Thursday, March 26, 2020

করোনা ত্রাণ

সবাইকে একসাথে সমান খুশী করা যায়না। দু'জন সন্তান থাকলে, স্বয়ং মা যেখানে উভয়কে একইসাথে সমান খুশী করতে পারেনা, একজন ভেবেই নেয় যে সে কম পেল, সেখানে সরকারের পক্ষে, সবাইকে সমানভাবে খুশী করার কথা ভাবা কেবল অবাস্তব নয়, অসম্ভবও। 

মা যেমন সন্তানের প্রয়োজনীয়তা ও উপযোগিতা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেন, সরকারকেও তেমনই প্রায়োরিটি ঠিক করে এগোতে হয়। সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন যার, তার চাহিদার যোগান সবার আগে আর তারপর প্রয়োজন অনুসারে ক্রমবিন্যাস করা হয়। এটাই সরকারি নীতি। এর চেয়ে ভাল কোন নীতি আপনার কাছে থাকলে, আপনি সেটা প্রশাসনকে জানাতেই পারেন কিন্তু একটা নীতি বদলের আগে, বিকল্প নীতি কিছু দিন। নাহলে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরী হয়ে যাবে।

আজ কেন্দ্রীয় সরকার ১.৭০ লক্ষ কোটি টাকার যে প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন সেটার প্রাথমিক লক্ষ্য হলেন সমাজে আর্থিকভাবে দুর্বলতর শ্রেণীর মানুষ। আমি নিজেও দু'দিন আগে এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলাম এবং সরকার যে বিষয়ের গুরুত্ব উপলব্ধি করে, সেটাতে সাড়া দিয়েছেন, এতে আমি খুশি। তবে প্রথমেই যেটা বললাম, প্রয়োজনীয়তা অনুসারে চাহিদা পূরণের প্রক্রিয়া, সেটা এক্ষেত্রেও বিবেচিত হবে। সমাজের দুর্বলতর শ্রেণীর পরে নজর দেয়া হবে তাদের থেকে আর্থিকভাবে সচ্ছল মধ্যবিত্ত শ্রেণীর প্রতি।

তাই আজকের এই প্যাকেজে যেসব মধ্যবিত্তরা একটু ক্ষুব্ধ হচ্ছেন (ছোটবেলায় ভাই বা বোন আগে পেলে যেমন হতেন), তাদের বলছি যে একটু ধৈর্য্য ধরুন। আগামীদিনে সরকার আপনাদের জন্যেও, বিশেষত ব্যবসায়ীদের জন্যে, (চাকুরিজীবীদের মাস শেষে বেতন নিশ্চিত কিন্তু ব্যবসায়ীদের আয় সামাজিক পরিকাঠামোর উপর নির্ভর করে) নিশ্চিত কিছু নিয়ে আসবে। সেটা কি, আমি জানিনা তবে সেটা কয়েক মাসের ট্যাক্স হলিডে হতে পারে বা যারা ঋণ নিয়ে ব্যবসা করছেন তাদের কয়েকটা কিস্তি মাফ বা কিস্তির সময়সীমা বাড়িয়ে দেয়া হতে পারে। তাই ছোটবেলার মত, 'ও কেন আগে পেল' বলে ঠোঁট না ফুলিয়ে, 'ওর' পাওয়াতে খুশী হন, কারণ 'ওর' প্রয়োজন বেশী।

No comments:

Post a Comment