Sunday, May 10, 2020

লকডাউন

যথেষ্ট হয়েছে লকডাউন, যথেষ্ট হয়েছে আতঙ্ক নিয়ে বাঁচা, এটাকে বেঁচে থাকা বলেনা। দেশ জুড়ে খুলে দেয়া হচ্ছে মদের দোকান, সেখানে নিয়মকানুন শিকেয় তুলে ভীড় জমাচ্ছে লক্ষ লক্ষ লোক, অথচ দেশে নাকি লকডাউন চলছে। এরই মধ্যে বিদেশ থেকে, বিনা পরীক্ষাতে, নিয়ে আসা হচ্ছে বহু মানুষ, যাদের আগমনের সাথে সাথেই সংশ্লিষ্ট রাজ্যে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সরকার মরকজ নিয়ে নীরব, মরকজের প্রধান, মৌলানা সাদকে আজও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। ব্র‍্যান্ডেড হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের প্রধান বলছেন কয়েকজনের জন্যে কোন সম্প্রদায়কে দায়ী করা যায়না অথচ দলদাসরা 'সিঙ্গল সোর্স' নিয়ে সোশাল মিডিয়াতে ট্রেন্ড করছে।

লকডাউন, সামাজিক দূরত্ব, ইত্যাদি গালভরা কথার পরেও করোনার প্রকোপ বেড়েই চলেছে। আক্রান্তের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে বিমানচালক, বিমানসেবিকা, সৈন্যবাহিনীতে কর্মরত ব্যক্তিরা। ভিন রাজ্যে কর্মরত শ্রমিকদের ঘরে ফেরার ব্যবস্থা না করেই যেমন হঠাৎ করে চালু করা হয়েছিল লকডাউন, তেমনি হঠাৎই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে এবার তাদের ফেরাতে হবে। কর্তার ইচ্ছায় কর্ম, তাই ফেরানোর পদ্ধতি সুনির্দিষ্ট করার আগেই সেটা নিয়ে ঘোষণা হয়ে গেছে যাতে রাজনৈতিক ফয়দা তোলা যায়। আর এই 'তু তু ম্যায় ম্যায়' এর চক্করে বেচারা শ্রমিকদের অবস্থা এখন করুণ। পায়ে হেঁটে কয়েক হাজার মাইল পাড়ি দিতেও তারা আর ভীত নয়। প্রশাসনের উপর কতটা ভরসা থাকলে কেউ এতটা ঝুঁকি নিতে পারে সেটা ভাবুন।

তাই এই লোকদেখানো লকডাউন চালিয়ে আর কোন লাভ নেই। প্রত্যেকটা সরকারই আস্তে আস্তে সব ক্ষেত্রই চালু করে দেবে কিন্তু লকডাউন তোলার কথা সরাসরি ঘোষণা করবেনা যাতে পরবর্তী পরিস্থিতির দায় সরাসরি তাদের উপর না পড়ে। কিন্তু এরই মধ্যে লাভের গুড় তারা খেতেই থাকবে, সেটা মদের উপর বাড়তি রাজস্ব বসিয়েই হোক বা পেট্রোল ও ডিজেলের উপর বাড়তি এক্সাইজ ডিউটি, প্রতিমাসে সরকারি কর্মীদের একদিনের বেতন প্রধানমন্ত্রীর ফান্ডে নিয়েই হোক বা রেশনে আসা অতিরিক্ত সামগ্রীর পার্টি অফিসের মাধ্যমে ব্যবসা - এরপরেও বলবেন যে দুর্যোগের কোন ভাল দিক নেই?

No comments:

Post a Comment