কোন জাতির উত্থান-পতন,
উন্নতি-অবনতি সূচিত হয় সে সমাজে নারীদের কি
দৃষ্টিতে দেখা হয় তার উপরে। যে সমাজে নারীর সম্মান নেই সে সমাজ অর্থকৌলীন্যে যতই
বড় হোক না কেন, অন্তিমে তার পতন অনিবার্য। দ্রৌপদীর অপমানের পরিণতি হিসাবে
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে বিশাল কৌরব বংশের ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়া এর উজ্বল দৃষ্টান্ত।
ইসলামে নারীর অবস্থান শুধু ভোগ্যপন্য হিসাবে। নারীদের স্বকীয়তা ও
স্বাতন্ত্রতার কোন স্থান সেখানে নেই। তাই নিজের ভোগের জিনিসকে অন্যের থেকে লুকিয়ে
রাখার জন্যেই বোরখা ও হিজাবের প্রচলন। তার সৌন্দর্য্য যাতে অন্য কারুর দৃষ্টি আকর্ষন
না করে তাই তাকে পর্দানশীন করার চেষ্টা।
হিন্দুসমাজে পর্দাপ্রথার প্রচলন হয় মুসলিম আক্রমনের পরে। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে ভারতের যেসব অঞ্চলগুলি মুসলিমদের অধীনে
দীর্ঘদিন ছিল, সেখানেই এই পর্দাপ্রথার
প্রচলন ঘটেছে। উত্তর ও পূর্বভারতেই তা প্রধানতঃ সীমাবদ্ধ। স্থানভেদে তার রুপ আলাদা – পাঞ্জাবে দোপাট্টা তো বাংলায় ঘোমটা।
“এ দেশে মেয়েদের পর্দা নেই, কোনদিনও ছিলনা। উত্তর ভারতের এই ম্লেচ্ছ বর্বরতা
মারাঠা দেশ কখনও স্বীকার করে নেয়নি।“ – না, এই কথাগুলি বালাসাহেব ঠাকরে বা কোন
তথাকথিত উগ্রহিন্দুনেতার নয়। এ দাবী বাঙলা সাহিত্যের অন্যতম প্রাণপুরুষ শরদিন্দু
বন্দোপাধ্যায়ের। তিনি তাঁর মধুমালতী কাহিনীতে বামন রাওকে দিয়ে এই সত্য প্রকাশ
করেছেন। এতে যদি কেউ শরদিন্দুবাবুকে উগ্রবাদী ভাবতে চান তো ভাবতেই পারেন কিন্তু
এতে সত্য বদলাবেনা।
No comments:
Post a Comment