Tuesday, April 20, 2021

করোনা টিকা

করোনা টিকা নিয়ে যে যার খুশী পিঠ চুলকাতে পারে কিন্তু বাস্তব হলো যে প্রয়োজনের তুলনায় টিকার সরবরাহ যথেষ্ট কম। CoWin নামক সাইটটা ঠিক কিসের ভিত্তিতে চালানো হচ্ছে সেটা খোদায় মালুম। CoWin সাইটের নির্দিষ্ট স্লট অনুযায়ী, গতকাল বিকেলে মা আর বড়মাকে দ্বিতীয় পর্যায়ের টিকা দেয়ার জন্যে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে  গিয়ে শুনলাম যে টিকা শেষ। নির্দিষ্ট বুকিং থাকা সত্ত্বেও টিকা কিভাবে শেষ হলো তার উত্তর কারুর কাছে নেই। তাদের পরামর্শ হলো যে "কালকে সকাল ১১টা নাগাদ আসুন, পেতে পারেন"। অগত্যা আজ সকাল ১১টা নাগাদ আবার গেলাম, গিয়ে দেখি অন্তত ২০০ লোকের লাইন আর আশেপাশে আরও কয়েকজন ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন। শুনলাম ওখানে নাকি সবাই ভোরবেলা থেকে লাইন দিয়ে রাখেন। ভোরবেলায় গিয়ে যদি লাইনেই দাঁড়াতে হবে তাহলে CoWin এর কি দরকার?

স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকার আশা ছেড়ে CoWin সাইটে আবার Reschedule করতে বসলাম। দেখা গেল যে কাছাকাছির মধ্যে, ব্যারাকপুর টেকনো গ্লোবাল হাসপাতালে, ২৮শে এপ্রিল টিকার স্লট খালি আছে। স্লট বুক করে, হাসপাতালে ফোন করে শুনলাম যে আপাতত তাদের স্টকে কোন টিকা নেই, কবে আসবে সেটা জানেননা, আমি যেন এক সপ্তাহ পরে আবার ফোন করে খবর নিয়ে তারপর স্লট বুক করি। CoWin সাইটে স্লট দেখানো সত্ত্বেও হাসপাতালে টিকা না থাকার দায়িত্বটা ঠিক কে নিচ্ছে? সবটাই কি রাম ভরোসে?

টেকনোতে আশাহত হওয়ার পর এবার একটু বড় যায়গাতে হয় কিনা দেখার জন্যে ফোন করলাম অ্যাপেলো গ্লেনঈগলস হাসপাতালে। সেখানে অপারেটর জানালেন যে যেদিন টিকা নিতে চাই সেদিন সকালে ফোন করে খোঁজ নিতে হবে যে টিকা আছে নাকি নেই। থাকলে সেদিনই যেতে হবে। আর হ্যাঁ, যেতে যেতে যদি টিকা ফুরিয়ে যায় তাহলে কিছু করার নেই। মানে, টিকা আছে শোনার পর, আমি দু'জন বয়স্ক নাগরিককে নিয়ে হালিসহর থেকে কলকাতা যাবো এই প্রার্থনা করতে করতে যাতে টিকা শেষ না হয়ে যায়। অসাধারণ!

এরমধ্যেই আবার সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে ১৮+ হলেই নাগরিকরা এবার টিকা পাবেন। মানে, যাদের এক পর্যায়ের টিকা নেয়া হয়ে গেছে তাদের দ্বিতীয় পর্যায়ের টিকা সরবরাহের নিশ্চয়তা না থাকলেও শুধু সস্তা জনপ্রিয়তার জন্যে টিকা তালিকাতে যোগ করা হলো আরও কয়েক কোটি মানুষের নাম। চিন্তায় পড়ে গেছি যে করোনার প্রতিষেধক বা প্রতিরোধক আসলে কোনটা, টিকা নাকি টিকা তালিকায় নাম থাকা?

No comments:

Post a Comment