প্রধানমন্ত্রী, নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রীসভার উদ্যোগে, ভারতের সংসদ দ্বারা, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনী, যেটা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নামে বেশী প্রচারিত, পাশ করানোর পরে, বিরোধী দলগুলি এবং মিডিয়ার একাংশ, সম্মিলিতভাবে, জনগণকে, এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সাথে NRC কে জড়িয়ে, বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ভোট ব্যাঙ্ক রক্ষা করার স্বার্থে তাদের এই অপপ্রচারের ফলে জন্ম নিচ্ছে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাস এবং বিঘ্নিত হচ্ছে শান্তির পরিবেশ।
এই অপপ্রচারের ফাঁদে পা দেয়ার আগে আমাদের এটা বোঝা দরকার যে এই সংশোধনী, বর্তমান নাগরিকত্ব আইনে ১) প্রতিবেশী দেশগুলির মানে বাংলাদেশ, পাকিস্তান আর আফগানিস্তানের সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে একটা গোষ্ঠী হিসাবে দেখা এবং ২) নাগরিকত্ব প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ণয়ের সময়কাল ১১ বছর থেকে কমিয়ে পাঁচ বছর করে দেয়া ছাড়া আর বিশেষ কিছুই পরিবর্তন করা হয়নি। ঘটনা হচ্ছে যে এই সংশোধনী যদি নাও আনা হত, সেক্ষেত্রেও ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে অত্যাচারের শিকার শরণার্থীরা এই দেশের নাগরিকত্ব পেত কিন্তু সেক্ষেত্রে তাদের অপেক্ষা করতে হতো ১১ বছর আর তাদের প্রত্যেকটা কেসকে আলাদাভাবে বিচার করা হতো। মানে, সেক্ষেত্রে বৈষম্যের সম্ভাবনা থেকেই যেত। এই আইন শুধু সেই বৈষম্যের সম্ভাবনাকে নির্মূল করার জন্যে, মানবিক দিক বিচার করেছে মাত্র।
যারা প্রচার করছেন যে এই আইনের ফলে বাংলাদেশ থেকে হিন্দুরা ভারতে আসতে প্রলুব্ধ হবে, তাদের মনে রাখা উচিত যে এই বিলের উদ্দেশ্য মোটেই তাদেরকে প্রলুব্ধ করা নয়, বরং যারা চলে আসতে বাধ্য হয়েছে, তাদের নিরাপত্তা দেয়া। আর এই কারণেই ২০১৫ সালের আগে আগত শরণার্থীদের এই বিলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যাতে উক্ত সময়সীমার মধ্যে আগত শরণার্থীরা আগামী বছর শুরু থেকেই নাগরিকত্ব প্রাপ্তির অধিকার পেতে পারেন। এই কথা অস্বীকার করার কোন উপায়ই নেই যে প্রতিবেশী দেশগুলোতে ধর্মীয় নির্যাতন একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া আর সেই কারণে শরণার্থীদের আগমনও একটা নিয়মিত প্রক্রিয়া কিন্তু যারা ২০১৫ সাল থেকে এদেশে আসতে বাধ্য হয়েছেন, তাদেরও আগের মত একই পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যেতে হবে তবে তাদের জন্যে একমাত্র সুখবর হল যে সময়কাল ১১ বছর থেকে কমে ৫ বছর হয়েছে।
এটা সবার কাছেই খুব স্পষ্ট থাকা দরকার যে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা ক্যাবের সাথে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী বা NRC-র কোন সম্পর্ক নেই। NRC একটা সম্পূর্ণ আলাদা প্রক্রিয়া যা ভারতের সংসদ ২০০৩ সালে অনুমোদন করেছে। আইনানুসারে NRC হওয়া উচিত রেজিস্ট্রার জেনারেল এবং সেনসাস কমিশনারের দ্বারা যদিও আসাম NRC হয়েছিল সর্বোচ্চ আদালতের নজরদারিতে। আসাম NRC ছিল বিচার বিভাগ আর আমলাদের প্রত্যক্ষ ফলাফল অথচ আইনানুসারে সেটা হওয়া উচিত ছিল আইন বিভাগ আর আমলাতন্ত্রের সামঞ্জস্যতা। তাই আসাম NRC-র সাথে জাতীয় NRC-র তুলনা অবান্তর। তবে হ্যাঁ, আসাম NRC তে যে ভুল গুলি হয়েছিল, সেগুলির যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেই বিষয়ে অবশ্যই সজাগ থাকা দরকার এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
আমি সেই সব হিন্দুত্ববাদীদের প্রতি করুণা প্রকাশ করি যারা অপপ্রচার করছেন যে এই আইন পাশ করে, প্রধানমন্ত্রী, নরেন্দ্র মোদী, হিন্দু শরণার্থীদের মন থেকে তাদের উপর, প্রতিবেশী দেশগুলোর সংখ্যাগরিষ্ঠ গোষ্ঠীর দ্বারা হওয়া অত্যাচার ভুলিয়ে দিলেন এবং তার ফলে সেই দেশগুলোতে জমি উদ্ধারের কাজও ব্যহত হলো। আমার মতে এই ধারণা সম্পূর্ণ বালখিল্যতা কারণ ক্যাবের সাথে জমি উদ্ধারের তিলমাত্র সম্পর্ক নেই, কারণ সেই জমির অধিকার আমরা ১৯৪৭ সালে, দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে দেশের বিভাজন মেনে নেয়ার সাথেই হারিয়েছি। এই বিল, বরং, সেই দেশগুলোতে, তাদের উপর হওয়া অত্যাচারের স্বীকৃতি। বিদেশী রাষ্ট্রের জমি উদ্ধার, যেমন এই প্রচারকারীরা দাবী করছেন, যদি প্রধানমন্ত্রী, নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন ভারত সরকারকেই করতে হয় তাহলে সেটার একমাত্র উপায় হল তিনটে দেশের সাথে যুদ্ধ। এখন প্রশ্ন হল যে এই হিন্দুত্ববাদীরা কি তাদের এই তত্ত্ব সার্থক করার জন্যে প্রধানমন্ত্রীকে যুদ্ধে যেতে পরামর্শ দিচ্ছেন? সেটা বাস্তবোচিত হবে তো? তারা যদি নিজেদের উদ্যোগে সেই জমি উদ্ধার করতে চান, তাহলে, আমি মনে করি, ক্যাব কখনই তাদের পথের কাঁটা হবেনা। কিন্তু নিজেরা সেই উদ্যোগ নেয়ার বদলে, কেন্দ্র সরকারের শরণার্থীদের সাহায্য করার সিদ্ধান্তকে দোষারোপ করার পদ্ধতি বালখিল্য এবং নিন্দাজনক।
এই অপপ্রচারের ফাঁদে পা দেয়ার আগে আমাদের এটা বোঝা দরকার যে এই সংশোধনী, বর্তমান নাগরিকত্ব আইনে ১) প্রতিবেশী দেশগুলির মানে বাংলাদেশ, পাকিস্তান আর আফগানিস্তানের সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে একটা গোষ্ঠী হিসাবে দেখা এবং ২) নাগরিকত্ব প্রাপ্তির যোগ্যতা নির্ণয়ের সময়কাল ১১ বছর থেকে কমিয়ে পাঁচ বছর করে দেয়া ছাড়া আর বিশেষ কিছুই পরিবর্তন করা হয়নি। ঘটনা হচ্ছে যে এই সংশোধনী যদি নাও আনা হত, সেক্ষেত্রেও ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে অত্যাচারের শিকার শরণার্থীরা এই দেশের নাগরিকত্ব পেত কিন্তু সেক্ষেত্রে তাদের অপেক্ষা করতে হতো ১১ বছর আর তাদের প্রত্যেকটা কেসকে আলাদাভাবে বিচার করা হতো। মানে, সেক্ষেত্রে বৈষম্যের সম্ভাবনা থেকেই যেত। এই আইন শুধু সেই বৈষম্যের সম্ভাবনাকে নির্মূল করার জন্যে, মানবিক দিক বিচার করেছে মাত্র।
যারা প্রচার করছেন যে এই আইনের ফলে বাংলাদেশ থেকে হিন্দুরা ভারতে আসতে প্রলুব্ধ হবে, তাদের মনে রাখা উচিত যে এই বিলের উদ্দেশ্য মোটেই তাদেরকে প্রলুব্ধ করা নয়, বরং যারা চলে আসতে বাধ্য হয়েছে, তাদের নিরাপত্তা দেয়া। আর এই কারণেই ২০১৫ সালের আগে আগত শরণার্থীদের এই বিলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যাতে উক্ত সময়সীমার মধ্যে আগত শরণার্থীরা আগামী বছর শুরু থেকেই নাগরিকত্ব প্রাপ্তির অধিকার পেতে পারেন। এই কথা অস্বীকার করার কোন উপায়ই নেই যে প্রতিবেশী দেশগুলোতে ধর্মীয় নির্যাতন একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া আর সেই কারণে শরণার্থীদের আগমনও একটা নিয়মিত প্রক্রিয়া কিন্তু যারা ২০১৫ সাল থেকে এদেশে আসতে বাধ্য হয়েছেন, তাদেরও আগের মত একই পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যেতে হবে তবে তাদের জন্যে একমাত্র সুখবর হল যে সময়কাল ১১ বছর থেকে কমে ৫ বছর হয়েছে।
এটা সবার কাছেই খুব স্পষ্ট থাকা দরকার যে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা ক্যাবের সাথে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী বা NRC-র কোন সম্পর্ক নেই। NRC একটা সম্পূর্ণ আলাদা প্রক্রিয়া যা ভারতের সংসদ ২০০৩ সালে অনুমোদন করেছে। আইনানুসারে NRC হওয়া উচিত রেজিস্ট্রার জেনারেল এবং সেনসাস কমিশনারের দ্বারা যদিও আসাম NRC হয়েছিল সর্বোচ্চ আদালতের নজরদারিতে। আসাম NRC ছিল বিচার বিভাগ আর আমলাদের প্রত্যক্ষ ফলাফল অথচ আইনানুসারে সেটা হওয়া উচিত ছিল আইন বিভাগ আর আমলাতন্ত্রের সামঞ্জস্যতা। তাই আসাম NRC-র সাথে জাতীয় NRC-র তুলনা অবান্তর। তবে হ্যাঁ, আসাম NRC তে যে ভুল গুলি হয়েছিল, সেগুলির যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেই বিষয়ে অবশ্যই সজাগ থাকা দরকার এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
আমি সেই সব হিন্দুত্ববাদীদের প্রতি করুণা প্রকাশ করি যারা অপপ্রচার করছেন যে এই আইন পাশ করে, প্রধানমন্ত্রী, নরেন্দ্র মোদী, হিন্দু শরণার্থীদের মন থেকে তাদের উপর, প্রতিবেশী দেশগুলোর সংখ্যাগরিষ্ঠ গোষ্ঠীর দ্বারা হওয়া অত্যাচার ভুলিয়ে দিলেন এবং তার ফলে সেই দেশগুলোতে জমি উদ্ধারের কাজও ব্যহত হলো। আমার মতে এই ধারণা সম্পূর্ণ বালখিল্যতা কারণ ক্যাবের সাথে জমি উদ্ধারের তিলমাত্র সম্পর্ক নেই, কারণ সেই জমির অধিকার আমরা ১৯৪৭ সালে, দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে দেশের বিভাজন মেনে নেয়ার সাথেই হারিয়েছি। এই বিল, বরং, সেই দেশগুলোতে, তাদের উপর হওয়া অত্যাচারের স্বীকৃতি। বিদেশী রাষ্ট্রের জমি উদ্ধার, যেমন এই প্রচারকারীরা দাবী করছেন, যদি প্রধানমন্ত্রী, নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন ভারত সরকারকেই করতে হয় তাহলে সেটার একমাত্র উপায় হল তিনটে দেশের সাথে যুদ্ধ। এখন প্রশ্ন হল যে এই হিন্দুত্ববাদীরা কি তাদের এই তত্ত্ব সার্থক করার জন্যে প্রধানমন্ত্রীকে যুদ্ধে যেতে পরামর্শ দিচ্ছেন? সেটা বাস্তবোচিত হবে তো? তারা যদি নিজেদের উদ্যোগে সেই জমি উদ্ধার করতে চান, তাহলে, আমি মনে করি, ক্যাব কখনই তাদের পথের কাঁটা হবেনা। কিন্তু নিজেরা সেই উদ্যোগ নেয়ার বদলে, কেন্দ্র সরকারের শরণার্থীদের সাহায্য করার সিদ্ধান্তকে দোষারোপ করার পদ্ধতি বালখিল্য এবং নিন্দাজনক।
ক্যাব অত্যাচারিত শরণার্থীদের দুশ্চিন্তা এবং বৈষম্য থেকে মুক্তি দিয়েছে। এই আইন তাদের স্বীকৃতি দিয়ে, তাদের উপর হওয়া অত্যাচারের কথা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরার সুযোগ এনে দিয়েছে। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে বিরোধীরা যতই সমালোচনা করুন, বাস্তবে এই বিল হিন্দু শরণার্থীদের কাছে, বিশেষত বাঙালী শরণার্থীদের কাছে, দীর্ঘদিনের পরম কাঙ্ক্ষিত উপহার। শরণার্থীদের এই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার জন্যে, প্রধানমন্ত্রী, নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, অমিত শাহকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
No comments:
Post a Comment