Thursday, September 10, 2020

আশায় মরে চাষা

 সন্দেশখালির কথা মনে আছে? হ্যাঁ, দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার সেই সন্দেশখালির কথাই বলছি যেখানে ২০১৯ সালের ৯ই জুন, নির্বাচন পরবর্তী সংঘর্ষে নিহত হয়েছিলেন প্রদীপ মন্ডল, সুশান্ত মন্ডল সহ তিন বিজেপি কর্মী এবং তৃণমূল কংগ্রেসের এক কর্মী। ঘটনার প্রতিবাদে সোশ্যাল মিডিয়া কাঁপিয়ে দিয়েছিল বিজেপি কর্মীরা। "কড়ি নিন্দা" মার্কা রাজনাথ সিং এর বদলে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্বে এসেছিলেন অমিত শাহ আর তাই কর্মীরা আশায় বুক বেঁধেছিল যে এবার একটা হেস্তনেস্ত হবেই।

কর্মীদের আশার আগুনে ঘি ঢেলে, কেন্দ্র সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে ঘটনার তদন্ত করবে জাতীয় তপশিলি জাতি কমিশন। কমিশনের সদস্যরা ১৫ই জুন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেন আর কমিশনের সামনে সাক্ষ্য দেয়ার জন্যে ডাকা হয়েছিল রাজ্য পুলিশের ডিজি, মুখ্যসচিব সহ অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকদের। দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলায় হওয়া ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে লালবাজার, অর্থাৎ কলকাতা পুলিশের সদর দপ্তর, অভিযানও করলো বিজেপি। দলীয় কর্মীদের আশালতা ততক্ষণে প্রায় সপ্তম স্বর্গে পৌছে গেছে।

আর তারপর? না, তার আর পর নেই, সব ওখানেই শেষ। আজ, সেই ঘটনার ১৫ মাস পরে, প্রদীপ মন্ডলের নাম তো দূরের কথা, সন্দেশখালির ঘটনা কতজন কর্মীর মনে আছে সেটা নিয়ে সন্দেহের যথেষ্ট অবকাশ আছে। কারণ পার্টির কাছে কর্মীর মৃত্যু নেহাতই একটা ইস্যু। রাত পোহালে যদি নতুন ইস্যু এসে যায়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই পুরনো ইস্যু প্রাসঙ্গিকতা হারায়। কিন্তু বিষয়টা নিয়ে আমার ব্যক্তিগত আগ্রহ ছিল আর তাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে RTI দায়ের করেছিলাম।

RTI তে তিনটি বিষয় জানতে চেয়েছিলাম, ১) পশ্চিমবঙ্গে, গত ১০ বছরে, তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের উপর ক'টা অত্যাচারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কমিশন রাজ্যে এসেছে। ২) রাজ্যে আসার পর কমিশনের প্রতিনিধিরা কি রিপোর্ট দিয়েছেন এবং ৩) সেই রিপোর্টের প্রেক্ষিতে সরকার কি ভূমিকা গ্রহণ করেছেন।

আমাকে অবাক করে দিয়ে আজ জাতীয় তপশিলি জাতি কমিশন জানিয়েছে যে ১নং প্রশ্নের কোন তথ্যই তাদের কাছে নেই আর ২ ও ৩ নং প্রশ্নের জন্যে তারা আমার অনুরোধ কলকাতা অফিসে পাঠিয়েছেন যদি সেখানে কোন তথ্য থেকে থাকে। এখন প্রশ্ন হল যে জাতীয় তপশিলি জাতি কমিশন তাহলে সন্দেশখালিতে এসেছিল কেন?

No comments:

Post a Comment