোট দেয়না, অনেক হিসাব তার সাথে জড়িয়ে থাকে। হিন্দু স্বার্থ ও সংস্কৃতি রক্ষা করার মত বিশ্বাসযোগ্য মুখ যতক্ষণ পর্যন্ত না আসবে, ততক্ষণ পর্যন্ত না মেরুকরণের রাজনীতি সফল হবে, না দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শেষ হবে। আর এগুলো যদি শেষ না হয়, তাহলে দিনের শেষে কিন্তু অ্যাডভান্টেজ তৃণমূল। 

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=10158067901674865&id=620989864

Saturday, January 23, 2021

দুর্গাপূজায় গোমাংস

ক্ষেত্রবিশেষে, "সব ব্যাদে আসে" বলে কৌতুক করা মাকুরা যখন নিজেদের পিঠ বাঁচাতে, হাঁটু খাটিয়ে, সেই বেদেরই শরণাপন্ন হয়, তখন খুব মজা লাগে। কিন্তু সমস্যা হল যে, বিদেশী বিষ্ঠায় লালিতপালিত এদেশীয় মাকুরা বরাবরই দেশীয় ঠাকুর ছেড়ে, বিদেশী কুকুর পূজনে আগ্রহী। তাই তারা মার্ক্সের ধান্ধামূলক বস্তাবাদে বিজ্ঞান খুঁজে পেলেও, বেদ, উপনিষদ, রামায়ণ বা মহাভারত তাদের কাছে ব্রাত্য।

দেবলীনা দত্তর স্বামী তথাগত নাকি বেদে গোরু খাওয়ার বিধান পেয়েছেন। আরেক গরুখোর বিকাশ (এখন প্রকাশ্যে গরু খাওয়ার জন্যে হাত কামড়াচ্ছে কারণ ঐ একটা ঘটনাই তার রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্খার সাড়ে সব্বোনাশ করে দিয়েছে) যে ধর্মতলায় গরু খেলেও, শুকর খাবার ঝুঁকি নেয়নি, সে নাকি তাদের উকিল হবে। হাঁটুতে বুদ্ধি নিয়ে এর বেশী বেদজ্ঞ হওয়া কঠিন। হ্যাঁ, আমি প্রসূন মৈত্র, দায়িত্ব নিয়ে বলছি যে তথাগত বা বিকাশ, ঋগ্বেদ থেকে একটা শুক্তি দেখান যেখানে নিছক খাওয়ার জন্যে গোহত্যাকে বৈধ বলা হয়েছে। অনিন্দ্যর দ্বারা, দুর্গাপূজার নবমীতে গোমাংস খাওয়া ও দেবলীনার সেটা রান্না করে দেয়ার প্রস্তাব শুধু বাঙালী সংস্কৃতির প্রতি তাদের ঘৃণা প্রকাশ করেনা, এর সাথে তাদের বাংলাদেশের বাজার ধরার প্রচেষ্টাও জড়িয়ে আছে।

মানব সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের ইতিহাসে মানুষ একটা সময় যেমন নরমাংসভোজী ছিল, ঠিক তেমনই গোমাংসও খেত। কিন্তু বিবর্তনের নিয়ম অনুসারে এবং সমাজে গরুর উপযোগিতা বিবেচনা করেই পরবর্তী সময়ে গোমাংসকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে বিবর্তন ব্যাপারটা মাকু আর জেহাদিদের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয় কারণ তারা যে ভাবাদর্শের অনুসারী, সেটা বিবর্তন অনুমোদন করেনা। আমাদের কপাল ভাল যে তথাগত বা বিকাশ এখনও অবধি মহাভারত পড়েননি, তাহলে হয়তো রাজা সোমক যেভাবে একশো সন্তান লাভের প্রত্যাশায়, নিজের একমাত্র সন্তানকে বিসর্জন দিয়েছিলেন, তারাও হয়তো ফতোয়া জারি করতো যে প্রথম সন্তানকে বলি দিতে হবে।

বেদে গরুকে সম্পূর্ণ পবিত্র পশু বলা হয়েছে। সেটা থেকেই, সম্ভবত, ইংরেজিতে holy cow শব্দবন্ধটির উৎপত্তি। কিছু বিক্ষিপ্ত যায়গায়, তৎকালীন পরিস্থিতি অনুসারে, গোমাংস নিবেদন, আবার বলছি, ভক্ষন নয়, নিবেদন করা হলেও সেটার প্রেক্ষিতে, বাঙালীদের শ্রেষ্ঠ উৎসব, দুর্গাপূজার সময়, ঘরের মেয়ের বাড়ি ফেরার সময়ে, কোন বাঙালী, বাংলাভাষীদের কথা বলছিনা, গোমাংস খাওয়ার বা রান্না করে দেয়ার কথা ভাবতেও পারেনা যদিনা তাদের মধ্যে বাঙালী সংস্কৃতির প্রতি তীব্র ঘৃণা থাকে।

Tuesday, January 19, 2021

কাশ্মীর ও পশ্চিমবঙ্গ

১৯৯০ সালের ১৯শে জানুয়ারি, আজ থেকে ঠিক তিন দশক আগে, আজকের দিনেই শুরু হয়েছিল কাশ্মীর থেকে পন্ডিত অর্থাৎ হিন্দু বিতাড়ন। এই প্রক্রিয়া চলেছিল ছয় মাসেরও বেশী সময় ধরে আর শেষ হিন্দু পরিবার কাশ্মীর ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল ২১শে জুন, ১৯৯০। উপত্যকায় হিন্দুরা সংখ্যালঘু হয়ে যাওয়ার ফলে এই ঘটনা স্বাভাবিকই ছিল কিন্তু স্বভাবগতভাবেই বাস্তবকে অস্বীকার করা হিন্দুরা এই পরিণতি দেখতে চাননি, আর তাই দেখতে পাননি।

এই পরিকল্পিত বিতাড়ন শুরু হওয়ার বছর দুয়েক আগেও যদি কাশ্মীরি হিন্দুদের এই রকম পরিস্থিতির কথা বলা হতো, তাহলে তাঁরা সেটাকে পাগলের প্রলাপ বলেই উড়িয়ে দিতেন। তাঁরা বিশ্বাসই করতে পারতেন না যে তাঁদের পিতৃপুরুষের সম্পত্তি, তাদের মাতৃভূমি তাঁদের ছাড়তে হবে, ঠিক যেমন ভাবতে পারেননি পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের হিন্দুরা। মহাকালের সঙ্কেত বুঝতে ব্যর্থ হয়েছিলেন তাঁরা কারণ তাঁদের ধার্মিক ও সামাজিক কাঠামো পরজীবন নিয়ে সচেতন করলেও ইহজীবন সম্পর্কে অজ্ঞ করে রেখেছিল। একইভাবে, কাংলাপাহাড়িতে দুর্গাপূজা, তেহট্টে সরস্বতী পূজা বা মহরমের জন্যে বিসর্জন বন্ধ হলেও আমরা নিজেদের চোখে মেকি ধর্মনিরপেক্ষতা পট্টি বেঁধে রাখি যাতে অপ্রিয় সত্যটার মুখোমুখি না হতে হয়।

দাঁড়ান, তেহট্ট, কাংলাপাহাড়ি আর বিসর্জন পড়েই গোটা পরিস্থিতিকে, আপন মনের মাধুরি মিশায়ে, একটা বিশেষ রাজনৈতিক রঙে রাঙিয়ে নেবেন না। মহরমের জন্যে বিসর্জন স্থগিতের ঝাড়খন্ডের রঘুবর দাস সরকারও করেছিলেন আর যোগী আদিত্যনাথের শাসনে কানপুরে দুর্গা মন্দিরও ভাঙা হয়েছিল। ১৯৯০ সালে কাশ্মীরে যখন হিন্দু বিতাড়ন চলছে, তখন কেন্দ্রে ছিল বিজেপি সমর্থিত, বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং-এর জনতা দল সরকার। সঙ্ঘ পরিবারের নেতৃত্বে, দেশজুড়ে তখন চলছিল রাম মন্দির পুনরুদ্ধারের আন্দোলন। কাশ্মীরে ছয় মাস ধরে হিন্দুদের উপর নির্যাতন ও বিতাড়ন চলতে থাকলেও সেটাকে না দেখার ভান করে, জোর দেয়া হয়েছিল রাম মন্দির আন্দোলনে। কারণটা স্পষ্টতই রাজনৈতিক। রাম মন্দির আন্দোলনের ফলে যে রাজনৈতিক মেরুকরণ হয়েছিল তার সম্পূর্ণ সুবিধা পেয়েছিল বিজেপি। রাজীব গান্ধীর দুর্ভাগ্যজনক হত্যা না হলে হয়তো ১৯৯১ সালেই ক্ষমতা দখল করে নিত বিজেপি।

দেশের রাজধানী থেকে মাত্র ৭০০ কি.মি. দূরে, স্বাধীন ভারতে, কাশ্মীরি হিন্দুদের নিজভূমে পরবাসী হতে দেখেও নির্লিপ্ত ছিল প্রশাসন, নীরব ছিল রাজনৈতিক দলগুলি আর আপনি দিল্লী থেকে ১৫০০ কি.মি. দূরে বসে নিশ্চিন্ত হয়ে আছেন যে রাজনীতি আপনার রক্ষা করবে? তিরিশ বছর পার হয়ে গেছে, এখনও কাশ্মীরে ফেরত যেতে পারেনি পন্ডিতরা। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে উদ্বাস্তুর জীবন যাপন করছেন তাঁরা। এখনও বহু পন্ডিত পরিবার দিল্লীর যমুনা পারের শিবিরে দিনযাপন করছেন। আমাদের গর্বের ভারতীয় সেনাও তাদের প্রত্যাবর্তন এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছেনা রাজনৈতিক সদিচ্ছার কারণে। এরপরেও যদি আপনার মনে হয় শুধু রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটলেই এই রাজ্যে "আচ্ছে দিন" চলে আসবে তাহলে এই লেখাটা সেভ করে রাখুন, বছর তিনেক পরে এটা নিয়ে আলোচনা হবে।

Monday, January 18, 2021

প্রচার নীতি

২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাকি দলগুলি যখন নিজেদের প্রচার দেয়াল লেখন, ফ্লেক্স, পোস্টার, ব্যানার আর এলাকাভিত্তিক জনসভার মত চিরাচরিত পদ্ধতিতে সীমাবদ্ধ রেখেছিল তখন সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে, বিজেপির প্রচারকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিল টিম মোদী। এরই সাথে দেশ জুড়ে নরেন্দ্র মোদীর কার্পেট বম্বিংয়ের মত ঝটিকা প্রচার, থ্রি ডি হলোগ্রামের মাধ্যমে একইসাথে একাধিক যায়গায় মোদীর ভার্চুয়াল উপস্থিতিও এই দেশের রাজনৈতিক প্রচারকে এক নতুন মাত্রা প্রদান করে। ফলাফল? আদবানীর মত রাজনীতিতে পোড়খাওয়া ব্যক্তির "এটা কোয়ালিশনের যুগ" বক্তব্যকে নস্যাৎ করে, নরেন্দ্র মোদী বিজেপিকে এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা এনে দেন।

কাট টু ২০১৯ লোকসভা নির্বাচন। বিরোধীরা আগের নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়ে, নিজেদের IT Cell তৈরী করে নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ফেসবুক, ট্যুইটার, ইন্সটা আর হোয়াটসঅ্যাপে ছড়াতে থাকে মোদী বিরোধী মিম, ভিডিও। কিন্তু সেবার আর মোদীর প্রচার শুধু সোশ্যাল মিডিয়া নয়, বালাকোট এয়ার স্ট্রাইক আর উড়ি-দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের মত সিনেমা দিয়ে, 'নতুন ভারত'-এর প্রচার শুরু করলো টিম মোদী। রিলিজ হতে লাগলো মণিকর্ণিকা, ঠাকরে, দি অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টারের মত সিনেমা যেগুলি জনমানসে দেশপ্রেম এবং সেই আবেগের প্রতীক হিসাবে নরেন্দ্র মোদীকে স্থাপন করে। ফলাফল? বিরোধীদের ফের ব্যাকফুটে ফেলে, নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি এবার ৩০০ এর বেশী আসনে জিতে ক্ষমতাসীন।

সিনেমার মাধ্যমে জাতীয়তাবাদ প্রচার করে মোদী যে সাফল্য পেলেন সেটাকে কাউন্টার করার ক্ষমতা তখন বিরোধীদের কাছে ছিলনা, হেরে যাওয়ার পর তারা নিজেদের গুটি সাজাতে বসলো যাতে মোদী ২০২৪ এ এই অ্যাডভান্টেজ না পেতে পারেন আর পেশাগতভাবে বিকৃত বলিউড যে কাঞ্চনমূল্যে বিক্রিত হতে পারে, এটা কে না জানে! আর তাই শুরু হতে থাকলো বিভিন্ন সিনেমা এবং ওয়েব সিরিজ যেখানে খুব সুক্ষ্ণভাবে জাতীয়তাবাদ এবং হিন্দু ধর্মবিশ্বাসে আঘাত দেয়ার কাজ শুরু হলো। আর্টিকেল ১৫ থেকে মির্জাপুর - অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ঘটনার পটভূমি হিসাবে বাছা হলো উত্তর প্রদেশকে যে রাজ্য ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে নরেন্দ্র মোদীর ক্ষমতালাভের পথ সুগম করেছে। তান্ডব সিরিয়ালে মহাদেবকে নিয়ে মস্করা করা হোক বা A Simple Murder এ লাভ জেহাদকে মহান হিসাবে দেখানো - মূল লক্ষ্য ২০২৪ নির্বাচন। এই কারণেই গুলক-এর মত একটা সুন্দর পারিবারিক সিরিয়ালও রবীশ কুমারের শো-এর প্রোমোশন বা নেহরুকে দোষ না দেয়ার আর্জি থেকে বিরত থাকতে পারেনা।

পরপর দুটো নির্বাচনে বিরোধীদের প্রচারকে হারিয়ে দেয়ার পর এবার টিম মোদীকে, ২০২৪ এর জন্যে আবার নতুনভাবে তাদের অস্ত্র শাণাতে হবে এবং ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন করতে হলে আবার নতুন কোন পথ আবিস্কার করতে হবে। বিরোধীরাও সেটা পূর্বানুমান করার চেষ্টা করবেন, এটা স্বাভাবিক। এমতাবস্থায়, রাজনীতির ছাত্র হিসাবে, আগামীতে একটা আকর্ষণীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখার আশায় থাকলাম।

Saturday, January 16, 2021

হঠাৎবাদ

পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ইদানীং যে বাঙালীবাদ অথবা বাঙালী জাতীয়তাবাদের ধুয়ো উঠছে সেটা 'অনুপ্রেরণা' মূলত রাজনৈতিক। আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির উত্থানকে প্রতিহত করাই এই হঠাৎবাদের উৎস। প্রথমে এটা শুরু হয়েছিল তথাকথিত হিন্দি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে, কিন্তু হিন্দির বিরুদ্ধে মুখর হয়ে, উর্দুর বিরুদ্ধে মৌন থাকার চালাকিটা রাজ্যের ঘরপোড়া মানুষ বুঝে ফেলতেই এখন হিন্দি আর উর্দু- উভয়কেই নিশানা করা হচ্ছে।

কিন্তু এই তথাকথিত বাংলাপ্রেমীদের (অন্য অর্থে নেবেন না) মূল সমস্যা হল যে তাদের হিসাবে ভাষাই জাতির একমাত্র পরিচায়ক। তাই তাদের কাছে, দেশের পূর্বদিকের সীমান্তের পূর্ব ও পশ্চিমে বসবাসকারী উভয়েই বাঙালী। তাদের মনে কি কখনও প্রশ্ন জাগেনা যে উভয়পারের লোকের পরিচয় যদি বাঙালীই হবে তাহলে মাঝখানে সীমান্তটা আসলো কেন? হয়তো জাগে, কিন্তু রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্খা এবং কাঞ্চনমূল্যে সেই প্রশ্ন চাপা পড়ে যায়। তারা বোঝেনা বা বুঝতে চায়না যে ভাষা কখনও জাতির একমাত্র পরিচায়ক হতে পারেনা, কোন জাতির পরিচয় হল তার সংস্কৃতি। সীমান্তের পশ্চিমপারে বাঙালীদের সংস্কৃতি আর পূর্বপারে বাংলাভাষীদের সংস্কৃতি এখন আর এক নয়। সুজলা সুফলা পূর্বপারের অধিকাংশ মানুষ তাদের জন্যে এমন এক মরু সংস্কৃতিকে গ্রহণ করেছেন যেটা অন্য কোন সংস্কৃতির অস্তিত্ব মেনে নিতে পারেনা। আর সেই কারণেই রামধনু হয়ে যায় রঙধনু আর বামিয়ানের বুদ্ধমূর্তির মত, ঢাকাতেও ভাঙা হতে থাকে মন্দির, মূর্তি। কারণ সেটা সেই মরু সংস্কৃতি অনুসারে, হারাম।

আগেই বলেছি যে এই হঠাৎবাদের অনুপ্রেরণা ও স্পনসর যেহেতু রাজ্যের বর্তমান শাসক দল এবং একমাত্র লক্ষ্য বিজেপির অগ্রগতি রোধ করা, তাই বাজারে আরও একটা নতুন তত্ত্ব আসছে আর সেটা হল হিন্দু বাঙালী জাতীয়তাবাদ। বিজেপি যেহেতু হিন্দু জাতীয়তাবাদকে পুঁজি করে আন্দোলন করছে, তাই সেই আন্দোলন থেকে বাঙালীদের আলাদা করা (পড়ুন ভোট কাটা) এই নতুন দলের লক্ষ্য। আর এই লক্ষ্যে মূলত তারাই কাজ করছে যারা এতদিন বিজেপির দুয়ারে হত্যে দিয়ে পড়েছিল আর এখন সেখানে পাত্তা না পাওয়াতে তাদের মনে হয়েছে যে বিজেপিকে দিয়ে কিছু হবেনা। ভাবটা এমন যেন বিগত দশ বছরে বিজেপিই এই রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল আর কাংলাপাহাড়িতে দুর্গাপূজা বন্ধ বা তেহট্ট হাই স্কুলে সরস্বতীপূজা বন্ধ বিজেপিই করেছে। মহরমের জন্যে বিসর্জন বন্ধ করা বা তোতোন দাস, রোহিত তাঁতিদের হত্যাও হয়েছে বিজেপি প্রশাসনের কারণে। সমুদ্রগড়ের নিরীহ ছেলেদের, শুধু রাজনৈতিক বিরোধিতার কারণে, গাঁজা কেসে ফাঁসিয়ে, তিন বছর ধরে আটকে রেখেছে বিজেপি প্রশাসন আর তারক বিশ্বাসকে গ্রেপ্তারও করেছিল বিজেপি প্রশাসন। এরপর হয়তো শুনবো যে ইমামভাতা আর OBC-A সংরক্ষণ আইনও বিজেপিরই অবদান। সত্যি, মানুষকে এতটা বোকা ভাবেন? ভাবতে পারেন?

মাফ করবেন, সাধারণ মানুষ নিজেদের দৈনন্দিন জীবনধারণের লড়াইয়ে ব্যস্ত থাকে বলে রাজনৈতিক ঝঞ্জাটে বেশী জড়াতে চায়না ঠিকই কিন্তু তার মানে এই নয় যে তাদের রাজনৈতিক চেতনা নেই। কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল- সেটা তারা বোঝে, হ্যাঁ, পরিস্থিতির কারণে সবসময় সেটা নিয়ে সোচ্চার হতে না পারলেও, বোঝে আর সুযোগের অপেক্ষায় থাকে সেই ভুল শোধরাবার। ভারতের গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে, প্রতি পাঁচ বছর অন্তর তাঁদের কাছে সুযোগ আসে সেই ভুল শোধরাবার। আগামী সপ্তাহে নির্বাচন কমিশনের টিম এই রাজ্যে আসছেন, হয়তো মার্চ মাস থেকে নির্বাচন শুরু হওয়ার কথা ঘোষণাও করে দেবেন। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ সেই ঘোষণার অপেক্ষায় বসে নেই, তাঁরা মনস্থির করে নিয়েছেন যে কিভাবে জবাব দেবেন। কেউ তাঁদের বিপথে চালানোর চেষ্টা করতেই পারে, কিন্তু সেটাতে বিশেষ লাভ হবেনা।

Thursday, January 14, 2021

সেকুলার বিচার

স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন যে "এদেশে সেই বুড়ো শিব বসে আছেন, মা কালী পাঁঠা খাচ্ছেন, আর বংশীধারী বাঁশী বাজাচ্ছেন। ঐ বুড়ো শিব ষাঁড় চড়ে ভারতবর্ষ থেকে একদিকে সুমাত্রা, বোর্নিও, সেলিবিস, মায় অষ্ট্রেলিয়া, আমেরিকার কিনারা পর্যন্ত ডমরু বাজিয়ে এককালে বেড়িয়েছেন, আর একদিকে তিব্বত, চীন, জাপান সাইবেরিয়া পর্যন্ত বুড়ো শিব ষাঁড় চরিয়েছেন, এখনও চরাচ্ছেন; ঐ যে মা কালী—উনি চীন, জাপান পর্যন্ত পূজা খাচ্ছেন, ওঁকেই যীশুর-মা মেরী করে ক্রিশ্চানরা পূজা করছে। ঐ যে হিমালয় পাহাড় দেখছ, ওরই উত্তরে কৈলাস, সেথা বুড়ো শিবের প্রধান আড্ডা। ও কৈলাস দশমুণ্ড-কুড়িহাত রাবণ নাড়াতে পারেননি, ও কি এখন পাদ্রী-ফাদ্রীর কর্ম!! ঐ বুড়ো শিব ডমরু বাজাবেন, মা কালী পাঁঠা খাবেন, আর কৃষ্ণ বাঁশী বাজাবেন—এ দেশে চিরকাল। যদি না পছন্দ হয়, সরে পড় না কেন? তোমাদের দু-চারজনের জন্য দেশসুদ্ধ লোককে হাড়-জ্বালাতন হতে হবে বুঝি? চরে খাওগে না কেন? এত বড় দুনিয়াটা পড়ে তো রয়েছে। তা নয়। মুরদ কোথায়?"।

মুরদ যে নেই সেটা কালীপূজা, ছট বা কার্ত্তিক পূজা উপলক্ষে বাজী ফাটানো বন্ধ করা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায় এবং একই আদালতের ক্রিস্টমাস ও নববর্ষ উদযাপনের সময় বাজী ফাটানো সম্পর্কিত কোন নিষেধাজ্ঞা জারি না করা নিয়েই স্পষ্ট। একই ঘটনা ঘটেছে মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে, গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে। মহামান্য আদালত, গঙ্গাসাগরে ভক্তদের পুণ্যস্নানকে মহামারী পরিস্থিতিতে আপত্তিকর বলে মনে করলেও দীঘা, মন্দারমণি প্রভৃতি এলাকায় নিয়মিত চলা সমুদ্র স্নানের মধ্যে অবশ্য আপত্তিকর কিছু খুঁজে পাননি। আজ্ঞে, মহামান্য বিচারপতিদের মতে করোনা কেবল গঙ্গাসাগরের পুণ্যস্নান থেকেই ছড়াতে পারে, দীঘা বা মন্দারমণির জলকেলি থেকে নয়। জীবাণু সংক্রমণ কেবল কালীপূজা বা ছটের বাজী থেকেই ছড়াতে পারে, ক্রিসমাসের বাজী থেকে নয়।

এরপরেও আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে যে বিচারপতিরা নিরপেক্ষ, একদেশদর্শী নন আর সেটা বিশ্বাস না করলেই আপনাকে আদালত অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত করা হবে। অথচ কলোনিয়াল মানসিকতার বিচারপতিরা, তাদের পদাধিকারবলে, শুধুমাত্র হিন্দুদের পূজাপার্বণকে, সেটা কালীপূজা হোক বা জাল্লিকাট্টু, নিয়ন্ত্রণ করার, খর্ব করার চেষ্টা করবেন আর রাজনৈতিক দলগুলিও মুখ বুজে সেগুলি মেনে নেবে কারণ সমাজ অচেতন। হিন্দু ধর্ম নিয়ে শুধু তির্যক মন্তব্য করার জন্যে স্বামী বিবেকানন্দ দু'জন পাদ্রীকে জাহাজ থেকে জলে ফেলে দিতে গিয়েছিলেন, পরে তারা ক্ষমা চেয়ে মুক্তি পান অথচ আমরা, দু'দিন আগেই ঢাকঢোল পিটিয়ে স্বামীজির জন্মদিন পালন করলেও তাঁর প্রদেয় শিক্ষা নিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। আর তাই এই পরিণতি।

Saturday, January 9, 2021

সাধু সাবধান

সাধু সাবধান। এবার ১২-ই জানুয়ারী বিশেষ বিশেষ ব্যক্তিরা নিজেদের এলাকায় ঝাঁপিয়ে পড়বে স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন পালন করতে। সচেতন হিন্দুরা খুব খুশি হয়ে যাবে। ভাববে, বোধহয় এনাদের মতি ফিরল। এনারা বোধহয় এইবার সেকু থেকে হিন্দু হচ্ছেন। 

ভুল, ভুল!.......এনাদের মতি ফেরার নয়। এনারা তো ক্রিমিনাল, স্মাগলারদের, তোলাবাজ আর জেহাদীদের সঙ্গে জয়েন্ট বিজনেসে যুক্ত। তাদের সঙ্গ তো এঁরা ছাড়তে পারবেন না। তাহলে হঠাৎ বিবেকানন্দ ভক্তি কেন? একটু ভাবুন। 

সারা বছর ধরে সারা পশ্চিমবঙ্গব্যাপী মুসলিম দুষ্কৃতিদের দ্বারা এত থানা জ্বালানো, এত আক্রমণ, এত অত্যাচার দেখে হিন্দুর চোখ খুলছে। চেতনা জাগ্রত হচ্ছে। সংঘবদ্ধ হচ্ছে। একজোট হচ্ছে। ফলে সেই "তেনারা" বিপদসংকেত দেখছেন। দুস্কৃতির বিরুদ্ধে অত্যাচারীর বিরুদ্ধে জনতা যদি একজোট হয়ে যায়, তাহলে তো সমূহ বিপদ! রাজত্বে হাত পড়বে যে!

তাই রাজত্ব বাঁচানোর জন্য "তেনারা" এখন হিন্দু সাজবেন। তার জন্য ১২-ই জানুয়ারী সুবর্ণ সুযোগ। ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। মঞ্চ বাঁধতে হবে। বিবেকানন্দের বড় ছবি লাগাতে হবে। গাঁদা ফুলের মালা নয়, বিবেকানন্দের জন্য কেনা হবে রজনীগন্ধার মোটা মালা। একটু ভিতরে খোঁজ নিয়ে দেখবেন - স্বামীজী জন্মদিন পালনের জন্য চাঁদা আসছে জেহাদীদের কাছ থেকে। তারপর ডাকা হবে নিজেদের নেতাদের। যে নেতারা সারা বছর ওই ক্রিমিনালদেরকে থানায় প্রোটেকশন দেন। তাঁদেরকে হিন্দুপ্রেমী দেখানোর জন্যই তো এত আয়োজন! 

হিন্দু জনতা সারা বছর মার খাবে। তার বাড়ি দোকান লুট হবে, পুড়বে। তার মন্দির ভাঙবে। তার মেয়েদের গায়ে নোংরা হাত পড়বে। প্রশাসন থেকে কোনোরকম নিরাপত্তা পাবে না। তারপর স্বামী বিবেকানন্দ জন্মদিন ১২-ই জানুয়ারী পালন দেখে তারা সান্ত্বনা পাবে। খুশী হতে পারবে কিনা বলতে পারছি না। সেই উদ্দেশ্যেই তো এত আয়োজন।

সাবধান। সাবধান! সাবধান! 

হিন্দু ভাইরা, আপনারা অনেক ঘা খেয়ে নিরাপত্তার যে দেওয়াল গড়ে তুলছেন  - তা যেন নীচু করবেন না।

Friday, January 8, 2021

নবজাগরণ

১৯৯২ সালে, সম্ভবত জানুয়ারি মাসে, রামজন্মভূমি আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তপনদা একটা লিফলেট লিখেছিলেন যার শীর্ষক ছিল- 'ভারতীয় মুসলমানদের শরীরে কার রক্ত বইছে, রামের না বাবরের?'। লিফলেটটা অসম্ভব জনপ্রিয় হয়েছিল। জনপ্রিয়তার মাত্রা এতটাই ছিল কেউ সেই লিফলেট নিয়ে ফটোকপি করাতে গেলে দোকানদার আগে থেকেই কপি করে রাখা লিফলেট তাকে দিয়ে দিতো। 

২৮ বছর আগে তোলা তপনদার সেই প্রশ্ন আজও সমান প্রাসঙ্গিক। এদেশে বসবাসকারী প্রায় সব মুসলমান ও খ্রিষ্টানরা কয়েক প্রজন্ম আগেও এদেশের হিন্দু জাতি ও সংস্কৃতিরই অঙ্গ ছিল। কেউ অস্ত্রের ভয়ে আর কেউ অর্থের লোভে ধর্মান্তরিত হয়েছে। আদতে তারা প্রত্যেকেই এই হিন্দু সমাজেরই অঙ্গ ছিল কিন্তু আজ তাদের সাথে হিন্দুদের সহাবস্থানের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিদেশী সংস্কৃতি। 

মুসলমানরা যদি মহম্মদকে পয়গম্বর মেনে বা খ্রিষ্টানরা যদি যীশুকে ঈশ্বর মেনে তাদের উপাসনা করতো তাহলে সহাবস্থানের ক্ষেত্রে কোন অসুবিধার সৃষ্টিই হতনা কারণ সনাতন ধর্ম কখনই উপাসনা পদ্ধতির ভিত্তিতে ভেদাভেদে বিশ্বাসী নয়। সনাতন ধর্মানুসারে, সাকার বা নিরাকার- ঈশ্বরের কোন রূপই পরিত্যাজ্য নয়। বিশেষ উপাসনার জন্যে কে শুক্রবার কে বাছবে আর কে রবিবার, সেটা সনাতন ধর্মে বিচার্য নয়। এমনকি কেউ যদি ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাসই না রাখে তাকেও সমাজের অঙ্গ হিসাবে সেই স্বাধীনতা দিয়ে সনাতন ধর্মের অনুসারী হিন্দু সমাজ।

কিন্তু সহাবস্থান সম্ভব হলনা বিদেশী ধর্মমতগুলির সংকীর্ণ মনোভাবের কারণে। আর এই মনোভাবের কারণেই একজন মুসলমান বা খ্রিষ্টান নিজেদের কখনই হিন্দু জাতির অংশ হিসাবে ভাবতে পারেনা। তাদের কাছে সনাতন ধর্ম অতি নিকৃষ্ট। আমাদের মুনিঋষিরা তাদের কাছে শয়তানের উপাসক আর তাদের স্থান কেবল নরকে। আমাদের উপাস্য অবতারগণ তাদের কাছে হীন চরিত্রের প্রতীক। এই দেশের ভূমি তাদের কাছে 'জাহিলিয়া' ও দার-উল-হারব আর তাকে দার-উল-ইসলাম বানানো তাদের পবিত্র দায়িত্ব। এই সংকীর্ণ ধর্মীয় ভাবধারার কারণেই এদেশের মুসলমান ও খ্রিষ্টানরা কখনই হিন্দু সমাজের সাথে একাত্ম হতে পারেনি। আর এই ভাবধারাকে প্রশ্রয় দেয়ার জন্যেই তৈরি করা হয়েছে 'সেকুলারিজম' বা ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশ।

মুশকিল হল যে আর কয়েকবছরের মধ্যে তথাকথিত স্বাধীনতা লাভের ৭৫ বছর হতে চললেও হিন্দু জাতি প্রকৃত অর্থে স্বাধীনতা আজও পায়নি। শাসকের পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু স্বাধীনতা পাওয়া যায়নি কথাটা বোধহয় একটু কঠিন হয়ে গেল, উদাহরণ দিলে কিছুটা সহজ হতে পারে। ১৭৫৭ সালে, পলাশীর যুদ্ধের পরে শাসনক্ষমতা মুসলমানদের থেকে ব্রিটিশদের কাছে গিয়েছিল কিন্তু সেটা কি আমাদের স্বাধীনতা ছিল? অনেকেই এবার বলবেন যে ১৯৪৭ সালের পরে আমাদের দেশের শাসনক্ষমতা আমাদের দেশীয় ব্যক্তিদের কাছে আছে, তাই আমরা স্বাধীন কিন্তু সেই যুক্তিতে তো ইদি আমিনের শাসনে উগান্ডা, চেসেস্কুর শাসনে রোমানিয়া বা স্ট্যালিনের শাসনে USSR-ও দেশীয় ব্যক্তিদের শাসনাধীন ছিল, কিন্তু প্রকৃত স্বাধীনতা ছিল কি? 

১৯৪৭ সালে নেহরুর নেতৃত্বে যারা ক্ষমতা দখল করেছিল তাদের অধিকাংশই এদেশে হিন্দু জাতির অস্তিত্ব ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলনা। নেহরুর ধর্মনিরপেক্ষতা ছিল হিন্দু বিরোধিতারই নামান্তর। মজার ব্যাপার হল যে সেই হিন্দু বিরোধিতাকেই এমন পবিত্র বিষয় বলে মেনে নেয়া হল যে সেটাকে অস্বীকার করে কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ পর্যন্ত করতে পারবেনা। কোন প্রার্থী যদি হিন্দুদের হয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তাহলে সাম্প্রদায়িক প্রচারের অজুহাতে তার নির্বাচন লড়ার অধিকার কেড়ে নেয়া যেতে পারে। এমনকি সে যদি জিতেও যায় সেক্ষেত্রেও সেই নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করার অধিকার আদালতের আছে। এমতাবস্থায়, স্ট্যালিনের রাশিয়ায় যেমন জনগণের ভোটের নামে কম্যুনিস্ট পার্টি চিহ্নিত দুইজন প্রার্থীর মধ্যে একজনকে নির্বাচন করার অধিকার ছিল, এখানেও তেমনি আমাদের অধিকার হিন্দু বিরোধীদের মধ্যে একজনকে নির্বাচন করার। 

এমতাবস্থায়, রাজনীতির দ্বারা সমাজকে বদলানোর স্বপ্ন দেখা মানে ভাবের ঘোরে চুরি করা। হিন্দু সমাজকে প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন করতে হলে সেই দায়িত্ব সম্পূর্ণ সমাজকেই নিতে হবে। ধর্মগুরু, শিক্ষকসম্প্রদায়, ছাত্রসমাজ, কৃষক, শ্রমিক, ব্যবসায়ী, চাকুরীজীবী - এই দায়িত্ব সকলের। হিন্দুজাতির নবজাগরণ ক্ষমতার অলিন্দ থেকে নয়, অন্ত্যজ সম্প্রদায়ের কুঁড়েঘর থেকেই হবে। রাজনৈতিক স্লোগান দিয়ে নয়, মা কালীর জয়ধ্বনি দিয়েই হবে।

ক্যাপিটালে কেলেঙ্কারি

গতকাল আমেরিকার রাজধানীতে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলা শুধু নিন্দনীয় নয়, গণতন্ত্রের পক্ষেও এক অশুভ সংকেত। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ফল ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই ট্রাম্প যেভাবে গোঁয়ার্তুমি করে যাচ্ছেন এবং তাঁর সমর্থকদের উস্কানি দিয়ে যাচ্ছেন সেটা আমেরিকার মত গণতান্ত্রিক দেশে কাম্য নয়। জনগণের সিদ্ধান্তকে অগ্রাহ্য করার তাঁর এই ঔদ্ধত্য ভারতের অনেক রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ যারা নির্বাচনের ফল নিজেদের পক্ষে না গেলেই EVM এ ত্রুটি খুঁজে পান।

এই ঘটনা ভারতের জনগণের কাছে সম্পূর্ণ একটা অ্যাকাডেমিক বিষয় হয়ে থাকতো যদি না সেই বিক্ষোভে, বিক্ষোভকারীদের একাংশ, ভারতের জাতীয় পতাকা নিয়ে সামিল হতো। কোন দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য কোন দেশের জাতীয় পতাকা নিয়ে যোগ দেয়া সম্পূর্ণ অনৈতিক। আজ যদি ভারতে চলা কৃষকদের বিক্ষোভে কেউ পাকিস্তান বা কানাডার পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তাহলে আপাতদৃষ্টিতে মনে হতেই পারে সেই বিক্ষোভ স্বতঃস্ফূর্ত নয়, বিদেশী দেশের উস্কানি আছে। এমতাবস্থায়, প্রশাসন আর দেশবাসী যদি বিক্ষোভকারীদের, দেশের প্রতি আনুগত্য নিয়ে প্রশ্ন তোলে তাহলে সেটা খুব একটা অন্যায় হবেনা।

আজ যেসব অনাবাসী ভারতীয়রা ভারতের জাতীয় পতাকা নিয়ে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন তাদের ভারতের প্রতি ভালবাসা ও আনুগত্য নিয়ে সন্দেহ না থাকলেও তাদের এই আচরণ যে আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের পক্ষে সুখকর হয়নি এটা বোঝার মত বুদ্ধিমত্তা তাদের থাকলে হয়তো তারা এই মুর্খামি করতনা। অনাবাসী ভারতীয়রা, যাদের অধিকাংশই বিজেপির সমর্থক, তারা হয়তো ২০১৯ সালের 'হাউডি মোদী' অনুষ্ঠানে, নরেন্দ্র মোদী দ্বারা ঘোষিত 'আব কি বার, ট্রাম্প সরকার' দ্বারা এতটাই প্রভাবিত হয়েছিলেন যে ট্রাম্পের পরাজয় তারা মেনে নিতে পারেননি আর তাই ট্রাম্পের সমর্থনে পথে নামা কে নিজেদের জাতীয় কর্তব্য বলে মনে করেছিলেন। তবে তাদের তাদের এই পথে নামার অবিমৃষ্যকারী সিদ্ধান্ত যে ভারতকে পথে বসাতে পারে সেটা তাদের মাথায় রাখা উচিত ছিল।

Wednesday, January 6, 2021

সচেতন জনগণ

 প্রশাসন সবসময়ই স্থিতাবস্থায় বিশ্বাসী। ন্যায় বা অন্যায় বিচার করার দায়িত্ব বা মানসিকতা - কোনটাই প্রশাসনের থাকেনা। তার একমাত্র লক্ষ্য হল সমাজে অশান্তি তৈরী হতে না দিয়ে status quo বজায় রাখা। তাদের এই মানসিকতার ফলে, অনেক ক্ষেত্রেই আক্রান্তরা বঞ্চিত হয়। সামান্য প্রশাসনিক প্রভাবে যে ন্যায় সে সহজেই পেতে পারতো সেটার জন্যে তাকে আইনি ব্যবস্থার মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয়। আর ভারতের আইনি ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রিতা তো এখন প্রায় Myth এ পরিণত হয়েছে। এমতাবস্থায়,  কোন রাজনৈতিক দল, বিরোধী পক্ষে থাকাকালীন সে যত বড়ই বিপ্লবী হোক না কেন, সরকারে গেলে প্রশাসনের এই নিয়ম মেনে নিতে বাধ্য হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই প্রশাসনিক স্থবিরতা গ্রাস করে তাদের।


এই কারণে ক্ষমতায় কোন দল আছে সেটা আমার কাছে বড় কথা নয়, আসল কথা হল যে সেই দলকে দিয়ে নিজেদের কাজ করিয়ে নেয়ার সামর্থ্য সমাজের আছে কিনা! হ্যাঁ, এটা অস্বীকার করার কোন যায়গা নেই ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্ব যদি সমাজের দাবীর প্রতি সচেতন ও সহানুভূতিশীল হয় তাহলে কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়, যেমন হয়েছিল গোধরা পরবর্তী গুজরাটে। মনে রাখবেন, গুজরাটের দাঙ্গার সময় তদানীন্তন মোদী সরকার কিন্তু মোটেই জেহাদিদের আক্রমণ করেনি, পুলিশের গুলিতে নিহত হিন্দুদের সংখ্যা অনেক বেশী ছিল। কিন্তু সেই কাজটা করেছিল গুজরাটের সচেতন জনতা। মোদী প্রশাসন খালি, ক্ষেত্রবিশেষে, কিছুটা নিরপেক্ষতা অবলম্বন করেছিলেন আর সেটাও করতে বাধ্য হয়েছিলেন জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত আবেগের মর্যাদা দেয়ার জন্যে। আপনাদের অনেকেরই জানা নেই যে একই ঘটনা ঘটেছিল নলিয়াখালী, বাদুরিয়া বা হাজিনগর দাঙ্গার সময়ে। যেটা আপনারা দেখেছেন সেটার বাইরে, পর্দার পিছনেও অন্য খেলা হয়েছে যেটা জানে এলাকার মানুষ আর প্রশাসনের বিশিষ্ট কিছু ব্যক্তি। 

তাই ক্ষমতাসীন দলের গোত্র নিয়ে আমি ততটা উদ্বিগ্ন নই যতটা সেই দলকে সমাজের স্বার্থে ব্যবহার করার জন্যে সামাজিক ক্ষমতা নিয়ে। আগামী নির্বাচনে অ্যাডভান্টেজ অবশ্যই বিজেপি কিন্তু বিজেপি ক্ষমতায় আসলেই 'অপুত্রকের পুত্র হবে আর নির্ধনের ধন, মর্তে অমৃতলাভ আর মরলে বৈকুন্ঠ গমন' - এটা আমি বিশ্বাস করিনা কারণ যে ঘটনাগুলির পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষমতা হস্তান্তর হওয়ার সম্ভাবনা আছে, সেই ঘটনাগুলির পুনরাবৃত্তি রোধ করার জন্যে প্রয়োজন সচেতন জনগণ। শুধু শাসকের বদল ঘটিয়েই যদি জনগণ আত্মতুষ্টিতে ভোগে তাহলে শাসনের বদল হওয়ার সম্ভাবনা কম। নতুন শাসকের সাথে জনগণের মধুচন্দ্রিমা পর্ব শেষ হওয়ার পরেই আবার নতুন করে ক্ষোভ আর অভিযোগের জন্ম হবে। এবার সিদ্ধান্ত আপনার যে আপনি সারাজীবন খালি অভিযোগ জানিয়েই কাটাবেন নাকি সেগুলি নিরসনের জন্যে উদ্যোগী ভূমিকা নেবেন।

Monday, January 4, 2021

কালের নিয়ম

কথায় বলে, a picture says a thousand words। গান্ধী অবধি বলেছিলেন যে তিনি তাঁর একশোটা ভাষণে যে বার্তা দিতে ব্যর্থ হন, নন্দলাল বসু তাঁর একটা আঁকায় সেই বার্তা সফলভাবে পৌছে দিতে পারেন। এই কারণেই স্বাধীন ভারতের প্রথম সংবিধানে যথোপযুক্ত ছবি আঁকার দায়িত্ব নন্দলাল বসুর উপরে ন্যস্ত করার সিদ্ধান্ত নেন সংবিধান প্রণেতারা।

আগামী বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে যারা বিজেপি'তে যোগদান করছেন তাদের সবাই যে বিজেপি প্রেমী এমনটা মোটেই নয়, এদের অনেকেই কিছুদিন আগে অবধি বিজেপির বা মোদী-শাহর চোদ্দগুষ্টি উদ্ধার করেছেন কিন্তু এখন এদের কাছে দেয়ালের লিখন স্পষ্ট যে বিজেপি আসছে। আর তাই ক্ষমতার মধুর ভাগ পাওয়ার উদ্দেশ্যে এরা এখন পদ্মের উপর জমা হচ্ছে।

আর হ্যাঁ, এতে অন্যায়ের কিছু নেই কারণ এটাই রাজনীতি। যারা রাজনীতিতে নীতি বা আদর্শ খুঁজতে চান তাঁরা হয় নিজেদের আদর্শ সম্পর্কে সন্দিহান অথবা রাজনীতির চরিত্র সম্পর্কে অজ্ঞ। রাজনীতি কোন সমাজ সংস্কারের কোর্স নয়, রাজনীতি হল সমাজের বর্তমান পরিস্থিতি কাজে লাগিয়ে ক্ষমতা দখল করা। যারা এটা বুঝতে অক্ষম, তারা নাক কুঁচকাতেই পারেন কিন্তু তার পরিণতিতে কিন্তু রাজনীতি নিজের চরিত্র বদলাবেনা।