Tuesday, June 16, 2020

মন্দির সংস্কার


পঞ্চদশ থেকে সপ্তদশ শতাব্দীর মধ্যে নির্মিত বাঁকুড়ার মন্দিরগুলির গায়ের পোড়ামাটির কাজ বহুদিন ধরেই এলাকার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। ১৯৯৭ সালে, জেলা সদর বিষ্ণুপুরের মন্দিরগুলো ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ মর্যাদা পেয়ে সংরক্ষণের কাজ শুরু হলেও, জেলার অন্যান্য অঞ্চলে বিক্ষিপ্তভাবে থাকা মন্দিরগুলির যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের কাজ অবহেলিত রয়ে গেছে। এরকমই কয়েকটা মন্দির রয়েছে শুশুনিয়া পাহাড় সংলগ্ন কাদাশোল, নতুনগ্রাম, বেলিয়াতোড় এবং বেলুট-গোবিন্দপুর গ্রামগুলিতে। ধর্মেশ্বর, লক্ষীনারায়ন বা শিবের যে মন্দিরগুলি এইসব যায়গায় রয়েছে, সংরক্ষণের অভাবে সেইগুলির কয়েকটা পুরো ধ্বংস হয়ে গেছে আর এখনই উদ্যোগ না নিলে, বাকিগুলিরও একই পরিণতি হবে।

এলাকার মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৫ শতাংশ তপশিলি জাতি এবং ৩০ শতাংশ তপশিলি উপজাতিভুক্ত এবং অধিকাংশই দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাস করেন। অধিকাংশ মানুষের জীবিকা কৃষি বা পশুপালন হলেও, কেবলমাত্র বৃষ্টির জলের উপর নির্ভরশীল হয়ে, অনুর্বর জমিতে চাষাবাদ যথেষ্টই কষ্টসাধ্য। ফলে গ্রামের অধিকাংশ সক্ষম পুরুষ ও মহিলারা কাজের খোঁজে মূলত 'পূবে যান' মানে জেলার পূর্বদিকে অবস্থিত বর্ধমান, আসানসোল প্রভৃতি যায়গায় যান এবং ইঁটভাটা বা কলকারখানায় শ্রমিক হিসাবে কাজ করেন।
এত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও, গ্রামবাসীরা নিজেরাই সাধ্যানুযায়ী চাঁদা তুলে একটা শিব মন্দিরের সংস্কার করেন (৪ নং ছবি) এবং সেখানে গত ৯ই ফেব্রুয়ারী, সনাতন সংস্কৃতি অনুসারে, শুদ্ধি অনুষ্ঠান ও নরনারায়ণের সেবা করা হয়। কিন্তু সংস্কারের জন্যে যথেষ্ট অর্থ না থাকায়, মন্দিরে চিরাচরিত পোড়ামাটির কাজের বদলে সাধারণ ইঁট ও সিমেন্টের ব্যবহার করতে বাধ্য হন। এরসাথে যদি দৈনিক দুধ, মধু, ঘি, প্রসাদ এবং পূজারীর দক্ষিণা যোগ করা হয় তাহলে প্রতিটা মন্দিরের বার্ষিক খরচ দাঁড়ায় প্রায় দুই থেকে তিন লক্ষ টাকা। বাৎসরিক উৎসব পালনের খরচও প্রায় তিন লক্ষ টাকা।
মন্দিরগুলিকে তাদের পুরনো রূপ ফিরিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিটা মন্দির সংস্কারের খরচ লাগবে প্রায় ৬ (ছয়) লক্ষ টাকা এবং সময় লাগবে কম করে হলেও ছয় মাস। অর্থাৎ পাঁচটা মন্দির সংস্কারের মোট খরচ প্রায় ৩০ (তিরিশ) লক্ষ টাকা এবং তাদের বার্ষিক খরচ প্রায় ১০ (দশ) লক্ষ টাকা।

এমতাবস্থায়, আত্মদীপ-এর পক্ষ থেকে আমরা, সমাজের সকলের সক্রিয় সহযোগিতার মাধ্যমে, মন্দিরগুলিকে সংস্কার করে, তাদের পুরনো রূপ ফিরিয়ে দেয়ার দায়িত্ব নিয়েছি। এই উদ্দেশ্যে আমরা ক্রাউড ফান্ডিং শুরু করেছি যার মাধ্যমে, যেকোন ব্যক্তি, তাঁর সাধ্যানুযায়ী সাহায্য করতে পারবেন। এই কাজে সহযোগিতা করতে আপনারা নীচের লিঙ্কে ক্লিক করে অনুদান দিতে পারেন বা https://milaap.org/fundraisers/support-prasun-maitra/upi_deeplink এই লিঙ্কে ক্লিক করে UPI এর মাধ্যমে সরাসরি অনুদান দিতে পারেন। আমাদের ঐতিহ্যকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আমাদের গৌরবময় সংস্কৃতির সাথে পরিচিত করানো আমাদের কর্তব্য।

https://milaap.org/fundraisers/support-prasun-maitra?utm_source=whatsapp&utm_medium=fundraisers-title&mlp_referrer_id=960287




No comments:

Post a Comment