Sunday, February 28, 2021

জাভেদ শামিমের পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি

জাভেদ শামিম "পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির অফিসার"? হাসাইলে মোরে আনন্দবাজার। হ্যাঁ, তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের পদলেহন যদি পরিচ্ছন্নতা ও নিরপেক্ষতার সূচক হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই তিনি পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির অফিসার কিন্তু বাস্তবটা হল যে জাভেদ শামিম, হুমায়ুন কবীর বা নজরুল ইসলামরা কখনও নিরপেক্ষ হতে পারেননা। তাদের ধার্মিক শিক্ষা নিরপেক্ষ হতে দেয়না। এই কারণেই পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসার পরে, হিন্দু সংহতির প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান বানচাল করতে উঠেপড়ে লেগেছিল জাভেদ শামিমের নেতৃত্বে মমতা ব্যানার্জীর প্রশাসন।

২০১২ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারী, রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে হিন্দু সংহতিকে চতুর্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠান পালনের অনুমতি দিয়েও শেষ মুহূর্তে সেটা বাতিল করে দেয় কলকাতা কর্পোরেশন ও কলকাতা পুলিশ। প্রশাসনের এই খামখেয়ালিপনার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করা হয় এবং বিচারপতি ইন্দিরা ব্যানার্জী সভার অনুমতি দেন কিন্তু তারপরেও কলকাতা পুলিশের তদানীন্তন যুগ্ম কমিশনার (সদর), জাভেদ শামিমের নেতৃত্বে ঝাঁপিয়ে পড়ে পুলিশ। আদালতের আদেশের পরেও এলাকা জুড়ে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা যাতে সমাবেশ না হতে পারে। বিচারপতি ইন্দিরা ব্যানার্জীর রায়ের বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে যায় সরকার এবং সেখানেও চরম তিরস্কৃত হয় তারা। এরপরেও জাভেদ শামিম তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে, নিজের পদের চরম অপব্যবহার করে, সভায় আগত হিন্দু সংহতির কর্মীদের ধমকাতে থাকেন। তার এই ন্যক্কারজনক কাজের বিরুদ্ধে পুনরায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় হিন্দু সংহতি এবং বিচারপতি জয়ন্ত বিশ্বাস আদেশ দেন যে ঐ অনুষ্ঠান যাতে সুষ্ঠভাবে হতে পারে সেটা কর্পোরেশন, যুগ্ম কমিশনার (সদর), মুচিপাড়া থানা সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষদের নিশ্চিত করতে হবে। এরপর আর শামিম বাবুর কিছু করার থাকেনা, অনুষ্ঠান হতে দিতেই হয় কিন্তু অনুষ্ঠান শেষ হতেই তপন'দাকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এরপরেও কেউ যদি জাভেদ শামিমকে "পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির" বা নিরপেক্ষ অফিসার বলে সার্টিফিকেট দেয় তাহলে বলতেই হয় যে, "আস্তে কন কত্তা, ঘুড়ায় হাসবো"। জাভেদ শামিম হোক বা হুমায়ুন কবীর বা নজরুল ইসলাম - এদের একমাত্র আনুগত্য তাদের কৌমের স্বার্থরক্ষার প্রতি আর সেই কাজে তারা প্রশাসনকে বিভিন্নভাবে কাজে লাগায় আর আমরা বোকার মত, বিশদে না জেনেই, মিডিয়ার দেয়া সার্টিফিকেটের উপর বিশ্বাস করে ফেলি। ভুলে যাই যে দিনের শেষে মিডিয়াও একটা ধান্ধা যার লক্ষ্য মুনাফা লোটা।

Sunday, February 21, 2021

নির্বাচনী ইস্তেহার

যে দলের নির্বাচনী ইস্তেহারে


১. পশ্চিমবঙ্গের ভূমিসন্তানদের শিক্ষা ও জীবিকার ক্ষেত্রে সিংহভাগ সংরক্ষণ ঘোষণার নির্দিষ্ট সময়সীমা,

২. রাজ্য জুড়ে শিল্প স্থাপনের বিভিন্ন ক্লাস্টার তৈরী করা। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, জলপাইগুড়ির মত এলাকায় শিল্প স্থাপনে শিল্পপতিদের বাড়তি সুবিধা,

৩. বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সীমানা দিয়ে রাজ্যে যাতে অনুপ্রবেশ না ঘটে সে বিষয়ে কেন্দ্রের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা,

৪. বাংলা ভাষাকে ক্লাসিকাল ভাষার মর্যাদা দেয়ার জন্যে সরকারিভাবে উদ্যোগ নেয়া,

৫. রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে গজিয়ে ওঠা অসংখ্য অনুমোদন বিহীন মাদ্রাসাগুলি অবিলম্বে বন্ধ করা,

৬. সরকারি ক্ষেত্রে শূন্য পদগুলি অবিলম্বে পূরণ করা,

৭. MSME এবং ভ্রমণ শিল্পে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা,

৮. OBC-A এর মত বৈষম্যমূলক আইন অবিলম্বে বাতিল করে আর্থিক সঙ্গতি অনুযায়ী সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা,

৯. রাজ্যের পুলিশ ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর জন্যে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা,

১০. তথ্যের অধিকার আইন কঠোরভাবে চালু করা, ইত্যাদি বিষয়ের প্রতিশ্রুতি থাকবে তাদের প্রতিই আমার সহানুভূতি থাকবে।

Saturday, February 20, 2021

প্রত্যাবর্তন

যেকোন সংগঠনের ঋদ্ধ হওয়ার মূলমন্ত্র হল মানব সম্পদ। দলীয় তত্ত্ব যত ভালই হোকনা কেন, কর্মীরা যদি সেটা বুঝতে, বুঝাতে ও প্রয়োগ করতে সক্ষম না হয় তাহলে সংগঠনের দীর্ঘকালীন শ্রীবৃদ্ধি ঘটা সম্ভব নয়। বামপন্থীরা এই সত্যটা বুঝেছে বলেই তারা দলীয় কর্মীদের মেধা বৃদ্ধির প্রতি যত্নশীল এবং এই কারণেই, ক্ষমতায় না থাকলেও, প্রশাসনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে, বামপন্থীদের প্রভাব আজও অমলিন। উল্টোদিকে, দক্ষিণপন্থীরা নিজেদের কর্মীদের মেধার উন্মেষ ঘটানোর বদলে সংখ্যার উপর বেশী নির্ভরশীল। শিকড় মজবুত না হলে যে ফলন্ত গাছও উপড়ে যেতে পারে, এই সত্যটা তারা বুঝতেই চায়না। ফলতঃ, দক্ষিনপন্থীরা হয়ে ওঠে বিশেষ নেতা বা নেত্রীর মুখ নির্ভর যেখানে বামপন্থীদের শক্তি হল টিম-গেম।

একুশের নির্বাচনে বিজেপির ক্ষমতায় আসা নিয়ে আমার কোন দ্বিধা নেই কিন্তু চিন্তা হচ্ছে ছাব্বিশ নিয়ে। বিজেপির থেকে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের যে বিরাট প্রত্যাশা রয়েছে সেগুলোর সবক'টার সমাধান চটজলদি সম্ভব নয়। কিন্তু ক্ষমতায় আসার বছর দুয়েক পর থেকেই বাড়তে থাকবে প্রত্যাশা পূরণের চাপ। ক্ষমতা থেকে সরে গেলে তৃণমূল দলটার (যা বাস্তবে সিপিএম কে ক্ষমতাচ্যুত করার একটা আন্দোলন) অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়ে যাবে আর প্রধান বিরোধী হিসাবে, মুসলমানদের সমর্থন নিয়ে, উঠে আসবে কম্যুনিস্টরা। লড়াই সরাসরি লেফট বনাম রাইট। এমতাবস্থায়, বিজেপি যদি ভাল নেতা আর দক্ষ কর্মীদল তৈরী করতে না পারে তাহলে প্রোপাগাণ্ডার রাজনীতিতে ডক্টরেট করা কম্যুনিস্টরা সরকারকে নাস্তানাবুদ করে ছাড়বে।

তাই ছাব্বিশে প্রত্যাবর্তন সুনিশ্চিত করার চিন্তা বিজেপিকে এখন থেকেই করতে হবে। সেই অনুযায়ী ঘুটি সাজাতে হলে বিজেপিকে সরকার আর দল, দু'টোকেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে। সরকার বানাতে গিয়ে যদি সংগঠন অবহেলিত হয় তাহলে ছাব্বিশে খেলা কঠিন হয়ে যাবে। মনে রাখতে হবে যে দলই সরকারকে ক্ষমতাসীন করেছে আর নির্বাচনে দলই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। দু'টোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা তাই একান্ত প্রয়োজন।

Friday, February 19, 2021

তৌবা তৌবা

আজ শেখ ইয়াসিন, বাবু মাস্টার প্রমুখরা বিজেপিতে যোগদান করাতে যারা তৌবা তৌবা করছেন তারা হয় রাজ্যের জনসংখ্যার গঠন সম্পর্কে অজ্ঞ অথবা তাদের এই কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জনের পিছনে অন্য কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যার ৩০% 'সংখ্যালঘু'দের হওয়ার জন্যে মোদী বা শাহ দায়ী নয়, দায়ী এখানকার হিন্দুরা যারা এতদিন ধরে চোখ বুজে ছিল। বানতলা, ধানতলা, দেগঙ্গা, কালিয়াচক, ধুলাগড়ি, বাদুড়িয়া ইত্যাদি ঘটার পরেও নিজেদের চোখে সেকুলারিজমের পট্টি বেঁধে, নিজেদের সম্প্রদায়ের স্বার্থের উপরে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থকে যায়গা দিয়েছিল। তাই আজ বিজেপি যখন সেই সামাজিক গঠনকে ভিত্তি করে নিজেদের ঘুটি সাজাচ্ছে, তখন, সবাইকে ছেড়ে শুধু তাকে দোষারোপ করা মানে ভাবের ঘোরে চুরি করা। দেশের সংবিধান অনুসারে বিজেপি কখনই নিজেকে হিন্দুত্ববাদী দল বলে দাবী করেনা কিন্তু এই কথা অস্বীকার কোন যায়গা আছে কি যে বর্তমান পরিস্থিতিতে, হিন্দুদের স্বার্থরক্ষায় সবথেকে সরব দলের নাম বিজেপি? তাই বাবু মাস্টার বা শেখ ইয়াসিনদের দলভুক্তির জন্যে বিজেপির দিকে যখন একটা আঙুল তুলবেন, মনে রাখবেন, তিনটে আঙুল কিন্তু আপনার দিকেও থাকবে। আপনার নিস্পৃহতার কারণেই আজ এমন অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে যেগুলো আপনি সচেতন থাকলে নেয়ার প্রয়োজনই হতনা। 

এই প্রসঙ্গে, ২০১৫ সালের একটা লেখার লিঙ্ক নীচে দিলাম। পড়ুন, আর পরিস্থিতি ভেবে দেখুন।

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=10152857401834865&id=620989864

Thursday, February 18, 2021

নতুন ভারত

কাশ্মীর উপত্যকায় ৬ মাস 4G ইন্টারনেট পরিসেবা না থাকা নিয়ে সবাই সোচ্চার হলেও ৩১ বছর ধরে বন্ধ থাকা শীতলনাথের মন্দির নিয়ে কেউ কখনও সরব হয়নি। এর আগে, একইভাবে, বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বুঢ়া অমরনাথ যাত্রা। স্থানীয়দের দ্বারা নিয়মিত আক্রমণের শিকার হয়েছিল বৈষ্ণদেবী এবং অমরনাথ তীর্থযাত্রীরা। উদ্দেশ্য একটাই ছিল, কাশ্মীরে যেন হিন্দুদের প্রবেশ না ঘটে।

তপন'দা বজরং দলের উত্তর ভারতের প্রভারী থাকাকালীন ফের শুরু করেন বুঢ়া অমরনাথ যাত্রা। দেশের বিভিন্ন অংশ থেকে যুবক-যুবতীরা সেই যাত্রায় অংশগ্রহণ করে। ভারতীয় সেনারাও সোৎসাহে এগিয়ে আসেন সেই যাত্রাকে নিরাপত্তা দিতে, সফল করতে। এই বিষয়ে তপন'দা নিজেই বিশদে লিখেছেন তাই সেটার পুনরাবৃত্তি করছিনা তবে শেষ পর্যন্ত  জেহাদি ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে, কাশ্মীরে পুনরায় পূজা শুরু হয় বুঢ়া অমরনাথের।

৩১ বছর শীতলনাথের মন্দির খোলা এরকমই আরেকটা মাইলস্টোন যা প্রমাণ করে যে হিন্দুরা যদি একযোগে কিছু পেতে চায়, তাহলে পৃথিবীর কোন শক্তি সেটা থেকে তাদের বঞ্চিত করতে পারেনা। হিন্দুদের সদিচ্ছার কাছে রাজশক্তিও নত হতে বাধ্য হয়। খুব পরিকল্পিত ভাবে হিন্দুদের এই শক্তির কথা তাদের এতদিন মেকি সেকুলারিজমের গল্প শুনিয়ে ভুলিয়ে রাখা হয়েছিল কিন্তু আজকের নতুন ভারত আর সেই ফাঁদে পা দেবেনা। নিজেদের অধিকার সম্পর্কে আমরা সম্পূর্ণ সচেতন।


https://m.sangbadpratidin.in/article/srinagar-temple-shut-due-to-terrorism-for-31-years-reopens/522984

Sunday, February 14, 2021

রাজানুগ্রাহী পান্ডিত্য

মা দুর্গার বাবার নাম যদি হিমালয় বা দক্ষ হয় তাহলে সেই যুক্তিতে শ্রীকৃষ্ণের বাবার নাম দশরথ রামের ছেলের নাম প্রহ্লাদ, তাই না? আসলে পৌরাণিক বিষয়ে কথা উঠলেই বাজারে এসে যায় সেই ধামাধরা কয়েকজনের নাম আর পত্রিকাগুলি ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ঐ কয়েকজনেরই কথা ছাপে যেটা তাদের সম্পাদকীয় নীতির সমার্থক হয়।

এই কারণেই নৃসিংহপ্রসাদের মত রাজানুগ্রহ লোভী পন্ডিতরা নিদান হাঁকতেই পারেন যে "প্রশাসক হিসেবেও রাম খুব একটা ভাল ছিলেন না"। তিনি বলেন, “রামায়ণের উত্তরখণ্ডে যে বর্ণনা রয়েছে তাতে প্রশাসক হিসেবে রামের তেমন কোনও অবদানেরই উল্লেখ নেই। প্রজারঞ্জনের জন্য তিনি স্ত্রী ত্যাগ করেছেন। সেটা ভাল করেননি। তিনি সেটা ব্রাহ্মণ্যবাদের চাপে করেছেন।” স্ত্রীর চেয়ে রাষ্ট্রকে কি তিনি প্রাধান্য দেননি? 

এই হচ্ছে আমাদের 'পন্ডিতদের' অবস্থা। একজন রাজা, প্রজারঞ্জনের জন্যে, আপন স্ত্রীকে ত্যাগ করলেও, নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থকে উপেক্ষা করলেও সেটা "খুব একটা ভাল প্রশাসক" হওয়ার পরিচায়ক নয়। আর সেটা প্রমাণের তথ্য নাকি উত্তরাকাণ্ড যেটা আদতে মূল রামায়ণের অংশই নয়। আসলে শাসক দলের কৃপা নিতে নিতে এদের গায়ের চামড়া এতটাই মোটা আর জিভ এতটাই অসাড় হয়ে গেছে যে এখন এরা ঘোমটা ছাড়াই খ্যামটা নাচতে পারে।

এই প্রসঙ্গে অনেক পুরনো একটা ঘটনার কথা মনে পড়ে গেল। রামমন্দির আন্দোলন তখন তুঙ্গে। কলকাতার কলামন্দিরে, দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকা একটা আলোচনাসভার আয়োজন করেছিল যেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন এন.রাম, এম.জে.আকবর, অটল বিহারি বাজপেয়ী সহ বিভিন্ন বক্তা। তপন'দার সাথে আমিও সভাতে গিয়েছি শ্রোতা হিসাবে। বিভিন্ন বক্তা রামকে তীব্র আক্রমণ করে, রামমন্দির আন্দোলনের জন্যে বিজেপিকে সমালোচনা করলেন। তাদের বক্তব্য যে ব্যক্তি নিজের স্ত্রীকে ত্যাগ করতে পারে সে কখনও আদর্শ রাজা হতে পারেনা না।

ঘন্টাখানেক ধরে বিভিন্ন বক্তার বক্তব্য শোনার পর সভা যখন মোটামুটিভাবে রামকে আদর্শ রাজা হিসাবে মানতে নারাজ তখন বক্তব্য রাখতে উঠলেন বাজপেয়ী। আর মাইকে এসে, নিজের স্বভাবসিদ্ধ, অননুকরণীয় ভঙ্গিমায়, দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বললেন, "হাঁ, পতি রাম নে ভুল কিয়া থা, রাজা রাম নে নেহী"। গোটা হল মন্ত্রমুগ্ধের মত নিশ্চুপ। এরপর উনি ব্যাখ্যা করে বললেন যে মানুষের বিভিন্ন রুপে বিভিন্ন দায়িত্ব থাকে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বোঝালেন যে, "মনে করুন আপনার বাবার সত্তর বছর বয়স, আর ডাক্তার তাঁকে ধুমপান করতে বারণ করেছেন। তবু আপনি তাঁকে একদিন লুকিয়ে ধুমপান করতে ধরে ফেললেন। উল্টো দিকে, আপনার ছেলের ১৫ বছর বয়স, আপনি তাকেও লুকিয়ে ধুমপান করতে দেখে ফেললেন। এমতাবস্থায়, ছেলেকে আপনি হয়তো একটা চড় মারবেন, কিন্তু বাবাকে চড় মারবেন কি? কিন্তু একই অন্যায় তো দু'জনেই করছে। তবু আপনার আচরণ আলাদা হবে কারণ ছেলের ক্ষেত্রে আপনি পালন করবেন পিতৃধর্ম আর বাবার ক্ষেত্রে আপনাকে পালন করতে হবে পুত্রধর্ম।" এইভাবে, প্রত্যেকটা সম্পর্কেরই আলাদা আলাদা মর্যাদা থাকে আর শ্রীরাম সেটা যথাযথ পালন করেছিলেন বলেই তাঁকে মর্যাদা পুরুষোত্তম বলা হয়"।

তাই আজ যখন নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ীর মত ব্যক্তিরা রামকে "ব্রাহ্মণ্যবাদের চাপের" শিকার বলে বর্ণনা করেন তখন এদের মেধার প্রতি করুণা হয়। আসলে পান্ডিত্য যখন শাসকের অনুগ্রহের মুখাপেক্ষী হয়ে যায়, তখন এই পরিণতিই স্বাভাবিক।

https://www.anandabazar.com/west-bengal/several-eminent-scholars-criticise-the-comment-on-devi-durga-and-ramchandra-by-dilip-ghosh-dgtl/cid/1266393?utm_source=abp_newsletter&utm_medium=email&utm_campaign=DailyMorningBriefing&tqid=1_C6YyMjD0AB4IOnNFDPQpYnLKdGR8DiC4n1V0Zy

Wednesday, February 10, 2021

সাম্য

১৪ বছরে বিয়ে আর ১৫ বছর থেকে সন্তান উৎপাদন আর বাকিদের ক্ষেত্রে আইনি সীমা শুরুই হচ্ছে ১৮ থেকে, আর বাস্তবে, কম করে ২৫-২৬ বছরের আগে হিন্দু মেয়েরা আজকাল বিয়ে করেনা। তারমানে হিন্দু মেয়েরা যতদিনে তাদের প্রথম সন্তান নেবে, তার কয়েক বছরের মধ্যেই মুসলমানদের দ্বিতীয় প্রজন্ম সন্তান উৎপাদনের উপযোগী হয়ে যাবে। অর্থাৎ হিন্দুদের দুটো প্রজন্মের মধ্যেই মুসলমানদের চারটে প্রজন্মের বীজ বোনা হয়ে যাবে। কোন রকম সংঘাতের প্রয়োজনই হবেনা, শুধুমাত্র জনসংখ্যার চাপে আপনাকে পিষে ফেলা হবে। এরপরেও আপনি নিশ্চিন্ত থাকবেন যে আপনার ও আপনার পরবর্তী প্রজন্ম নিরাপদ?

 https://www.anandabazar.com/india/muslim-girls-may-marry-anybody-on-attaining-puberty-says-punjab-and-haryana-high-court-dgtl/cid/1265865

Tuesday, February 9, 2021

তপন'দার শিক্ষা

১৯৯৪ সালে, কাশিমবাজারে, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের প্রথম বর্ষ বর্গ বা 1st Year OTC করার পর, ১৯৯৭ সালে তাঁতিবেড়িয়াতে দ্বিতীয় বর্ষের বর্গ করতে গেছি। সৌভাগ্যক্রমে, প্রথম বর্ষের মত, দ্বিতীয় বর্ষেও বৌদ্ধিক বিভাগের প্রধান হিসাবে পেয়েছিলাম তপন'দাকে। যদিও ঐ সময় দাদার বাবা মারা যান এবং বাবার পারলৌকিক ক্রিয়ার জন্যে বর্গ ছেড়ে কয়েকদিন আগেই চলে যায়। ফলে বর্গের শেষ কয়েকটা দিন তপন'দাকে পাইনি।

যাইহোক, বর্গে যে ১৬-১৭ দিন তপন'দা ছিল, দু'বেলার খাওয়াদাওয়া একসাথেই হতো। লম্বা বারান্দায়, দুই সারিতে বসে, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা একইসাথে খাবার খেতেন। আমরা সচরাচর দ্বিতীয় পঙতি বা ব্যাচে বসতাম আর খাওয়াদাওয়ার সাথে চুটিয়ে হতো বিভিন্ন গল্প। বর্গের খাবারদাবার কেমন হয় সেটা যে বর্গে না গেছে তার পক্ষে বোঝা কঠিন। ভাত আর ডাল কমন ছিল, সাথে কোনদিন ঘ্যাট, কোনদিন আলুপটলের তরকারি, কোনদিন আলুর দম, কোনদিন আলু আর ফুলকপি - মানে আলুটা কমন। রোজ রোজ আলু খেতে খেতে আমরা যখন বিরক্ত আর তপন'দাকে সেই কথা বললাম, সে আমাদের অভিযোগ তুড়ি দিয়ে উড়িয়ে দিয়ে বললো যে "তোদের কপাল ভাল তাই আলু পাচ্ছিস, আমাদের সময় অধিকাংশ দিনই হতো কুমড়োর তরকারি"। রোজ কুমড়ো থেকে আলু শতগুণে ভাল, তাই আমরা ঐ নিয়ে আর কোন অভিযোগ জানাতে সাহস পাইনি।

২১ দিনের বর্গে, তিন-চারদিন আমাদের পাতে মিষ্টি পড়েছিল। সাধারণত কোন স্বচ্ছল অতিথি বর্গ দেখতে আসলে, তিনি শিক্ষার্থীদের জন্যে মিষ্টি নিয়ে যেতেন। এরকমই একদিন রাতে খেতে বসেছি, সেদিন মিষ্টি ছিল। শেষ পাতে রসগোল্লা পরিবেশন হওয়া মাত্রই আমি বুভুক্ষুর মত সেটা একবারে মুখে পুরে দিয়েছি। যদিও বাড়িতেও সেটাই করি। আমার খাওয়া দেখে তপন'দা জানতে চাইলো যে একবারে মিষ্টি মুখে পোরার কারণ কি। আমি খুব গুরুগম্ভীরভাবে বুঝালাম যে একবারে মুখে পুরলে সবক'টা স্বাদকোরক মিষ্টিটার স্বাদ একবারে নিতে পারবে। ফলে প্রকৃত স্বাদটা উপভোগ করতে পারবো। তপন'দা কোন উত্তর না দিয়ে, নিজের ভাগের রসগোল্লাটা অল্প অল্প করে খুঁটে খুঁটে খেতে লাগলো এবং প্রায় পাঁচ-সাত মিনিট ধরে একটা রসগোল্লা খেল। এবার আমার জানতে চাওয়ার পালা ছিল। আমি বললাম যে তুমিও তো মিষ্টি খেতে ভালবাসো, তাহলে একটা রসগোল্লা খেতে এতক্ষণ সময় লাগালে কেন? উত্তরে তপন'দা বললেন, জিনিস যতই প্রিয় হোকনা কেন, পরিমাণ যেখানে সীমিত, সেখানে প্রাপ্ত জিনিসটা বেশীক্ষণ ধরে খেলে, পুনরায় সেটা খাবার আসক্তিটা চলে যায়। একবারে মুখে পুরে খেয়ে নিলে, পরক্ষণেই আরেকটা খেতে ইচ্ছা হবে।

হ্যাঁ, এই ছিল তপন'দা। ছোট ছোট ঘটনা বা গল্পের মাধ্যমে যে কতকিছু শিখিয়ে গেছে, সেগুলির মূল্য এখন বুঝতে পারছি।

Monday, February 8, 2021

দীর্ঘসূত্রিতা

ইংরেজিতে একটা কথা আছে, justice delayed is justice denied মানে ন্যায় পেতে দেরী হওয়া, ন্যায় থেকে বঞ্চিত হওয়ার সমতূল্য। গত ৫ই নভেম্বর, আত্মদীপ-এর পক্ষ থেকে, বৈষম্যমূলক OBC-A আইনের বিরুদ্ধে করা মামলার শুনানির সময় বিচারপতি সঞ্জীব ব্যানার্জীর নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট নির্দেশ দেন যে সরকারকে দুই সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিতে হবে আর সেই হলফনামার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা যদি পুনরায় যদি কোন হলফনামা নিতে চাই, সেই জন্যে আমাদের এক সপ্তাহ সময় দিয়ে, মামলার পরবর্তী শুনানির দিন হিসাবে ১লা ডিসেম্বর ধার্য্য করেন।

কিন্তু অত্যন্ত আশ্চর্যজনকভাবে, কোর্টের দ্বারা নির্ধারণ করা দিন নির্দিষ্ট থাকলেও, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাস পার হয়ে যায় কিন্তু মামলাটি কোর্টের তালিকাভুক্ত হয়না। জনস্বার্থের সাথে সম্পর্কিত এই মামলা কাদের প্রভাবে পিছিয়ে যেতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। ক্রমাগত দেরী দেখে, রাজ্যকে নোটিশ পাঠিয়ে, এই মামলার দ্রুত তালিকাভূক্তির জন্যে আজ আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় এবং আগামী ২৫শে মার্চ, এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আদালত নির্দেশ দেন।

আগেই বলেছি যে বিচার পেতে দেরী হওয়া মানে বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়া। এই রকম একটা গুরুত্বপূর্ণ মামলা, যেটার সিদ্ধান্ত প্রজন্মের পর প্রজন্মকে প্রভাবিত করবে, সেটার ক্ষেত্রে এত দেরী মেনে নেয়া কঠিন আমরা আমাদের লিগ্যাল টিমের সঙ্গে বিভিন্ন আইনি দিক নিয়ে আলোচনা করছি যার মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার রাস্তাও খোলা আছে।

Thursday, February 4, 2021

পর্দাপ্রথা

কোন জাতির উত্থান-পতন, উন্নতি-অবনতি সূচিত হয় সে সমাজে নারীদের কি দৃষ্টিতে দেখা হয় তার উপরে। যে সমাজে নারীর সম্মান নেই সে সমাজ অর্থকৌলীন্যে যতই বড় হোক না কেন, অন্তিমে তার পতন অনিবার্য। দ্রৌপদীর অপমানের পরিণতি হিসাবে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে বিশাল কৌরব বংশের ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়া এর উজ্বল দৃষ্টান্ত। 


ইসলামে নারীর অবস্থান শুধু ভোগ্যপন্য হিসাবে। নারীদের স্বকীয়তা ও স্বাতন্ত্রতার কোন স্থান সেখানে নেই। তাই নিজের ভোগের জিনিসকে অন্যের থেকে লুকিয়ে রাখার জন্যেই বোরখা ও হিজাবের প্রচলন। তার সৌন্দর্য্য যাতে অন্য কারুর দৃষ্টি আকর্ষন না করে তাই তাকে পর্দানশীন করার চেষ্টা।

হিন্দুসমাজে পর্দাপ্রথার প্রচলন হয় মুসলিম আক্রমনের পরে। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে ভারতের যেসব অঞ্চলগুলি মুসলিমদের অধীনে দীর্ঘদিন ছিল, সেখানেই এই পর্দাপ্রথার প্রচলন ঘটেছে। উত্তর ও পূর্বভারতেই তা প্রধানতঃ সীমাবদ্ধ। স্থানভেদে তার রুপ আলাদা – পাঞ্জাবে দোপাট্টা তো বাংলায় ঘোমটা। 

“এ দেশে মেয়েদের পর্দা নেই, কোনদিনও ছিলনা। উত্তর ভারতের এই ম্লেচ্ছ বর্বরতা মারাঠা দেশ কখনও স্বীকার করে নেয়নি।“ – না, এই কথাগুলি বালাসাহেব ঠাকরে বা কোন তথাকথিত উগ্রহিন্দুনেতার নয়। এ দাবী বাঙলা সাহিত্যের অন্যতম প্রাণপুরুষ শরদিন্দু বন্দোপাধ্যায়ের। তিনি তাঁর মধুমালতী কাহিনীতে বামন রাওকে দিয়ে এই সত্য প্রকাশ করেছেন। এতে যদি কেউ শরদিন্দুবাবুকে উগ্রবাদী ভাবতে চান তো ভাবতেই পারেন, কিন্তু এতে সত্য বদলাবেনা।

ট্যুইট যুদ্ধ

আপনার যদি আমেরিকার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে, গাজাতে প্যালেস্টাইনের হামলা নিয়ে, শার্লি এবদোর কার্টুন নিয়ে বক্তব্য রাখার অধিকার থাকে তাহলে রিহানারও কৃষক আন্দোলন নিয়ে কথা বলার অধিকার আছে। রিহানা কোনও বিদেশী রাষ্ট্রের রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক নেতা নন যে প্রোটোকল মানার বাধ্যবাধকতা থাকবে। তিনি একজন সেলেব্রিটি আর তাই পেশাগত নিয়ম মেনেই, জনপ্রিয়তা লাভের জন্যে তাঁর কৃষক আন্দোলন নিয়ে ট্যুইট। সহজ ব্যাপারটা বোঝা দরকার যে না তাঁর কৃষক আন্দোলন নিয়ে রাতের ঘুম নষ্ট হচ্ছে আর না তাঁর ট্যুইটে ভারতের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। সেলেব্রিটিরা হেডলাইনে থাকতে চান, আর সেটার জন্যেই এই ট্যুইট।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে রিহানার ট্যুইটের প্রেক্ষিতে ভারতের যেসব সেলেব্রিটিরা এখন ট্যুইট করে দেশের একতা ও অখন্ডতা নিয়ে তাঁদের বক্তব্য প্রকাশ করছেন, তাঁরা এতদিন ধরে কোথায় ছিলেন? পালঘরে সাধুদের নির্মম হত্যা বা CAA নিয়ে দেশজুড়ে আগুন জ্বলার সময় তাঁরা কোথায় ছিলেন? চীনের সামরিক আগ্রাসন এবং সেটার প্রেক্ষিতে ভারতের বীর সৈনিকদের বলিদান নিয়ে তাঁরা নীরব কেন? তাঁরা কি এতদিন রিহানার ট্যুইটের অপেক্ষায় পাঁজি দেখছিলেন? সেদিন যদি তাঁরা এইভাবে, দলবদ্ধ হয়ে, ট্যুইট করতেন, তাহলে, কে জানে, আজ হয়তো পরিস্থিতি অন্যরকম হতো।

আজ তাদের দলবদ্ধভাবে এই ট্যুইট যুদ্ধ প্রমাণ করছে যে তাদের বক্তব্য মোটেই স্বতঃস্ফূর্ত নয়, বরং স্পনসর্ড। রিহানার মত তারাও ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাইছেন আর তাদের সেই খ্যাতির লোভকে কাজে লাগাচ্ছে একটা চক্র। মহামারীর মধ্যে আনা এই কৃষি-বিল কৃষকদের জন্যে ভাল না মন্দ সেটা তর্কসাপেক্ষ কিন্তু কেউ আমার মনের মত কথা না বললেই তাকে দেশদ্রোহী বলে দেগে দেয়ার এই প্রবণতা মোটেই সুস্থ মানসিকতার পরিচায়ক নয়। দিনের শেষে ফরাসি দার্শনিক ভলতেয়ারের অমর কথাটা মাথায় রাখবেন, "I may not approve what you say, but I will defend to the death your right to say it" অর্থাৎ "আমি আপনার বক্তব্যের সাথে সহমত না হতে পারি কিন্তু আপনার বক্তব্য প্রকাশের স্বাধীনতা কে আমি প্রাণপণে রক্ষা করবো।

Wednesday, February 3, 2021

ঘরপোড়া

গত ২৬শে জানুয়ারী, কৃষক আন্দোলনের নামে, যেভাবে দিল্লীতে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরী করা হয়েছিল, জাতীয় পতাকার অবমাননা করা হয়েছিল, এরপরে কোনও গণতান্ত্রিক সরকার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে দিতে বাধা দেবে, এটাই স্বাভাবিক। দেশটা যদি ভারত না হয়ে চীন হতো, তাহলে হয়তো গোটা পৃথিবী আরেকটা তিয়েন-আন-মেন স্কোয়ারের সাক্ষী হয়ে যেত।

দিল্লীর বিভিন্ন প্রবেশ পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার জন্যে দিদি'র যেসব ভাইয়েরা আজ মোদীর চোদ্দ পুরুষ উদ্ধার করছে তাদের মনে করিয়ে দিতে চাই যে ২০১৫ সালে, মগরাহাটের টুকটুকি মন্ডল অপহৃত হওয়ার দুই মাসের বেশী সময় পরেও, মমতা ব্যানার্জী প্রশাসন যখন তাকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়েছিল আর সেটার বিরুদ্ধে আমরা কয়েকজন, ১০ই জুলাই হাজরা মোড়ে একটা প্রতিবাদসভার ডাক দিয়েছিলাম, সেই সভাকে প্রতিহত করার জন্যে গোটা এলাকাকে দূর্গে পরিণত করেছিল এই মমতা ব্যানার্জীর প্রশাসন। সভা শুরু হওয়ার আগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল আন্দোলনকারীদের। আজ দিদির যেসব ভাইরা গণতন্ত্রের কথা বলছেন, তারা সেদিন কোথায় ছিলেন জানতে মন চায়।

কৃষকদের আন্দোলন ও তাদের দাবীদাওয়ার প্রতি আমিও সম্পূর্ণ সহানুভূতিশীল। গণতান্ত্রিক উপায়ে প্রতিবাদ করার অধিকার তাদের অবশ্যই রয়েছে। কিন্তু কৃষক আন্দোলনের বাহানাতে, দেশের সাধারণতন্ত্র দিবসের দিন, খোদ দেশের রাজধানীতে যে নষ্টামো হয়েছে, সেটা কোনমতেই সমর্থনযোগ্য নয়। তাই ঘরপোড়া প্রশাসন যদি সিঁদুরে মেঘ দেখে ভয় পায়, তাহলে আমি সেটাতে কোন অন্যায় দেখিনা।