Tuesday, November 19, 2019

ইলেক্টরাল বন্ড - প্রথম পর্ব

২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে, বিজেপি শুধু অনলাইন আর চেকের মাধ্যমে ৭০০ কোটি টাকার অনুদান পেয়েছে। এর মধ্যে ৩৫৬ কোটি টাকা, মানে অর্ধেকেরও বেশী, দিয়েছে টাটাদের নিয়ন্ত্রিত প্রোগ্রেসিভ ইলেকটোরাল ট্রাস্ট আর ৫৪.২৫ কোটি টাকা দিয়েছে প্রুডেন্ট ইলেকটোরাল ট্রাস্ট যা গঠিত হয়েছে ভারতী গ্রুপ, হিরো মোটোকর্প, ওরিয়েন্ট সিমেন্ট, জুবিল্যান্ট ফুডওয়ার্কস, ডিএলএফ, জেকে টায়ার সহ অন্যান্য সংস্থাদের নিয়ে।

এই টাকার অঙ্ক দেখে চমকাবেন না, এটা হিমশৈলের চুড়া মাত্র। এই অনুদানের মধ্যে নগদ আর ইলেকটোরাল বন্ডের মাধ্যমে প্রাপ্ত অনুদানের কোন হিসাব নেই। এবার প্রশ্ন আসতেই পারে যে নগদ টাকার নাহয় হিসাব পাওয়া কঠিন, কিন্তু ইলেকটোরাল বন্ডের হিসাব নেই কেন? বিশেষত, ২০১৭ সালে এই বন্ড চালু করার সময়, তদানীন্তন অর্থমন্ত্রী, অরুণ জেটলী, সংসদে যে বক্তব্য রেখেছিলেন তার শিরোনাম ছিল "Transparency in Electoral Funding" এবং বক্তৃতার শেষে তিনি দাবী করেছিলেন যে "This reform will bring about greater transparency and accountability in political funding, while preventing future generation of black money"। এটাই যদি ঘটনা হয়ে থাকে তাহলে এই ইলেকটোরাল বন্ডের হিসাব ধরা হলনা কেন?

উত্তর জানতে হলে, জেটলীর এই ঘোষণার ঠিক চার মাস পরে, ২০১৭ সালের জুন মাসে, এই বন্ডের প্রয়োগ নিয়ে তদানীন্তন আর্থিক বিষয়ক মন্ত্রকের সেক্রেটারি, তপন রায়ের নোট পড়তে হবে যেখানে বলা হয়েছে "The information regarding purchaser and payee shall be kept secret by the issuer bank"। সেই নোটেই আরও বলা হয়েছে যে "These details would also be beyond the purview of RTI"। এখানেই শেষ নয়, নোটে বলা হয়েছে যে "Political parties would be exempted from keeping records of names and addresses of those who contributed through electoral bonds"। অর্থাৎ যে ইলেকটোরাল বন্ডকে কেন্দ্র সরকার দুর্নীতি ও কালো টাকার বিরুদ্ধে অস্ত্র বলে ঘোষণা করে, সংসদে পাশ করালেন, তাকেই চুপিসারে লেনদেন গোপন রাখার আইন হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে দিলেন।

সুপ্রিম কোর্টের নোটিশ পাওয়ার পরে, FCRA আইনে, রেট্রোসপেকটিভ হিসাবে পরিবর্তন এনে, জেটলী আগেই বিজেপি ও কংগ্রেসকে বিদেশী মূদ্রা সংক্রান্ত কেসে বাঁচিয়ে ছিলেন। তাঁর মস্তিস্ক প্রসূত নতুন আইডিয়া ছিল এই বন্ড। ইলেকটোরাল বন্ড চালু করা হলে সেটা দুর্নীতির সহায়ক হবে সেটা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া আগেই জানিয়েছিল। কিন্তু তাদের মতামতকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে, তৎকালীন রেভেনিউ সেক্রেটারি, হাসমুখ আদিয়ার নোটকে হাতিয়ার করে, কিভাবে সেই বিল পাশ করানো হল, সে সম্পর্কে পরে লিখবো।

https://www.bloombergquint.com/politics/bjp-declares-receiving-donations-over-rs-700-crore-in-fy-2018-19

No comments:

Post a Comment