প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্বচ্ছ ভারত অভিযানের অঙ্গ হিসাবে কিছুদিন আগে আমাদের অফিস থেকে অফিস সংলগ্ন, মুসলিম অধ্যুষিত, ঘুষিপাড়া অঞ্চলটিকে নির্বাচিত করা হল। বিশাল আয়োজন। বেশ কিছু নতুন ঝাঁটা কেনা হল, ডাস্টবিন কেনা হল, এমনকি ঝাঁট দেবার সময় মুখে লাগানোর মাস্কও কেনা হল।
তারপর নির্দিষ্ট দিনে, আমন্ত্রিত প্রেসের সামনে শুরু হল সাফাই অভিযান। ম্যানেজমেন্ট ও ইউনিয়ন - দুই তরফেরই অধিকারীরা বাকি সকলের সাথে হাত মিলিয়ে রাস্তা পরিস্কার করলেন। সকলের ঐকান্তিক শ্রমে কিছুক্ষনের মধ্যেই এলাকার রূপ বদলে গেল। রাস্তার দুইপাশে, সদ্যকেনা, ডাস্টবিনও বসানো হল। আর এই কর্মযজ্ঞ দেখতে উপস্থিত এলাকার অধিবাসীদের অনুরোধ করা হল তারা যেন এই রাস্তা পরিস্কার রাখেন আর আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলেন।
খুব বেশী হলে দিন দুয়েক এরকম পরিচ্ছন্ন রূপ বজায় ছিল, তারপরই আবার সে তার পুরনো রূপ ধারণ করলো। কিছুদিনের মধ্যে রাস্তার পাশে বসানো বেশ কিছু ডাস্টবিনও গায়েব হয়ে গেল। একসপ্তাহ পরে, আনন্দবাজারে প্রকাশিত ছবি ছাড়া, আমাদের অফিসের স্বচ্ছ ভারত অভিযানের আর কোন প্রমানই রইল না।
তবে এটা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, আমাদের দেশের অধিকাংশ স্থানে, যেখানে নিয়মিত নজরদারি নেই, এরকম হওয়াটাই স্বাভাবিক। যতদিন না আমরা আমাদের জাতীয় সম্পত্তিগুলিকে আপন বলে ভাবতে শিখবো, এরকম চলতেই থাকবে। তাই জাতীয় চেতনার উন্মেষ ছাড়া জাতীয় উন্নয়ন অলীক স্বপ্ন বই আর কিছু নয়।
No comments:
Post a Comment