Saturday, December 7, 2019

বিচার

আপনার কাছে দুটো বিকল্প আছে, ১) আইনের শাসন মানা অথবা ২) নৈরাজ্যকে সমর্থন করা। আইনের শাসন মেনে চললে সেটা সময়োপযোগী পরিবর্তন যাতে আসে, সেটা নিশ্চিত করাও আপনার দায়িত্ব আর নৈরাজ্যে বিশ্বাসী হলে, আর কখনও আইনের দোহাই দেবেন না।

ধর্ষণের মত ঘৃণ্য অপরাদের ক্ষেত্রে, ধর্ষণের সময় বা তারপরে কখনও যদি ধর্ষিতা বা তাঁর কোনও আত্মীয় (শুধু রক্তের সম্পর্ক নয়) ধর্ষকের হত্যা করে, তাহলে সেটা সর্বান্তকরণে সমর্থন করবো। সেটা যদি কোন পুলিস করেন, তাহলেও সমর্থন করবো যদি তিনি সেই সময় নিজের উর্দিটা খুলে রেখে, সামাজিক দায়িত্ব হিসাবে সেটার পালন করেন। কিন্তু পুলিসের উর্দি গায়ে চাপিয়ে, আইনি রক্ষাকবচ পরে, আইনকে হাতে নেয়ার কোন অধিকার পুলিসের নেই। সেটা নৈরাজ্য।

আর হ্যাঁ, যারা বিচারবিভাগের দীর্ঘসূত্রিতার দোহাই দিয়ে, এনকাউন্টারের সমর্থন করছেন, তাদের মধ্যে কতজন জানেন যে এই দীর্ঘসূত্রিতার অন্যতম প্রধান কারণ কেস গঠন করার জন্যে পুলিসের গড়িমসি? হ্যাঁ, যে পুলিসের এনকাউন্টারকে আপনারা হিরোয়িক ভাবছেন, সেটা বাস্তবে পুলিসের নিস্ক্রিয়তার প্রমাণ। এই পুলিসই তাদের রাজনৈতিক প্রভূদের ইচ্ছা অনুযায়ী কেস সাজান, নিরপরাধকে ফাঁসান আর দোষীদের বিরুদ্ধে প্রমাণ যোগার করতে পারেননা যাতে তারা ছাড়া পায়।

নৈরাজ্য ও পুলিসরাজ যদি আপনার কাম্য হয়ে থাকে, পুলিসের জারি করা বয়ানই যদি আপনার কাছে বেদবাক্য হয় তাহলে আপনি সেই খুশীতে গদগদ হতেই পারেন কিন্তু সেটা কখনই সভ্য সমাজের প্রতিফলন হবেনা। ন্যায় বিচার যদি সত্যিই চান তাহলে আপনার নির্বাচিত আইনসভার সদস্যকে বাধ্য করুন এমন আইন আনতে যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পুলিস তদন্ত শেষ করতে বাধ্য হয়, আদালত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া শেষ করতে বাধ্য হয় এবং সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার খতিয়ান যাতে জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়। এরকম না হলে, বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কেঁদেই যাবে, সমাজে সেটার প্রতিফলন ঘটবেনা।

No comments:

Post a Comment