Friday, November 26, 2021

সন্ত্রাসী হামলার জাত বিচার

বিগত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় দেখেছি যে ঘটনায় সমাজের উচ্চবিত্তরা সরাসরি প্রভাবিত হয় সেটা নিয়ে, প্রশাসন থেকে মিডিয়া, বেশী তৎপর হয়। তাই ২০০৬-এর ১১ই জুলাই, মুম্বাইয়ের লোকাল ট্রেনে বিস্ফোরণে ২০৯ জন মারা গেলে বা ১৯৯২-এর ১২ই মার্চের বিস্ফোরণে ২৫৭ জন মারা গেলেও আমরা অধিকাংশই সেগুলির কথা ভুলে গেছি অথচ তাজ হোটেলে হামলার কথা মনে আছে যেখানে মৃতের সংখ্যা ১৭৫ জন।


১৯৯২ এর বোম্বে বিস্ফোরণ হোক বা ২০০৮ এর জয়পুর বিস্ফোরণ, ২০০৭ এর সমঝোতা এক্সপ্রেসে হামলা হোক বা ২০১৩ সালের হায়দ্রাবাদ বিস্ফোরণ - এগুলিতে সমাজের উচ্চবিত্তরা সরাসরি আক্রান্ত হয়নি, তাই মিডিয়া আর এগুলি আমাদের 'খাওয়ায়' না। এগুলো নিয়ে, প্রতি বছর, 'Never forget, never forgive' লেখা প্রকাশিত হয়না। এই একই কারণে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত সংলগ্ন একের পর এক এলাকা হিন্দু শূন্য হয়ে চললেও কলকেতার বাবুদের সেটা নিয়ে কোন হেলদোল নেই, সেগুলো 'ছোটলোক'দের সমস্যা কিন্তু রাজাবাজারে 'দুধ দেয়া গরুরা' রাস্তা অবরোধ করলে, মুখ্যমন্ত্রীর শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার বার্তা SMS-এর মাধ্যমে রাজ্যবাসীর কাছে পৌছে যায়।


তাজ হামলা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে নগরে আগুন লাগলে দেবালয় সেটা থেকে রক্ষা পায়না। আর্থিক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠার কৌলিন্যর ফলে যারা জেহাদি সমস্যার প্রতি চোখ বুজে থাকে ২৬/১১ তাদের প্রতি প্রত্যক্ষ বার্তা যে দেরীতে হলেও, তোমার নম্বরও আসবে। এটা জানার পরেও যদি তাদের চোখ না খোলে তাহলে নিশ্চিত যে কিছুদিন পরে, তাদের স্মরণেও আরেকটা ২৬/১১ পালিত হবে।

Sunday, November 14, 2021

ভারতের মুসলমান বনাম ভারতীয় মুসলমান

ভারতকেশরী, ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় একটা কথা বলেছিলেন, "অতীতকে গ্রহণ করো যুগানুকূল করে আর বিদেশী সংস্কৃতিকে গ্রহণ করো দেশানুকূল করে"। 


অতীত আমাদের কাছে প্রেরণা, শিক্ষা কিন্তু অতীত যদি বর্তমানকে সর্বদা নিয়ন্ত্রণ করে যায় তাহলে ভবিষ্যত অনিশ্চিত হতে বাধ্য। হিন্দু সমাজ বরাবরই গতিশীল। হ্যাঁ, টুলো পন্ডিতরা কিছু সময়ের জন্যে তার গতিপথ রোধ করতে পারলেও, গতিশীলতাকে ধ্বংস করতে পারেনি আর তাই হিন্দু সমাজ বিভিন্ন যুগে সংস্কারিত হয়েছে বুদ্ধ, নানক, রামমোহন, বিদ্যাসাগর, নারায়ণ গুরু বা আম্বেদকরের মত ব্যক্তিদের নিরলস প্রচেষ্টায়। 


উল্টোদিকে, মুসলিম সমাজের মধ্যে সেই গতিশীলতারই অভাব। ফলে এখনও তারা ১৪০০ বছর আগের স্মৃতি আকড়ে বসে আছে। সুদূর আরবে, জলের অভাবে শুধু হাতের তালু ও পায়ের পাতা ভিজিয়ে প্রার্থনা করা হত বলে নদীমাতৃক এই দেশে এখনও তারা সেই অভ্যাস চালিয়ে যাচ্ছে। বিদেশী সংস্কৃতিকে অনুকরণ করতে গিয়ে তারা নিজেদের সংস্কারিত করতে পারেনি অথচ খোদ আরবে এখন মসজিদ ভেঙে রাস্তা, হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছে। 


আরব জানে যে তার নিজের দেশের লোকসংখ্যা দিয়ে পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, তাই তারা বিভিন্ন দেশে আরবীদের ক্লোন তৈরি রাখছে যারা থাকবে অন্য দেশে কিন্তু আনুগত্য থাকবে আরবের প্রতি। আর এই কাজে আরবের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হল ইসলাম। 


ইসলামের কারণেই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী মুসলিমরা সেদেশের সংস্কৃতির সাথে একাত্ম হতে পারছেনা। আর একাত্ম না হতে পারার জন্যেই সবসময় তাদের মধ্যে নিরাপত্তাহীণতা কাজ করে। আর সেটাকেই কাজে লাগায় আরবীয় সংস্কৃতি। খনিজ তেলের কল্যাণে আরবের অর্থের অভাব নেই আর সেই অর্থের একটা বড় অংশই ব্যয় করা হচ্ছে অমুসলিম রাষ্ট্রে বসবাসকারী মুসলিমদের মধ্যে নিরাপত্তাহীণতার বোধ তৈরি করার কাজে।


আজ উত্তরপ্রদেশ বা পশ্চিমবঙ্গের কোন মুসলিম জেহাদের নামে দেশ বিরোধী কোন কাজে লিপ্ত হয়ে, নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে নিহত হলে আরবের কিছু যায় আসেনা কিন্তু তার মা বা স্ত্রী কি একইরকম নির্লিপ্ত থাকতে পারে? তার অনুপস্থিতি কি তার পরিবারের উপর প্রভাব ফেলেনা? অবশ্যই  ফেলে কিন্তু সেটা যাতে প্রকাশ না পায় তাই আরবের টাকায় সেই মৃত্যুকে গরিমান্বিত করার চেষ্টা করা হয় শহীদের মর্যাদা দিয়ে কিন্তু যে দেশের মাটিতে তাদের জন্ম হচ্ছে, তারা বড় হচ্ছে, এবং তাদের পরবর্তী প্রজন্মও জন্ম নেবে সেই দেশের ক্ষতি করলে লাভটা কার হবে? এই প্রশ্ন যাতে তাদের মনে না আসে তাই প্রতি শুক্রবার করে চলে মগজ ধোলাই যাতে মুসলিমদের বসবাসকারী দেশের প্রতি নয়, আরবের প্রতি আনুগত্য বজায় থাকে।


তাই ভারতে বসবাসকারী মুসলমানদের সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় এসেছে যে তারা কোন পরিচয় বেছে নেবেন, ভারতীয় মুসলমান না ভারতের মুসলমান। তাদের বুঝতে হবে যে তাদের শরীরে রামের রক্ত বইছে না বাবরের!