Thursday, April 30, 2015

রেখেছ বাঙালী করে...

৩৮ বছরের বাম শাসনে (হ্যাঁ, দিদির ৪ বছরের শাসনও বাম শাসন থেকে পৃথক কিছু নয়) বাঙালীর মেরুদন্ড ভেঙে গেছে। তাই তারা আর প্রতিবাদ করতে পারেনা। আত্মকেন্দ্রিকতা গ্রাস করেছে তাদের দেহের প্রতিটি কোষকে। তাই নির্লজ্জ মুসলিম তোষন থেকে সীমাহীন দুর্নীতি - কোন কিছুই তাদের আর নাড়া দেয়না। আমিত্বের মোহে তারা বদ্ধ। তাই রিগিং-এর সময় তারা প্রানভয়ে প্রতিবাদ করেনা আর বনধের দিন ছুটির আমেজে বাইরে বেরোয় না। পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্রে তাই 'গণ'-র ভূমিকা সবচেয়ে কম। 

কথায় আছে, "নিজের বুঝ পাগলেও বোঝে"। আজকের পশ্চিমবঙ্গের বাঙালীরা সেই পাগলেরও অধম হয়ে গেছে। প্রশাসনিক মদতে জেহাদি আক্রমনের সামনে প্রতিটা দিন অতিক্রমের সাথে সাথে তাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে উঠছে কিন্তু সেদিকে তাদের হুশ নেই। তারা মেতে আছে IPL নিয়ে। সীমান্তের প্রতিটা গ্রাম থেকে পরিকল্পনা করে হিন্দুদের তাড়িয়ে সেখানে বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীরা ঘাঁটি গেড়ে বসছে, মাদ্রাসা তৈরি করে তাদের সন্তানদের জেহাদী শিক্ষায় শিক্ষিত করছে আর আমরা আমাদের সন্তানদের ধর্মনিরপেক্ষতার পাঠ পড়াচ্ছি। তাই আমাদের মুখ্যমন্ত্রী যে খাগড়াগড় বিস্ফোরনকে RAW-এর ষড়যন্ত্র বলে জেহাদিদের বাঁচাতে চাইবে সেটাই তো স্বাভাবিক। এই জন্যেই তো আহমেদ হাসান ইমরানের মত জেহাদি সংসদে আমাদের রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করে। আমাদের মেয়ে বা বোনরা ফেসবুকে তাদের সেলফি পোষ্ট করার সময় একবারও ভাবেনা যে এরকম চলতে থাকলে আর কয়েক বছর পর তাদের প্রকাশ্যে বোরখা ছাড়া বেরোনোর স্বাধীনতা আর থাকবে কিনা!

তবে পাপ নাকি বাপকেও ছাড়েনা আর সেটা ঐ বঙ্গের বাঙালীদের চেয়ে ভাল আর কেই বা জানবে? নিজের বাড়ির সত্যনারায়নের সিন্নি আর রহিমের মা-র হাতের ফিরনি যে তাদের নিরাপত্তা দিতে পারবেনা সেটা বুঝেই দেশভাগের সময় নিজেদের মা-বোনের সম্মান খুইয়ে, বাপ-ঠাকুর্দার ভিটে ছেড়ে উদ্বাস্তু হয়ে এবঙ্গে এসে আশ্রয় নিয়েছিল। খোদ কলকাতা শহরের বাঙালীরা খোদার বান্দাদের ইয়ারির মূল্য দিয়েছিল ১৯৪৬-এর ১৬ই আগস্ট Great Calcutta Killing-এর সময়। সেদিন গোপাল পাঁঠার (মূখার্জী) মত কেউ না থাকলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরকাষ্ঠা কলকাতা শহর অচিরেই হিন্দুশূন্য হয়ে যেত।

তবে বাঙালী হিন্দুর স্মৃতিশক্তি খুবই দূর্বল। তাই নিজের ঘরের পাশে দেগঙ্গা, ক্যানিং, পাঁচলা, নৈহাটি প্রভৃতি জায়গায় সে বারবার Direct Action Day বা দেশভাগের সময়কার অনুরূপ ছবি দেখলেও সে নিজেকে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে মিথ্যা সান্ত্বনা দিয়ে শান্ত রাখে। আর এই মিথ্যা প্রয়াসে সে প্রবোধ খোঁজে রাজনেতাদের স্তোতবাক্যে আর মিডিয়ার ভ্রান্ত প্রচারে। নিজের বিবেক, বুদ্ধি আর যুক্তিবোধকে শিকেয় তুলে সে বাস করতে থাকে এক কল্পনার জগতে। "স্বপন যদি মধুর এমন হোক সে মিছে কল্পনা, জাগিও না; আমায় জাগিও না" - গান শুনতে ভালো লাগে কিন্তু বাস্তবেও যদি স্বপনবিলাসী হয়ে পরেন তাহলে যখন চোখ খুলবেন তখন বড় বেশি দেরী হয়ে যাবেনা তো? আপনি হয়তো বেঁচে যাবেন, আপনার ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বাঁচবে কি?