Wednesday, June 29, 2022

অনিবার্য পরিণতি

রাজস্থানে মুসলমান জনসংখ্যার হার ১০ শতাংশের কম আর পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৩০ শতাংশ। প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ মুসলমানদের হাতে তুলে দেয়ার জন্যে রাজস্থানে কোন বিশেষ আইন নেই কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে OBC-A সংরক্ষণের মোড়কে প্রতিটি সরকারি নিয়োগে বিশেষ সুবিধা দেয়া হচ্ছে মুসলমানদের। পুলিশ থেকে আমলা- সব পদেরই দখল চলে যাচ্ছে হিন্দুদের থেকে। এতদিন হিন্দু বহুল থাকার পরেও ক্রমাগত বঞ্চিত হয়ে আপনি এখনও নিশ্চিন্ত আছেন যে জেহাদি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে, প্রশাসনের ভরসায়, আপনার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যে আপনি খুব সুরক্ষিত পরিবেশ রেখে যাচ্ছেন, তাই না?


১০ শতাংশের কম জনসংখ্যা সত্ত্বেও মুসলমানরা নুপুর শর্মার গ্রেপ্তারির দাবীতে মিছিল করলে রাজস্থান সরকার তাদের বিরুদ্ধে নীরব থাকে আর হিন্দুরা নুপুর শর্মার সমর্থনে মিছিল করলে তাদের বিরুদ্ধে কেস ফাইল করা হয়। বাঙালীরা অবশ্য এই দৃশ্যের সাথে পরিচিত। তারা দেখেছে যে কিভাবে শুধুমাত্র ধর্মীয় পরিচয় ভিন্ন হওয়ার কারণে টিকিয়াপাড়া দাঙ্গায় পুলিশ'কে লাথি মারা ব্যক্তির বাড়িতে সরকারি উদ্যোগে রেশন পৌছে যায় আর তেলেনিপাড়া দাঙ্গায় পুলিশের নিস্ক্রিয়তা প্রকাশ করার জন্যে, করোনা অতিমারীর সময় ত্রাণ বিতরণ করে আসার দিনই প্রসূন মৈত্র'কে গ্রেপ্তার করা হয়।


আরেকটা বিষয় জানিয়ে রাখা দরকার যে ১৫ই জুন কানহাইয়া লালের পুলিশে দায়ের করা অভিযোগ অনুসারে তার প্রতিবেশী, নাজিম এবং তার পাঁচ জন সহযোগী বেশ কিছুদিন ধরে কানহাইয়া লাল'কে দোকান খুলতেও বাধা দেয়। বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে কানহাইয়া লালের নাম ও ছবি দিয়ে প্রচারও করা হয় যে তাকে রাস্তায় বা দোকানে দেখলে যেন হত্যা করা হয়। পুলিশ, যথারীতি, তার অভিযোগকে কোন গুরুত্ব দেয়নি আর পরিণতিতে এই হত্যা।


তবে আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন যে আপনার প্রতিবেশীরা ওরকম নয়। কমলেশ তিওয়ারি, উমেশ কোলে, কানহাইয়া লালের মত পরিণতি আপনার হতেই পারেনা। তসলিমা'র বেলায় ফোর্ট উইলিয়াম থেকে সেনা ডাকতে হলেও বা জাতীয় সড়ক ও রেল স্টেশনে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরী হলেও বা প্রকাশ্য দিবালোকে সেনা ও পুলিশ অফিসারদের হত্যা করে বা বেধড়ক পিটিয়ে অপরাধীরা প্রমাণাভাবে বেকসুর খালাস হয়ে গেলেও আপনি নিশ্চিত থাকুন যে আপনার পরিবারের কোন বিপদ নেই। 


প্রতিটা হত্যার পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় দিন দুয়েক হল্লা হবে আর তারপর আবার উঠে আসবে নতুন ইস্যু। আজ রবি, রুদ্রেশ, অঙ্কিত সক্সেনা, পালঘর, কমলেশ তিওয়ারি, টোটোন দাস, মৌসুমি বিশ্বাস, বিকাশ দাস'দের কথা আর ক'জনের মনে আছে! আমাদের ক্ষোভের মেয়াদ প্রশাসনও জানে আর তাই তারা সেটা নিয়ে খুব একটা উদ্বিগ্ন হননা। আর আমাদের গুরু সমাজ তো আরেক কাঠি উপরে। তারা মরার পর আমি বিষ্ণুলোকে যাবো না ব্রহ্মলোকে সেটা নিয়ে প্রবচন দিতে পারেন, পরলোক নিরাপদ করতে শান্তি স্বস্ত্যয়ন করাতে পারেন কিন্তু ইহলোকের বিপদ সম্পর্কে তাদের মুখে টুঁশব্দ শুনবেন না। তাই যতই OBC-A দিয়ে অনুপ্রবেশ হোক, আপনার ধর্মীয় দায়িত্ব দক্ষিণেশ্বর, তারকেশ্বর বা তারাপীঠে পুজো দিয়েই শেষ। মাফ করবেন, এরকম সামাজিক দায়িত্ব সম্পর্কে নিস্পৃহ, আত্মকেন্দ্রিক সমাজের ধ্বংস হয়ে যাওয়াই উচিত।

No comments:

Post a Comment