Wednesday, March 4, 2020

বঙ্গ রাজনীতির দিশা

এর আগে যখন বলেছিলাম যে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাশ করানোই যথেষ্ট নয়, সেটার যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে শরণার্থীদের সুবিধা দেয়াটাও প্রয়োজন, তখন সেটা অনেকেরই পছন্দ হয়নি। আসলে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত হতে হতে হিন্দুদের মধ্যে একটা স্বল্প-সন্তুষ্টির উপসর্গ জন্ম নিয়েছে। মানে, যা চেয়েছিলাম সেটা না পেলেও, যেটুকু পেয়েছি তাতেই খুশী।

সৌভাগ্যের বিষয় হল যে নরেন্দ্র মোদী বা অমিত শাহ এই রোগে আক্রান্ত নন। তাই তাঁদের কাছে এই মর্মে বার্তা পৌছালে তাঁরা সেটাকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেন। তাই আমার গত ৬ই ফেব্রুয়ারীর পোস্ট দলদাসদের কাছে অপ্রিয় হলেও, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সেটার গুরুত্ব অনুধাবন করেছেন এবং ১৫৮৯ জন শরণার্থী আজ ডিটেনশন ক্যাম্পে থেকে মুক্ত।

বিগত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে উত্তরবঙ্গ ও রাঢ়বঙ্গে তৃণমূলকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে সক্ষম হয়েছে বিজেপি। এর প্রধান কারণ ছিল নরেন্দ্র মোদীর ইমেজ এবং কেন্দ্রে বিজেপির সরকার গঠনের আকুতি। লোকসভা পরবর্তী পর্যায়ে বিজেপি এই রাজ্য সম্পর্কে অনেকটাই নিস্পৃহ হয়ে যায় আর তার অন্যতম প্রধান কারণ হল ভরসাযোগ্য মুখের অভাব। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব খুব ভালভাবেই জানেন যে বঙ্গ বিজেপির বর্তমান নেতৃত্ব মমতা ব্যানার্জীর বিকল্প হওয়ার ক্ষমতা ও যোগ্যতা রাখেননা আর তাই তাঁরা খোঁজে ছিলেন বিকল্প মুখের।

এমতাবস্থায়, সৌরভ গাঙ্গুলীর উপর বাজী ধরা হচ্ছিল যে তিনি এই রাজ্যে বিজেপির মুখ হতে পারেন। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যোগ দেয়ার খবর যদি সত্যি হয় তাহলে স্বীকার করতেই হবে যে তাঁর থেকে যোগ্য মুখ বিজেপি যোগার করতে পারতনা। মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ড হারানোর পর, বিহারেও যদি বিজেপির আশানুরূপ ফল না হয় তাহলে বিজেপি সর্বশক্তি দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের জন্যে ঝাঁপাবে। আর সেক্ষেত্রে পার্টির জন্যে CAA-র মাধ্যমে বাঙালীদের সুফল আর শুভেন্দু অধিকারীর মত মুখ একবারে রাজযোটক হতে বাধ্য।

২০২১-র বিধানসভা নির্বাচন যে অনেক পরিচিত ছক ভেঙে দেবে, সেটা এখন থেকেই দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি। আপনি যদি রাজনীতির ছাত্র বা ছাত্রী হয়ে থাকেন তাহলে চোখকান খোলা রাখুন, আগামী দিনগুলি অনেক নতুন শিক্ষা দেবে।

No comments:

Post a Comment