অনেকদিন আগের কথা। বোধহ্দয় নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি। দূরদর্শনের মেট্রো চ্যানেল কিছুদিন আগে শুরু হয়েছে। প্রতি সোমবার রাত ৯টা থেকে সেই মেট্রো চ্যানেলে প্রচারিত হত একটি সিরিয়াল - রিপোর্টার। নাম ভূমিকায় শেখর সুমন । এক নির্ভীক সাংবাদিকের খবর সংগ্রহ করার জন্যে যেসব বাধাবিপত্তির সম্মুখিন হতে হয়, তাই নিয়েই গল্প। সারা সপ্তাহ অপেক্ষা করে থাকতাম ঐ আধঘণ্টার জন্যে। পরেরদিন স্কুলে গিয়েও বন্ধুদের সাথে চলতো আগেরদিনের এপিসোড নিয়ে আলোচনা। টানটান উত্তেজনায় ঠাসা একটি অসাধারন প্যাকেজ। পরিচালকের নাম নীরজ পান্ডে।
জাম্পকাট টু ২০০৮। গজনী, রব নে বানা দি জোড়ি, ফ্যাসন বা দোস্তানা-র মত মেগাহিটের সময়েও আলাদা করে একটি সিনেমা সবার নজর কেড়ে নিল তার ভিন্ন স্বাদের গল্প ও মেদহীন ছিমছাম পরিবেশনার গুনে - আ ওয়েডনেসডে। নাসিরুদ্দিন শা আর অনুপম খেরের অনস্ক্রিন দ্বৈরথ চুটিয়ে উপভোগ করেছিলেন দর্শকরা। বলিউডকে সাবালক হবার দিকে একধাক্কায় অনেকটা এগিয়ে দিয়েছিল এই সিনেমাটি। কাহিনীকারের নাম নীরজ পান্ডে।
সাল ২০১৪। নির্মল হাস্যরসের একটি সিনেমা আবার সবার মন জয় করে নিল। স্পেশাল ২৬। এই সিনেমাটি শুধু শাহরুখ খানের মেগা ছবি চেন্নাই এক্সপ্রেসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ব্যবসাই করেনি, নিজের পৃথক দর্শক লবিও তৈরি করেছে। তার প্রমান imdb তে ৭.৮-এর ঈর্ষনীয় রেটিং। কাহিনীকারের নাম নীরজ পান্ডে।
এই প্রেক্ষিতেই নীরজ পান্ডের নতুন সিনেমা বেবি দেখার জন্যে বাড়তি আগ্রহ ছিল। বলতে কোন দ্বিধা নেই যে সিনেমাটি আমার আগ্রহের প্রতি কোন অন্যায় করেনি। NSA অজিত দোভালের সাথে এই সিনেমার Head of National Security ফিরোজ (ড্যানি) বা নরেন্দ্র মোদীর সাথে এই সিনেমার প্রধানমন্ত্রীর চেহারাগত সাযুজ্জ্যর অতিরঞ্জনটুকু বাদ দিলে, এই সিনেমাটি নিঃসন্দেহে একটি বলিষ্ঠ পরিবেশনা। চিড়িতনকে চিড়িতন বলার মত সাহস সিনেমাটি দেখাতে পেড়েছে। বলিউডে নিঃসন্দেহে এক নতুন ঘরানার জন্ম দিল এই সিনেমাটি। সাথে উপরিপাওনা অনুপম খের, ড্যানি বা কেকে-র অভিনয়। অক্ষয় কুমার এই বয়সেও যথেষ্ট ফিট এবং চরিত্রানুযায়ী সাবলীল। গানের আধিক্য ছাড়াই এই সিনেমাটির দৈর্ঘ্য ২ ঘণ্টা ৪০ মিনিট কিন্তু সেই সময় কিভাবে কেটে গেল, বোঝাই যায়না। ধন্যবাদ নীরজ পান্ডে, এরকম একটি সাহসী সিনেমা উপহার দেবার জন্যে।
আমার রেটিং – ৪.৫/৫।
No comments:
Post a Comment