Sunday, July 26, 2020

কার্গিল বিজয় দিবস

কার্গিল দিবসে ভারতের মহান সৈনিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সময় আমরা যেন সেই সৈনিকদের না ভুলে যাই যারা অপারেশন পরাক্রমে শহীদ হয়েছিলেন। সরকারি হিসাবে অপারেশন পরাক্রমে ৭৯৮ জন সৈন্য শহীদ হয়েছিলেন আর এই সংখ্যাটা কার্গিল বিজয়ে শহীদ হওয়া সৈন্য সংখ্যা থেকে অনেক বেশী। 

"ইস বার আর-পার কি লড়াই হোগি"- বলেছিলেন তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী। সারা দেশ থেকে সৈন্যদের নিয়ে গিয়ে কাশ্মীরে জমায়েত করানো হয়েছিল। কিন্তু কোন অদৃশ্য চাপে অথবা অজানা কারনে, আর-পার কি লড়াই তো দূরের কথা, একটা গুলি পর্যন্ত চালানোর অনুমতি পায়নি ভারতীয় সেনা। সীমান্তের ওপার থেকে চালানো পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে অসহায়ভাবে শহীদ হয়েছিলেন আমাদের জওয়ানরা। বিক্রম বাটরা ও সৌরভ কালিয়ার হত্যাকারীরা সেদিন কোন শাস্তি পায়নি।

শাস্তি অবশ্য হেমরাজের হত্যাকারীরাও পায়নি। হেমরাজকে মনে আছে তো? হেমরাজ, যার কাটা মাথা দিয়ে পাকিস্তানিরা ফুটবল খেলেছিল। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার আগে বিভিন্ন নির্বাচনী জনসভায় মোদীজী হেমরাজের কথা বলতেন। হেমরাজের সঙ্গে হওয়া নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে মনমোহন সরকার কোন ভূমিকা নেয়নি বলে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করতেন। আজ ছয় বছরের বেশী হয়ে গেছে মোদীজী এই দেশের প্রধানমন্ত্রী কিন্তু আজ অবধি তিনি দেশের জন্যে প্রাণ বলিদানকারী, হেমরাজের পরিবারের সাথে দেখা করেননি। তাঁর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে নওয়াজ শরীফ আমন্ত্রিত হয়েছেন কিন্তু হেমরাজের বিধবা স্ত্রী কোন আমন্ত্রণ পাননি।

তাই বন্ধু আজ কার্গিল বিজয় দিবস উদযাপন করার সময় একটু ভাবুন যে শহীদদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা কতটা আন্তরিক আর কতটা দেখনাই। কোন একটি বিশেষ দিবস আসলেই আমাদের শহীদ প্রেম উথলে ওঠে, দেশভক্তির গান শোনার হিড়িক লেগে যায় কিন্তু সত্যিই কি আমরা শহীদদের ত্যাগ মনে রেখেছি? সত্যিই কি আমরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল? প্রশ্নটা আজকের দিনে গায়ে একটু জ্বালা ধরালেও উত্তরটা কিন্তু সত্যি জানা দরকার।

No comments:

Post a Comment