ভাবা যায়, পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির যে সব নেতারা দুদিন আগেও টুকটুকি মন্ডলের নাম শুনে ভুরু কুঁচকাচ্ছিল, হিন্দু সংহতি ও জন অধিকার মঞ্চের আহ্বানে টুকটুকিকে উদ্ধারের দাবীতে আন্দোলনে সামিল হতে অস্বীকার করছিল আজ তারা টুকটুকির গ্রামের বাড়ির সামনে তার মুক্তির দাবীতে ধর্ণায় বসছে, থানায় দৌড়াচ্ছে আর সেই ছবি ফেসবুক আর টুইটারে দিচ্ছে এটা দেখাতে যে তারা কত সক্রিয়।
কিন্তু আচমকা এই ভোলবদলের কারনটা কি?
কারন একটাই, হিন্দু ভোটব্যাঙ্ক। আজ তপন ঘোষের নেতৃত্বে হিন্দু সংহতি, হিন্দুদের একজোট করে, টুকটুকি মন্ডলের উদ্ধারের দাবীকে এমন একটা পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে বিজেপির নেতারা বুঝে গেছে যে এই শক্তিকে আর অগ্রাহ্য করা যাবে না। তাই যে রাহুল সিনহা দুদিন আগেই শ্রীমতী নির্মলা সীতারামনের সফরের অজুহাত দেখিয়ে জন অধিকার মঞ্চ আয়োজিত প্রতিবাদ সভাতে উপস্থিত হতে অস্বীকার করেছিলেন, আজ সেই রাহুল সিনহাই তাঁর চেলাচামুন্ডাদের মগরাহাটে ধর্ণা দিচ্ছেন আর মশার কামড় খেয়ে রাত কাটাবার কথা প্রচার করছেন। যদিও কিছু দুষ্টু লোকেরা বলে বেড়াচ্ছে যে এতদিন পরে ধর্ণা যদি দিতেই হত তাহলে সেটা মগরাহাটে কেন, নবান্নের সামনে কেন নয়! তবে দুষ্টুলোকেদের কথায় আমরা কান দেবোনা কারণ কান দিলে আবার শুনতে হবে যে জন অধিকার মঞ্চের সভায় যোগ দেবার অনুরোধের প্রেক্ষিতে রাহুল বাবু আর রুপা দিদির উত্তর সর্বসমক্ষে ফাঁস হয়ে যাবার পরেই নাকি বিজেপির ভোলবদল।
তবে কিনা বলে, স্বভাব যায় না মলে। এতদিন ধরে মোল্লাতোষন করে আসার অভ্যাস কি আর তপন ঘোষের গুঁতোয় একদিনে বদলায়? তাই কাল বিকাল থেকে ফেসবুক আর টুইটারে ঘনঘন আপলোড করা ছবি ও বার্তাতে (ভাই সুমন্ত্র মাইতির ভাষায়, কিলিক কিলিক) অপহরণকারীর মুসলিম পরিচয় লুকানোর চেষ্টা করা হল। কিন্তু তাতেও বিধি বাম। গত ৭৩ দিন ধরে গড়ে ওঠা হিন্দু জনমত এই দ্বিচারিতার বিরুদ্ধে গর্জে উঠল। প্রথমে বিজেপি থেকে দাবী করা হল যে ধর্ণামঞ্চ থেকে নাকি অপহরণকারীর প্রকৃত পরিচয় ঘোষণা করা হচ্ছে কিন্তু অবশেষে, পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বাধ্য হয়েই বাবুসোনা গাজীর নাম উল্লেখ করতে বাধ্য হল।
বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ রাহুল বাবুর ধর্ণামঞ্চের পিছনে টানানো ফ্লেক্স দেখে আপনারা যদি অপহরণকারীর নাম 'দুষ্কৃতি' ভেবে বসেন তাহলে সেটার দায় লেখকের নয়।
No comments:
Post a Comment