Friday, July 24, 2020

স্মৃতিচারণ

১৯৯৪-৯৫ সালের কথা। এগারো বা বারো ক্লাসে তখন পড়ছি। তপনদা তখনও বিদ্যার্থী পরিষদের প্রান্তীয় সংগঠন সম্পাদকের দায়িত্বে। তারই কথায়, মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়ার পরে, বেলডাঙাতে একমাস বিদ্যার্থী পরিষদের বিস্তারক হিসাবে থাকার পর, বহরমপুর থেকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের প্রথম শিক্ষাবর্ষ শেষ করে (সৌভাগ্যক্রমে বহরমপুর ক্যাম্পে বৌদ্ধিক বিভাগের প্রমূখ ছিল তপনদা), প্রায় দু'মাস পরে বাড়ি ফিরেছি। তখন দোতলায় একটাই ঘর ছিল। ফলে আমি আর ছোড়দি, নীচে বড় ঘরে শুতাম। ছোড়দি ক্যাম্প খাটে আর আমি চৌকিতে।

তখন তপনদা মাঝেমধ্যেই আসতেন, রাতে থাকতেন। তপনদা রাতে থাকলে ছোড়দি অন্য ঘরে ঘুমাতো। এরকমই একদিন তপনদা এসেছিল আর শোয়ার সময় কে কোথায় শোবে, মানে ক্যাম্প খাটে কে শোবে আর চৌকিতে কে শোবে সেটা নিয়ে দ্বিধা। ক্যাম্প খাটে শুলে ফ্যানের হাওয়া বেশী লাগবে আর চৌকিতে শুলে যায়গা বেশী পাবে। তাই সিদ্ধান্ত নিতে পারছিনা যে কোথায় শুতে বলবো।

কিছুক্ষণ আমার সমস্যা পর্যবেক্ষণ করার পরে সমাধানটা তপনদাই করে দিলো। আমাকে জিজ্ঞাসা করলো যে, "তোর কোনটায় শুতে ইচ্ছে করছে? যেটায় তোর নিজের শুতে ইচ্ছা করছে, সেখানে আমাকে শুতে দে, কারণ মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি হল যে নিজের জন্যে সেরা টা বেছে নেয়া।" যাবতীয় সমস্যার সমাধান শেষে, দু'জনে একসাথে চৌকিতেই শুলাম এবং আরও অনেক রাত্রির মত, সে রাত্রিটাও গল্প (নাকি তর্ক?) করেই কেটে গেল। পরেরদিন সকালে তপনদা চা-জলখাবার খেয়ে বেড়িয়ে গেলেও, সেই শিক্ষাটা এখনও মনে আছে।

No comments:

Post a Comment