Sunday, August 9, 2020

প্রাইভেট চ্যাট

কোন মতবাদ বা দর্শনের সাফল্য সেটায় বিশ্বাসীদের মানব সম্পদের উপর নির্ভরশীল। আমার বা আপনার কাছে সেই মতবাদ বা দর্শন ভুল বা অযৌক্তিক হতেই পারে কিন্তু সেটা সেই মতবাদের প্রসারণের ক্ষেত্রে determining factor নয়। উদাহরণ স্বরূপ ইসলাম বা বৈষ্ণবদের কথা বলা যেতে পারে। বিভিন্ন প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এদের প্রসার ঘটেছে কারণ এদের অনুগামীরা এই মতবাদের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ আর সেটা প্রসারের জন্যে তাঁরা যেকোন পর্যায়ে যেতে পারেন।


এর সম্ভবত একটা কারণ মতবাদগুলির rigidity। তার ফলে, এদের অনুগামীদের কাছে সবকিছুই হয় সাদা, নয় কালো, মাঝামাঝি কোন স্থান নেই। উল্টো  দিকে সনাতন সংস্কৃতি অনেক বেশী flexible। সেখানে সাদা আর কালোর মিশেলে ধুসর রঙের অস্তিত্বও স্বীকৃত। এই flexibility ই এককালে সনাতন ধর্মের প্রসারে সহায়ক হয়েছে আবার এটাই সেই সেই ধর্মের ক্ষয়িষ্ণুতার অন্যতম কারণ। একই সংস্কৃতি যে কারণে প্রসারিত হয়েছে, সেই কারণেই সঙ্কুচিত হয়েছে এটা বোঝা একটু কষ্টকর আর সেখানেই আসে অনুগামীদের ভূমিকা।


অনুগামীরা যদি সংস্কৃতি বা দর্শনের প্রতি আন্তরিকভাবে বিশ্বাসী না হয়, কেবলমাত্র ব্যক্তি বা গোষ্ঠী স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্যে সেই সংস্কৃতির দোহাই দিয়ে থাকে বা ব্যবহার করে থাকে, তাহলে এই পরিণতি স্বাভাবিক। উদাহরণ স্বরূপ পশ্চিম বা উত্তর ভারতের বেশ কিছু পরিবারের কথা বলা যায় যারা নিজেদের বাড়িতে নিরামিষ ভোজন করলেও বাইরে অনায়াসেই আমিষ খেয়ে থাকেন। কেউ আমিষ খাবেন না নিরামিষ সেটা প্রত্যেকের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত কিন্তু সম্পত্তি পাওয়ার স্বার্থে, বাড়ির বয়স্কদের খুশি রাখার জন্যে বাড়িতে নিরামিষ খাওয়া আর বাইরে আমিষ খাওয়া - এটা নিছক প্রতারণা, সাদা বাংলায় hypocrisy।


একইভাবে, যারা নিজেদের পাব্লিক পোস্টে, জনগণকে হিন্দুত্ব ও বাঙালিত্বর তত্ত্ব ও আদর্শ নিয়ে গুরুগম্ভীর বাণী বিতরণ করে থাকেন আর প্রাইভেটলি মহিলাদের নিয়ে, এমন বোন সম্পর্কের মেয়েদের নিয়েও, ধারাবাহিকভাবে নোংরামি করে চলে আর সেই কথা প্রকাশ্যে চলে আসলে, যার মাধ্যমে বাইরে এসেছে তাকে টার্গেট করার জন্যে জেহাদিদের কাছে আমন্ত্রণ জানায়, মাফ করবেন, তারা আমার কাছে "take it easy" নেয়ার মত নয়। একইসাথে, যেসব বিদগ্ধজনেরা এই ঘটনাকে "shit happens" বলে লঘু করে দেয়ার চেষ্টা করছে তাদের দেখে, হিন্দু মহিলাদের উপর জেহাদিদের দ্বারা হওয়া অত্যাচারের প্রেক্ষিতে, মুসলমানদের উচ্চবর্গের প্রতিবাদ বিহীন থাকার কারণ নিয়ে লেখা শরৎচন্দ্রের সেই কথা মনে পড়ে যাচ্ছে যে "বাপু, সুযোগ পাইলে তো আমিও ঐ কাজই করিতাম"।

No comments:

Post a Comment