Tuesday, April 7, 2020

ওষুধের কুটনীতি

গতকাল রাতেই BBC-র একটা রিপোর্টকে উদ্ধৃত করে ট্যুইট করেছিলাম যে করোনা মোকাবিলায় ভারত 'গেম-চেঞ্জার' হওয়ার ক্ষমতা রাখে।
তবে সত্যি কথা বলতে গেলে, গতকাল রাতের কথা যে এত তাড়াতাড়ি ফলবে সেটা স্বপ্নেও ভাবিনি।

আজ যারা আমেরিকাকে হাইড্রোক্লোরোকুইন দেয়া নিয়ে মোদীর মুন্ডুপাত করছেন, আমেরিকার কাছে ভারতকে বেচে দেয়ার স্লোগান তুলছেন তাদেরকে সবিনয়ে একটা জিনিস বলতে চাই যে 'বেওসা' জিনিসটা নরেন্দ্র মোদী আমার-আপনার থেকে অনেক ভাল বোঝেন৷ আর তাই এরকম একটা পরিস্থিতি হতে পারে ভেবেই গত শনিবার এই ওষুধের রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

এখন প্রশ্ন হল যে এই হাইড্রোক্লোরোকুইন জিনিসটা কি? সহজ ভাষায় বলতে গেলে, এটা ম্যালেরিয়া রোধক প্রাচীন ও জনপ্রিয় ওষুধ, ক্লোরোকুইনের মাসতুতো ভাই। আর ভারতে এই ওষুধের এতটাই প্রাচুর্য আছে যে আমরা নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়েও বাইরে পাঠাতে পারি। আজ্ঞে, এটা আমি নয়, ইন্ডিয়ান ড্রাগ ম্যানুফ্যাকচারস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে অশোক কুমার মাদান বলেছেন।

তাহলে প্রশ্ন ওঠে যে মোদী তাহলে, গত শনিবার, খামোখা এটাকে নিষিদ্ধ করতে গেলেন কেন? আমার ধারণা, কারণ ট্রাম্পের হয়ে কিছুটা খেলে দেয়া আর তার বদলে ভারতের ফয়দা কামিয়ে নেয়া। একটু ভেঙে বলি, আমেরিকাতে এখন এই ওষুধকে, কমপ্যাশনেট গ্রাউন্ডে, করোনা আক্রান্তদের উপর পরীক্ষা করা হচ্ছে। আমেরিকার চিকিৎসকদের একাংশ এর বিরোধিতা করলেও, এই পরীক্ষা চলছে। এমতাবস্থায়, রপ্তানি বন্ধ করার পর, ট্রাম্প যদি সেটা তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গীতে হুমকি দিয়ে চালু করাতে পারেন, তাহলে আগামী নির্বাচনে ট্রাম্পের লাভ। আর ভারতের লাভ হল যে নিজের দেশে সহজলভ্য ওষুধ আর নতুন করে করোনার জন্যে পরীক্ষা করতে হলনা, উল্টে কিছু বৈদেশিক মূদ্রাও আসলো। আর হ্যাঁ, বর্তমান এই চুক্তির মধ্যে যদি ভবিষ্যতে, ট্রাম্প পুনরায় নির্বাচিত হলে, ভারতীয়দের ভিসার বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত থাকে, তাহলেও আমি অবাক হবনা।

https://www.bbc.com/news/world-asia-india-52180660

https://www.nytimes.com/2020/04/06/us/politics/coronavirus-trump-malaria-drug.html

No comments:

Post a Comment