১২
হাত কাপড়েও নাকি বাঙালী মেয়েদের কাছা হয়না - প্রবাদটার উৎস কখন বা কিভাবে হল সেটা আমার
জানা নেই তবে এই আপাত নিরীহ কথাটির মূল লক্ষ্য যে বাঙালী মেয়েদের সাহস ও সক্ষমতার
প্রতি বক্রোক্তি সেটা সহজেই অনুমেয়। পরিবেশগত কারণ হোক বা স্বভাবগত কারণ, একথা ঠিক
যে বাঙালী মেয়েরা ভারতের অন্য প্রদেশের মেয়েদের তুলনায় অনেক নমনীয়। কিন্তু এই
নমনীয়তা কেবলমাত্র শারীরিক। মানসিক দিক থেকে তারা অন্যান্যদের তুলনায় কিছুমাত্র কম
সক্ষম নয়, বরং বহুক্ষেত্রে অনেক বেশী পারদর্শী। মণ্ডন মিশ্রের ধর্মপত্নী হন বা
দ্রবময়ী, হটি বিদ্যালঙ্কার হন বা দেবী চৌধুরানী - এঁরা সকলেই এই বঙ্গের সন্তান এবং
আপন কীর্তিতে দীপ্যমান। প্রথমোক্ত তিনজন বিদ্যাচর্চার মাধ্যমে নিজ জন্মভূমির গৌরব
বৃদ্ধি করেছিলেন। আর শেষোক্তজন অস্ত্রচর্চার মাধ্যমে জন্মভূমির মানরক্ষা করেছিলেন।
সারা
দেশের মত এই বাংলাতেও মুসলিম আক্রমণের পর থেকেই মেয়েদেরকে পর্দানশীন জীবন বেছে
নিতে বাধ্য করা হয়। যেসব পাঠশালা ছোট ছোট মেয়েদের কলকাকলিতে মুখর হয়ে থাকত, সেখানে
শ্মশানের নীরবতা নেমে আসে। পুতুল নিয়ে খেলা করার বয়সে তাদেরকে ঘোমটা পরে ছাদনাতলায়
বসতে হয়। এর ফলে সমাজের অর্ধেক অংশের কাছে শিক্ষা ক্রমে ক্রমে একটি নিষিদ্ধ
বস্তুতে রূপান্তরিত হয়। ইসলামিক ব্যবস্থায়
নারীদের ভূমিকা শুধুমাত্র পুরুষের যৌনলালসা তৃপ্তি ও বংশবৃদ্ধির যন্ত্র ছাড়া আর
কিছু নয়। মুসলিম শাসনে সেই মানসিকতা ক্রমে ক্রমে সমাজের বাকি অংশকেও গ্রাস করে। তাই
নারীশিক্ষা শব্দটি ধীরে ধীরে সমাজ থেকে বিলীন হতে থাকে।
ইতিহাসের
শিক্ষা থেকে এটা স্পষ্ট যে ইসলামিক আগ্রাসনের দুটি মুখ্য অংশ - অস্ত্র এবং
জনসংখ্যা বৃদ্ধি। যখন তারা সংখ্যালঘু থাকে তখন অনিয়ন্ত্রিত হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি
করে। আর এইভাবে যখন সংখ্যাগুরু হয়ে যায় তখন অস্ত্র দ্বারা বিরোধীদের ধবংস করে। পৃথিবীর
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে যে যখনই কোন স্থান মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েছে, তখনই তারা
সেই স্থানের মূলধারা থেকে আলাদা হয়ে গেছে।
এই
ফর্মূলা অনুসারেই ১৯৪৭-এ পাকিস্তান তৈরী হয়েছিল। আর পশ্চিমবঙ্গকে ভারতবর্ষ থেকে
আলাদা করে একটি ইসলামিস্তান বানানোর যে পরিকল্পনা বামফ্রন্ট শাসনে শুরু হয়েছিল,
“পরিবর্তনের” পর তৃণমূল শাসনে তা নতুন গতি লাভ করেছে। ‘মা, মাটি আর মানুষের’ দোহাই
দিয়ে তৈরী সরকার যে ‘মুসলিম, মৌলবি,মাদ্রাসা আর মসজিদে’র সরকারে পরিণত হবে - এমনটা হয়ত ভোটারদের দুঃস্বপ্নতেও ছিলনা। ৩৪ বছর
ধরে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন গ্রামে যেসব দরিদ্র হিন্দুরা প্রশাসনিক মদতে ইসলামিক
অত্যাচারে জর্জরিত হয়েছিল, তারা ভেবেছিল “পরিবর্তনের” পর দিন বদলাবে। কিন্তু হায়,
তারা বোঝেনি যে শাসকের পরিবর্তন মানেই শাসনের পরিবর্তন নয়। আগে তারা লাল জামা পরা
ইসলামি অতাচারের শিকার হত, এখন সবুজ জামা পরা ইসলামি অতাচারের শিকার হচ্ছে - এটাই
পরিবর্তন।
কামদুনির
ঘটনা কি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়না যে হিন্দু মেয়েদের উপর মুসলিম বর্বরতার
বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা নিতে সরকার কত উদাসীন? সংগ্রামপুরে বিষমদ খেয়ে ১৭৩
জন মারা যাওয়ার জন্যে জন্যে দায়ী খোঁড়া বাদশার বেকসুর খালাস পাওয়া কি কোন
বিচ্ছিন্ন ঘটনা? সন্দেশখালিতে প্রশাসনকে নজরানা দিয়ে শাহজাহান শেখ, যে আগে
সিপিএমের পতাকা বইত আর আজ তৃণমূলের হয়ে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান, দিনের পর দিন তপশীলিদের
পৈতৃক জমি সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে দখল করে
রেখেছে এটাই কি পরিবর্তন? আব্দুল বারিক বিশ্বাসের মত কুখ্যাত স্মাগলার পার্টি ও
প্রশাসনের বদান্যতায় বিনা বাধায় চোরাচালান চক্র চালিয়ে যেতে পারে, এই কি পরিবর্তন?
আজও
কি আপনি নিশ্চিত যে এই ইসলামি সন্ত্রাসের সামনে আপনার ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিরাপদ? আপনি
কি মনে করেন যে সেকুলারিজমের চাদর চোখে বেঁধে আপনি এই বিপদকে এড়িয়ে যেতে পারবেন? আপনি
কি পারবেন আপনার বাড়ির মেয়েদের পদ্মিনীর মত জহরব্রত নিয়ে আগুনের মধ্যে ঠেলে দিতে? নাকি
আপনার আদর্শ হবে সত্যবতী?
No comments:
Post a Comment