Saturday, February 20, 2021

প্রত্যাবর্তন

যেকোন সংগঠনের ঋদ্ধ হওয়ার মূলমন্ত্র হল মানব সম্পদ। দলীয় তত্ত্ব যত ভালই হোকনা কেন, কর্মীরা যদি সেটা বুঝতে, বুঝাতে ও প্রয়োগ করতে সক্ষম না হয় তাহলে সংগঠনের দীর্ঘকালীন শ্রীবৃদ্ধি ঘটা সম্ভব নয়। বামপন্থীরা এই সত্যটা বুঝেছে বলেই তারা দলীয় কর্মীদের মেধা বৃদ্ধির প্রতি যত্নশীল এবং এই কারণেই, ক্ষমতায় না থাকলেও, প্রশাসনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে, বামপন্থীদের প্রভাব আজও অমলিন। উল্টোদিকে, দক্ষিণপন্থীরা নিজেদের কর্মীদের মেধার উন্মেষ ঘটানোর বদলে সংখ্যার উপর বেশী নির্ভরশীল। শিকড় মজবুত না হলে যে ফলন্ত গাছও উপড়ে যেতে পারে, এই সত্যটা তারা বুঝতেই চায়না। ফলতঃ, দক্ষিনপন্থীরা হয়ে ওঠে বিশেষ নেতা বা নেত্রীর মুখ নির্ভর যেখানে বামপন্থীদের শক্তি হল টিম-গেম।

একুশের নির্বাচনে বিজেপির ক্ষমতায় আসা নিয়ে আমার কোন দ্বিধা নেই কিন্তু চিন্তা হচ্ছে ছাব্বিশ নিয়ে। বিজেপির থেকে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের যে বিরাট প্রত্যাশা রয়েছে সেগুলোর সবক'টার সমাধান চটজলদি সম্ভব নয়। কিন্তু ক্ষমতায় আসার বছর দুয়েক পর থেকেই বাড়তে থাকবে প্রত্যাশা পূরণের চাপ। ক্ষমতা থেকে সরে গেলে তৃণমূল দলটার (যা বাস্তবে সিপিএম কে ক্ষমতাচ্যুত করার একটা আন্দোলন) অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়ে যাবে আর প্রধান বিরোধী হিসাবে, মুসলমানদের সমর্থন নিয়ে, উঠে আসবে কম্যুনিস্টরা। লড়াই সরাসরি লেফট বনাম রাইট। এমতাবস্থায়, বিজেপি যদি ভাল নেতা আর দক্ষ কর্মীদল তৈরী করতে না পারে তাহলে প্রোপাগাণ্ডার রাজনীতিতে ডক্টরেট করা কম্যুনিস্টরা সরকারকে নাস্তানাবুদ করে ছাড়বে।

তাই ছাব্বিশে প্রত্যাবর্তন সুনিশ্চিত করার চিন্তা বিজেপিকে এখন থেকেই করতে হবে। সেই অনুযায়ী ঘুটি সাজাতে হলে বিজেপিকে সরকার আর দল, দু'টোকেই সমান গুরুত্ব দিতে হবে। সরকার বানাতে গিয়ে যদি সংগঠন অবহেলিত হয় তাহলে ছাব্বিশে খেলা কঠিন হয়ে যাবে। মনে রাখতে হবে যে দলই সরকারকে ক্ষমতাসীন করেছে আর নির্বাচনে দলই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। দু'টোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা তাই একান্ত প্রয়োজন।

No comments:

Post a Comment