Monday, February 10, 2020

সংখ্যার জোর

মনে করুন যে আপনি একটা গাড়ি চালাচ্ছেন, হঠাৎ একটা কাঠবিড়ালি যদি আপনার গাড়ির সামনে চলে আসে, তাহলে আপনি হয়তো লক্ষ্যও করবেন না। কাঠবিড়ালির বদলে যদি একটা কুকুর হয়, তাহলে আপনি হয়তো সেটাকে বাঁচানোর চেষ্টা করবেন কিন্তু বাঁচাতে না পারলেও নিজেকে সান্ত্বনা দেবেন যে আপনার কিছু করার ছিলনা। এবার, কুকুরের বদলে যদি একটা গরু এসে যায়, তাহলে আপনি সেটাকে বাঁচানোর জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা করবেন আর দুর্ভাগ্যবশতঃ সেটাতে সফল না হলে, একটা আত্মগ্লানি আপনাকে গ্রাস করবে। কিন্তু গরুর বদলে যদি হঠাৎ একটা হাতি চলে আসে, তখন আপনি যেভাবেই হোক সংঘর্ষ এড়ানোর চেষ্টা করবেন কারণ সংঘাত হলে আপনার ক্ষতির সম্ভাবনা অনেক বেশী।

একইভাবে, আপনি যদি ৫ জনকে নিয়ে কোন সরকার বিরোধী মিছিল করেন, মূহুর্তের মধ্যে পুলিশ জেলে ভরে দেবে। সংখ্যাটা যদি ৫০ হয়, তাহলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করবে। সংখ্যাটা যদি ৫০০ হয়ে যায় তখন পুলিশ আলোচনা করে, একটা নির্দিষ্ট স্থান অবধি যেতে দেবে। কিন্তু সংখ্যাটা যদি ৫০০০ হয়ে যায়, তখন সেই পুলিশই উপযুক্ত নিরাপত্তা নিয়ে মিছিলকে নিজের গন্তব্যস্থলে নিয়ে যাবে।

উপরের দুটো উদাহরণে স্পষ্ট যে size matters। আকার যত বড় হবে, বিরোধীরা ততই সমীহ করবে। CAA নিয়ে মুসলমানদের প্রতিবাদ হল নিজেদের আকার দেখানোর একটা উপায়। দিল্লীর শাহিনবাগ, বিহারের শান্তিবাগ বা কলকাতার পার্ক সার্কাস, পুরোটাই একই সূত্রে বাঁধা আর সেটা হল ইসলাম। কেন্দ্র সরকারের রামমন্দির, ৩৭০ ধারা, তিন তালাক আইন, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, ইত্যাদি একের পর এক পদক্ষেপে, নিজেদের কৌমের প্রভাব ও প্রতিপত্তি নিয়ে সন্দিহান হয়ে ওঠা মুসলমানরা নিজেদের কৌমের সংখ্যা, প্রভাব আর প্রতিপত্তি বজায় রাখার জন্যেই এই আন্দোলনে সামিল হয়েছেন। দুঃখের বিষয় হল যে, কিছু হিন্দু নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে বা অজ্ঞানতার কারণে এই আন্দোলনে সামিল হয়েছেন আর নিজেদের জাতের স্বার্থের কথা ভুলে, নিজেদেরকে বিধর্মীদের স্বার্থসিদ্ধির ঘুটি বানিয়ে ফেলেছেন।

No comments:

Post a Comment