Tuesday, April 27, 2021

অনির্বানের বিরম্বনা

বলেছিলাম না, ঠ্যালায় না পড়লে বিড়াল গাছে ওঠেনা। আজ নির্বাচনের প্রাক্কালে অনির্বান বাবু বুঝেছেন যে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মত একটা অপদার্থকে, বিশ্বভারতীর মত একটা ঐতিহ্যবাহী সংস্থার উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করা এবং তার বিভিন্ন অন্যায়কে চোখ বুজে মেনে নেয়ার পরিণতি কি।

গত আগস্ট মাসে, শান্তিনিকেতনের অলিতে-গলিতে ঘুরে আর এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেই বুঝেছিলাম যে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে বিশ্বভারতীর উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ একটা কলঙ্কিত ঘটনা। লোকটা তার নিজের ইগোর কারণে প্রতিষ্ঠানের সম্মান, নান্দনিকতা এবং ঐতিহ্যকে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। এলাকার বিভিন্ন যায়গায় জেলের মত পাঁচিল তোলা হোক বা সেই পাঁচিল নির্মানের কাটমানি খাওয়া, প্রার্থনাগৃহকে কারাগার বানানো হোক বা প্রতিবাদী কন্ঠস্বরকে বহিস্কার করা, বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সব অপরাধকে এতদিন চোখ বুজে মেনে নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। স্বপন দাশগুপ্ত বাবুকে দিয়ে, CAA এর সমর্থনে একটা সভা দেখেই বিজেপি নেতৃত্ব ভেবে নিয়েছিল যে বিদ্যুৎ চক্রবর্তী দারুণ জাতীয়তাবাদী। তাই আমি বারবার কেন্দ্র সরকার ও বিজেপি নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা সত্ত্বেও তারা বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। একজন নেতা তো আমাকে এটাও বলেছিলেন যে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর 'জ্যাক' নাকি অনেক উপরে লাগানো আছে। কিন্তু তারা বুঝতে পারেননি ধান্ধাবাজ কখনও জাতীয়তাবাদী হতে পারেনা, তার সব কাজেরই লক্ষ্য থাকে নিজের ধান্ধার পথ পরিস্কার রাখা। 

আজ ঠেলায় পড়ে, অনির্বাণ বাবু যতই উপাচার্যের সমালোচনা করুন এটা অস্বীকার কোন যায়গা নেই যে এই ভস্মাসুরের সৃষ্টি তারাই করেছেন আর এখন নিজেরা যখন সেই ভস্মাসুরের ছোঁয়া পেতে চলেছেন, তখন দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইছেন। ২০১৯ সালের পৌষ মেলায় স্টল দেয়ার জন্যে ব্যবসায়ীদের থেকে নেয়া সিকিউরিটি মানি আজ থেকে আটকে নেই অনির্বান বাবু, এই ইতিহাস অনেক পুরনো। In fact, তাদের সিকিউরিটি মানির ৫০% আটকে রেখেছিল এই বিদ্যুৎ চক্রবর্তী আর গত সেপ্টেম্বর মাসে, আমি সেই বিষয়ে যাবতীয় তথ্য আমার ফেসবুক লাইভে তুলে ধরার পর, ৩০% টাকা ফেরত দেয়া হয়।

অনির্বান বাবু, গত আগস্ট থেকে আমি যখন ধারাবাহিক ভাবে উপাচার্যের বিভিন্ন অন্যায়কে তুলে ধরছি তখন আপনার দলের সমর্থকেরাই আমাকে তৃণমূল বলে দাগিয়েছিল। তাই আজ যখন আপনি বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সঙ্গে তৃণমূলের ঘনিষ্ঠতার কথা বলছেন, ভারী মজা লাগছে। তবে দায় শুধু কেন্দ্র সরকার ও বিজেপির নয়, কলকাতা হাইকোর্টও এই মামলায় একদেশদর্শী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কোন অজ্ঞাত কারণে, এই মামলাতে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ যেভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটা আক্ষরিক অর্থেই miscarriage of justice। আত্মদীপ সেই মামলার সাথে যুক্ত এবং সেই রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে যাওয়ার রাস্তা আমাদের এখনও খোলা আছে। তবে আপনার ক্ষেত্রে অনেক দেরী হয়ে গেছে, অনির্বাণ বাবু। আজ যতই বলুন যে শিক্ষা মন্ত্রক উপাচার্যের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে, এতে বরফ গলবে না। You have missed the bus, Sir.

https://react.etvbharat.com/bengali/west-bengal/state/birbhum/bengal-election-2021-anirban-ganguly-the-bjp-candidate-of-bolpur-pressmeet-against-visva-bharati-vice-chancellor/wb20210427123308687

No comments:

Post a Comment